পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (বাঁ দিকে) ও প্রয়াত তাপস পাল। —ফাইল চিত্র
আজ একটা অদ্ভুত দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভাসছে। ‘উত্তরা’র জন্য আমি আর তাপস পাল ভেনিসে পৌঁছেছি পুরস্কার নিতে। ও এতটাই খুশি হয়েছে যে, ভেনিসের রাস্তায় নাচতে শুরু করে দিল। আমি এই তাপসকেই চিনি। ওঁর প্রজন্মের অন্যতম সেরা অভিনেতা। ওঁকে ঠিক মতো ব্যবহার করা হল না। এই আফসোস থেকে যাবে চিরকাল।
ওঁকে আমি খুব অদ্ভুত চরিত্র দিয়েছিলাম আমার ছবিগুলোতে। ‘উত্তরা’য় কুস্তিগীর। অন্য দিকে ‘জানলা’য় চোর। অসামান্য অভিনয় করেছিল। আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে বেশির ভাগ মানুষই জানে না, সে জীবনে কী চায়। তাপসের ক্ষেত্রেও এরকমটাই হয়েছিল। ও আরও অনেক নজরকাড়া গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে পারত। ওঁর মধ্যে এই ক্ষমতা ছিল। অথচ সেটা ও নিজে জানত না। ও চলে গেল রাজনীতিতে।
মানুষ হিসেবেও খুব কাছ থেকে দেখা আমার। এই তো ছ’মাস আগে ওঁর অ্যাটেন্ডেন্টকে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে হাজির। এসে বলল, ‘‘আপনাকে সারা কলকাতা খুঁজছি। আপনার ঠিকানা পেতে বহু দিন লাগল।’’ আশ্চর্য লেগেছিল সে দিন ওঁকে। একটা কথার সঙ্গে পরের কথা সামঞ্জস্য হারিয়ে ফেলছিল ও। বুঝেছিলাম কোথাও একটা গন্ডগোল হচ্ছে। সে দিন কিছু কথা হয়েছিল। একটানা পুরনো কথা বলার চেষ্টা করছিল। আসলে পুরনো সময়টাকেই ধরে রাখতে চেয়েছিল ও।
আরও পডু়ন: তাপস পালের জীবনাবসান, শোকস্তব্ধ অভিনয় জগৎ
আরও পড়ুন: ‘অভিনয় ও রাজনৈতিক জগতে অপূরণীয় ক্ষতি’, তাপস পালের প্রয়াণে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
এর পরেও কয়েক বার ফোন করে আসতে চেয়েছে। আমার সময় হয়ে ওঠেনি। হয়তো আমাকে সম্মান করত, শ্রদ্ধা করত। সেই কারণেই বোধহয় যোগাযোগ রাখতে চেয়েছিল। শুট করতে গিয়েও দেখেছি, অভিনেতা বা স্টার হিসেবে ওঁর কোনও দম্ভ ছিল না। আলাদা মেক আপ ভ্যান, আলাদা খাবার— এ সব দাবি করত না। বরং আমাকে বলেছিল, ‘‘আমি কিন্তু দু’বার লাঞ্চ করব’’। প্রচণ্ড খেতে ভালবাসত।
অনেক পথ খুঁজে ও সে দিন আমার ঠিকানা পেয়েছিল। কিন্তু আজ ওঁর ঠিকানা আমার জানা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy