ওয়েব সিরিজ়ের শুটিং ফ্লোরে শ্রীলেখা মিত্র ও সুধীর মিশ্র। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সুধীর মিশ্রের হিন্দি ওয়েব সিরিজ়ে (‘সামার অফ ’৭৭— চিলড্রেন অফ ফ্রিডম’) প্রায় নিঃশব্দে অভিনয় করে শহরে ফিরলেন শ্রীলেখা মিত্র। বলিউডে কাজ করছেন। কিন্তু, টলিউডের কাজের পরিবেশ নিয়ে অভিনেত্রী বিশেষ একটা খুশি নন।
শ্রীলেখা সমাজমাধ্যমে যে ছবি পোস্ট করেছেন, তা দেখে জানা যাচ্ছে, এই সিরিজ়ে রজত কপূর, ভিভান শাহ রয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছেন মুম্বইয়ের বাঙালি অভিনেত্রী স্বরূপা ঘোষ এবং আদিত্য ভট্টাচার্য। অভিনেত্রীর কোনও ব্যক্তিগত প্রচার সহায়ক নেই। তার পরেও সুধীরের ওয়েব সিরিজ়ে কী ভাবে সুযোগ পেলেন তিনি? আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীলেখা বললেন, ‘‘এই সিরিজ়ের লেখক (ময়ূখ ঘোষ) আমার নামটা বলেন। তার পর হঠাৎ একদিন দেখি, মুকেশ ছাবড়ার সংস্থা থেকে একটা অডিশন চেয়ে পাঠানো হয়।’’ অভিনেত্রী জানালেন, তখন তিনি ‘পারিয়া’র প্রচারে ব্যস্ত। শ্রীলেখার কথায়, ‘‘তথাগতকে (পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়) বললাম ভিডিয়ো রেকর্ড করে দিতে। সেটাই ওদের পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তার পর হঠাৎ একদিন ওরা জানাল যে, আমি নির্বাচিত হয়েছি।’’
সিরিজ়ে তাঁর চরিত্র নিয়ে এখনই কোনও বাড়তি তথ্য দিতে নারাজ শ্রীলেখা। তবে সুধীরের সঙ্গে কাজের সুযোগ বলেই যে সিরিজ়ে রাজি হয়েছিলেন, তা স্পষ্ট জানালেন তিনি। কানপুর ও লখনউয়ে শুটিং হয়েছে সিরিজ়ের। কাজের পরিবেশ প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘অসাধারণ! ফ্লোরে কেউ গল্প করেন না। প্রত্যেকেই কাজকে গুরুত্ব দেন। কিছু দৃশ্যে অভিনয় করার পর আরও কিছু দৃশ্য বাড়িয়ে দেন সুধীরজি।’’ ‘হাজারোঁ খোয়াইশে অ্যাইসি’ খ্যাত সুধীরের সঙ্গে দেশ এবং বাংলার রাজনীতি নিয়েও শ্রীলেখার কথাবার্তা হয়েছে। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে আমার মিল। কারণ দেখলাম, উনিও সঙ্গে দুই পোষ্যকে নিয়ে এসেছিলেন।’’
কথা প্রসঙ্গেই একটি গল্প শোনালেন শ্রীলেখা। অভিনেত্রী নাকি সুধীরকে প্রণাম করতে এগিয়ে যান। হাসতে হাসতে শ্রীলেখা বললেন, ‘‘উনি রাজি নন। এ দিকে আমিও নাছোড়বান্দা। পুরো ফ্লোরে আমরা দু’জনে যেন দৌড়ে বেড়ালাম।’’ সিরিজ়ে শ্রীলেখার দাদার চরিত্রে অভিনয় করছেন আদিত্য ভট্টাচার্য। আমির খানের প্রথম ছবি ‘রাখ’-এর পরিচালক ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, বলিউডের সমান্তরাল ধারার পরিচালক বাসু ভট্টাচার্যের পুত্র আদিত্য। একই সঙ্গে, পরিচালক বিমল রায়ের দৌহিত্রও তিনি।
এর আগে বিজয় নাম্বিয়ার পরিচালিত ‘কালা’ ওয়েব সিরিজ়ে শ্রীলেখাকে দেখেছেন দর্শক। কিন্তু, টলিপাড়ায় কাজ নিয়ে তিনি কিন্তু খুব একটা খুশি নন। প্রসঙ্গ উঠতেই বললেন, ‘‘আমার কোনও কালেই কেউ ছিল না। অন্যদের মতো টাকাপয়সাও নেই। তাই নিজেই ভাবলাম, কাজের ছবি ভাগ করে নিই।’’
কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসে বলিউডের দিকে তাকিয়েছেন শ্রীলেখা। এ বার কি তা হলে...? প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই অভিনেত্রী বললেন, ‘‘২০০৩ সালে আমির খানের সঙ্গে ঠান্ডা পানীয়ের বিজ্ঞাপনে কাজ করি। পরের মাসেই বিয়ে করে নিই। চাইলে অনেক কিছুই করত পারতাম। আমি কোনও দিনই পরিকল্পিত ভাবে আমার কেরিয়ারকে দেখিনি।’’
টলিউডে কাজের পরিস্থিতিকে কী ভাবে দেখেছেন শ্রীলেখা? অভিনেত্রী বললেন,‘‘বার বার নিজেকে প্রমাণ করার পরেও আমাকে যখন কলকাতায় কাজ দেওয়া হয় না, তখন না হয় অন্য দিকে কাজের চেষ্টা করি! কোনও ক্ষতি তো নেই।’’ প্রতিভা থাকলে যে মুম্বই থেকে ডাক আসবে, এ কথা বিশ্বাস করেন না অভিনেত্রী। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘প্রতিভা কি শুধু বলিউডে বিচার করা হচ্ছে? প্রতিভা থাকলে টলিউডে কেন আমার হাতে কাজ কম?’’
শ্রীলেখার মতে, টলিপাড়া যে হেতু আকারে ছোট, তাই এখানকার ‘রাজনীতি’টা অনেক বেশি স্পষ্ট। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘সেই তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ৪-৫ জনকেই কাজ দেওয়া হবে! বলিউডে অন্তত ইন্ডাস্ট্রি বড়। তাই কাজের অভাব হয় না।’’ একই সঙ্গে বললেন, ‘‘বাংলায় সম্প্রতি কাজ চাইতে গিয়ে শুনতে হল, পিআর ভাল করতে হবে! তার মানে, প্রতিভা সেখানে গৌণ।’’ অভিনেত্রী জানালেন, এই সিরিজ়ের পরবর্তী অংশের শুটিং হতে পারে মুম্বইয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy