ঋষি কৌশিক। ফাইল চিত্র।
ছোট পর্দার ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’ তিনি। ঋষি কৌশিক। কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশে এই প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা তাঁর।
টেলিভিশনে জনপ্রিয়তার শিখরে থাকা ঋষির কাছে ওপার বাংলায় কাজের সুযোগ আসে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। সেখানকার একটি নাটকে অভিনয় করলেন তিনি। নাম ‘চিলেকোঠার ভালবাসা’। লেখিকা আফরিন জামান ইনস্টাগ্রামে প্রথম তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিনেতা বললেন, “আফরিন আমাকে চিনতেন না। ভারতের কোনও শিল্পী নিয়ে কাজ করতে চাইছিলেন তিনি। তাঁরই এক পরিচিত আমার ‘কুসুমদোলা’ সিরিয়ালটি তাঁকে দেখতে বলেন। হটস্টারে কুসুমদোলা দেখার পরেই তিনি আমাকে ইনস্টগ্রামে যোগাযোগ করেন। তার দু’মাসের মধ্যেই আমি বাংলাদেশ গিয়ে পৌঁছই।”
অভিনেতা জানালেন, কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের নাটক ইউটিউবে অল্প-বিস্তর দেখেছেন তিনি। ঋষি আশাবাদী, ওপার বাংলায় তাঁর প্রথম কাজ দর্শকরা সাদরে গ্রহণ করবেন। কিন্তু এত ব্যস্ততার মধ্যেও দেশের বাইরে গিয়ে শ্যুটিং করলেন কী করে? অভিনেতা জানালেন, পুজোর সময় ধারাবাহিকের কাজ কয়েক দিন বন্ধ ছিল। সেই ফাঁকেই তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ গুটিয়ে ফিরে আসেন তিনি। এর পরেই তাঁর গলায় আফসোসের সুর, ‘‘এত তাড়াতাড়ি কাজ মেটাতে হল, দেশটা ভাল করে ঘুরে দেখারও সুযোগ পেলাম না।’’
রাকেশ বসুর পরিচালনায় এই নাটকে ঋষির বিপরীতে অভিনয় করেছেন সেই দেশের বিখ্যাত মডেল-অভিনেত্রী সাফা কবির। কেরিয়ারের একটি বড় অংশ জুড়ে ধারাবাহিকে কাজ করার পর, নাটকে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ঋষির কাছে কিছুটা নতুন। তিনি বললেন, ‘ধারাবাহিকে অনেকদিন ধরে একটি চরিত্রকে ধরে রাখতে হয়। যদিও আমার সেটা ভাল লাগে। কিন্তু নাটকে অল্প সময়ের মধ্যে এক্সপেরিমেন্ট করা যায়। নিজেকে নতুন করে ভাঙা-গড়ার সুযোগ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন: অনু মালিকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগের সময়ে চুপ, আর রিয়ার জন্য সরব! দাদলানিকে তোপ সোনা মহাপাত্রর
তবে কি ঋষি কৌশিক ছোটপর্দার ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’ হিসাবে টাইপকাস্ট হয়ে গিয়েছেন?
কুসুমদোলা ধারাবাহিকে ঋষি কৌশিক আর মধুমিতা সরকার
কিছুটা হেসে ঋষির সহজ উত্তর, ‘একটি সিরিয়ালে কোনও এক বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করার পর সেটি হিট হয়ে গেলে টাইপকাস্ট হয়ে যেতে হয় অনেক সময়। তবে সেটা কোনও দোষের কথা নয়। আমি মনে করি টাইপকাস্ট হওয়াটা একটা বড় পাওয়া। টাইপকাস্ট হতে গেলে নিজের মধ্যে একটা বিশেষ ফিচার চাই।”
‘এখানে আকাশ নীল’ থেকে শুরু করে বেশির ভাগ ধারাবাহিকেই তাঁকে দেখা গিয়েছে স্বল্প কথার মানুষ হিসেবে। কিন্তু একই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে যেতে আপত্তি নেই ঋষির। তাঁর বিশ্বাস স্টারডম এই টাইপকাস্টই এনে দেয়। ঋষির কথায়, “অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খানও সেই অর্থে টাইপকাস্ট। এখনকার কিছু বুদ্ধিজীবী মানুষ এই শব্দটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আমাকে বলেছিলেন, মানুষ এক এক জন শিল্পীকে এক একটা নির্দিষ্ট রূপে দেখতেই ভালবাসে। সেই কথাটা আমাকে অনেকটা আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল এক ধরনের চরিত্র করার।”
কেরিয়ারের গতিপথ আঁকতে চান না অভিনেতা। সময়ের সঙ্গে শুধু এগিয়ে যেতে চান তিনি। কিন্তু যখন ছোট পর্দা থেকে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তখনও শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। নিন্দুকেরা বলেছিলেন, হাতে কাজ নেই বলেই বিজেপিতে যোগদান করে অভিনেতা থেকে নেতা হওয়ার পথে এগোচ্ছেন ঋষি কৌশিক। আরও এক বার ঋষি স্পষ্ট করলেন, “আমি বরাবরই বিজেপির মতাদর্শে বিশ্বাসী। তাই সেই দলে যোগ দিয়েছিলাম। কোনও দলে যোগদান করা এবং রাজনীতি করার মধ্যে অনেকটা পার্থক্য।” অর্থাৎ এই মুহূর্তে অভিনয় ছাড়া আর কোনও কিছু নিয়ে ভাবতে চান না ঋষি। ভেবে থাকলেও ‘গোপন
কথা’টি মনেই রেখে দিতে চান আপাতত।
ওপার বাংলায় কাজ করে আপ্লুত অভিনেতা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে তাঁর প্রথম নাটক। ভালবাসার দিনে অনুরাগীদের জন্য এই উপহার তুলে দেবেন ঋষি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy