মহাকুম্ভ থেকে ফিরেই জন্মদিন। নিজের নাচের ছাত্রী ও পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়াগরাজে পৌঁছেছিলেন অপরাজিতা আঢ্য। গুরুর শিবিরে আশিস প্রার্থনা থেকে শুরু করে ত্রিবেণি সঙ্গমে ডুব— সব কিছুতেই যোগ দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই মহাকুম্ভ থেকেই জন্মদিনের বিশেষ উপহার নিয়ে ফিরেছেন তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইনকে অপরাজিতা জানান, নিজের কুলগুরুর ডাকেই তিনি পৌঁছেছিলেন মহাকুম্ভে। অভিনেত্রীর কথায়, “আমার গুরুজির ডাকেই সেখানে যাই। এটাই আমার জন্মদিনের উপহার। গুরুজির ছেলের শিবির ছিল। শেষ দিনে কোনও মতে শিবিরে গিয়ে পৌঁছেছিলাম। কিন্তু শিবিরে প্রবেশ করার রেজিস্ট্রেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে কোনও মতে আমি শেষ মুহূর্তে শিবিরে প্রবেশ করতে পারি। বুঝলাম, গুরুর আশীর্বাদেই সবটা হয়েছে।” অপরাজিতা মনে করেন, সেই আশীর্বাদেই তিনি ত্রিবেণি সঙ্গমে ডুব দিতে পেরেছেন। সাধারণ মানুষের মতোই স্নান করেছেন তিনি, আলাদা কোনও সুবিধা পাননি।
তবে মহাকুম্ভে গিয়ে কিছু প্রতিকূলতাও দেখেছেন। অপরাজিতার কথায়, “প্রচুর হাঁটতে হয়েছে আমাদের। এমন জায়গায় গেলে কিছু তো কষ্ট করতেই হবে। এখানে গিয়ে পাঁচতারা হোটেলের সুবিধা খুঁজলে তো পাব না।” যদিও যোগী রাজ্যে পুলিশ-প্রশাসনের প্রশংসাও তিনি করেছেন। তাঁর কথায়, “পুলিশ খুবই সক্রিয় ছিল। খুব ভাল ভাবেই সামাল দিয়েছে সবটা। ভিড় ছিল মাত্রাতিরিক্ত। মানুষের এমন ঢল কল্পনাও করা যায় না।” অভিনেত্রী দেখেছেন, সারা দিন ধরে মানুষ হেঁটে চলেছে। একসঙ্গে এত মানুষ তিনি এর আগে কখনও দেখেননি বলেও জানিয়েছেন।
মহাকুম্ভের জল কতটা দূষিত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বার বার। সেই প্রসঙ্গে অপরাজিতার দাবি, “অপরিষ্কার কিছুই নেই। সব সময় সাফাইয়ের কাজ চলছে। তবে এত মানুষ একসঙ্গে এক জায়গায় শৌচকর্ম করলে তার সামান্য দুর্গন্ধ তো থাকেই।” তবে কোথাও আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখেননি তিনি। যদিও অপরাজিতার দাবি, কিছু মানুষের বদ অভ্যেসের কারণেই যাবতীয় বিপত্তি। তাঁর কথায়, “যেখানে স্নান করবে, সেখানেই প্লাস্টিক ফেলছে। সেগুলো পরিষ্কারও করা হচ্ছে। নিকাশি ব্যবস্থা খুবই ভাল।”
আরও পড়ুন:
তবে জল থেকে যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর অ্যালার্জি হয়েছে সামান্য। সে জন্য ওষুধও খেতেও হয়েছে। তবু, অপরাজিতা মনে করেন এ সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করার কথা নয়। তিনি বলেন, “সঙ্গমের জল তো স্থির নয়। বয়ে চলেছে। তাই সেই জল দূষিত হওয়ার কথা নয়। তেমন দেখতে গেলে তো, আমাদের এখানেও গঙ্গার ঘাট পুরোপুরি পরিচ্ছন্ন থাকে না।”
জন্মদিনের ঠিক আগেই মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করে সমস্ত কর্মফল বিসর্জন দিয়ে এসেছেন, এমনই মনে করছেন অপরাজিতা। তবে জন্মদিনেও বান্ধবীর থেকে চমক পেয়েছেন অভিনেত্রী। বয়সের সঙ্গে সংখ্যা মিলিয়ে সারা ঘর প্রদীপ দিয়ে সাজিয়েছেন অপরাজিতার বান্ধবী। শনিবার বলে খাবারে আমিষ নেই। কিন্তু মায়ের হাতে রান্না করা পঞ্চব্যঞ্জন খেয়ে খুশি অপরাজিতা। অভিনেত্রী বলেন, “বাড়িতেই কাটাই জন্মদিন। এর চেয়ে শান্তির আর কিছু নেই।”