Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sneha Chatterjee

Sneha Chatterjee: ধারাবাহিকে জনপ্রিয় মুখ, সন্তান হওয়ার পর তবু থিয়েটার মঞ্চেই কেন ফিরেছিলেন স্নেহা

থিয়েটারের পাঠ স্নেহাকে জীবন সামাল দিতে শিখিয়েছে। ছেলের জন্ম দিয়ে যেন নিজেও নবজন্ম পেয়েছেন অভিনেত্রী।

ছেলের জন্ম দিয়ে যেন নিজেও নবজন্ম পেয়েছেন অভিনেত্রী।

ছেলের জন্ম দিয়ে যেন নিজেও নবজন্ম পেয়েছেন অভিনেত্রী।

তিয়াস বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২২ ১১:৩৯
Share: Save:

সকাল-সন্ধ্যা-রাত এমনিতেই ব্যস্ততা, তার মধ্যে সন্তানকে বেশি ক্ষণ ছেড়ে থাকতে হলে উৎকণ্ঠায় বুক ভরে ওঠে অভিনেত্রী মায়ের। ঠিক মতো খেয়েছে তো? কাঁদছে না তো? ছেলেকে আবার কখন কোলে নিতে পারবেন সেই চিন্তায় বুঁদ হয়ে যান, স্নেহা চট্টোপাধ্যায়।

‘সুবর্ণলতা’ থেকে ‘ফাগুন বউ’— বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলিতে বরাবরের পরিচিত মুখ তিনি। ছোট-বড় যে কোনও চরিত্রেই ছাপ ফেলে যান। তবে তাঁর নিজের জায়গা থিয়েটার মঞ্চ। নাটক স্নেহাকে এত কিছু দিয়েছে যে এই সুখ ছেড়ে যেতে চান না অভিনেত্রী। ফ্রিল্যান্স অভিনয়ের কাজে এসে শহরের এক জনপ্রিয় নাট্যদল ‘ফোর্থ বেল থিয়েটার্স’-এর সদস্য হয়ে গিয়েছেন। ৫ বছর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে। সঙ্গে চলছে ধারাবাহিক ‘লাল কুঠি’-র কাজ। বড় পর্দায় ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের ছবি ‘বিসমিল্লাহ’ মুক্তি পাবে অগস্টে।

এত হাসিখুশি, শান্তিপূর্ণ ভাবে কী ভাবে সব কিছু সামাল দিচ্ছেন স্নেহা? তার মূলেও নাকি নাটক! ছেলে তুরুপের জন্মের দেড় বছরের মাথায় আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল স্নেহার মাতৃত্বযাপনের প্রকৃত ছবিটা জানতে।

স্নেহা বললেন, ‘‘মাঝে করোনা গিয়েছে। দু’বছর কোনও কাজ করিনি। তার পর যে আবার অভিনয়ে ফিরলাম সে তো নাটকের হাত ধরেই! ‘পি. এস ভালবাসা’ একটা চমৎকার নাটক। সেখানে ‘রাই’ নামে ছোট্ট এক চরিত্র করি আমি। অনিরুদ্ধর পরিচালনা। কিন্তু এটা করতে যে আমার কতটা ভাল লাগে বলে বোঝাতে পারব না।’’

তুরুপের জন্মের দশ মাসের মাথায় সকলকে অবাক করে মঞ্চে উঠেছিলেন স্নেহা। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্ন ছিল, ফিরে আসাটা পর্দায় নয় কেন? ইচ্ছে হয়নি?

স্নেহা জানান, যেমন সুযোগ এসেছিল তারই সদ্ব্যবহার করেছেন। কোনও কাজ তুচ্ছ নয়। কেবল পরিমিতি আলাদা আলাদা। যে নিয়ম মঞ্চে খাটে, সে নিয়ম পর্দায় খাটে না। সবক’টিই উপভোগ করেন স্নেহা। কারণ অভিনয়ের মধ্যে থাকাটাই তাঁর কাছে আনন্দের।

অভিনয় জগতে থিয়েটারকে ব্রাত্য হিসেবে দেখার প্রবণতাটা কিন্তু রয়েই যাচ্ছে, একে কী ভাবে দেখেন স্নেহা? বললেন, ‘‘রাতারাতি খ্যাতি দেয় না যে! এটা শিল্পমাধ্যম। লাইভ অভিজ্ঞতা। মঞ্চে রিটেকের সুযোগ নেই। ভুল হলে ভুল, ঠিক হলে ঠিক, আর ভাল হলে ভাল। দর্শক চোখে যা দেখবেন, যে ক’জন দেখবেন সে টুকুই ধরা থাকবে। চ্যালেঞ্জিং কাজ। তাই হয়তো অনেকে গুরুত্ব দেন না। আবার দেনও তো! না হলে প্রত্যেকটা ভাল ভাল নাটকের শো হাউসফুল হয় কী ভাবে!’’

নাটকের এক দৃশ্যে স্নেহা

নাটকের এক দৃশ্যে স্নেহা

সিনেমা নিয়ে যতটা মাতামাতি হয়, নাটক নিয়েও তার কম কিছু হয় না— এমনটাই দাবি স্নেহার। তিনি নিজে যেমন করে নাটকের প্রেমে পড়েছেন সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘‘কত বন্ধু পেয়েছি! কমিটমেন্ট কাকে বলে বুঝেছি দলে কাজ করতে গিয়েই। সবাই মিলে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া, সুখ দুঃখের সঙ্গী হওয়া—এ জীবন মূল্যবান। যে কোনও বয়সেই হোক, এই অভিজ্ঞতার দাম রয়েছে।’’

আর এখন, জীবনে বাড়তি পাওনা তুরুপ। তার টলোমলো পায়ে হাঁটা দেখতে উদগ্রীব অপেক্ষা ছিল স্নেহার। এই মুহূর্তগুলো যে ফিরে আসবে না। তাই ছেলের দু'বছর না হওয়া অবধি কাজের চাপ প্রায় রাখেননি স্নেহা। সেই পরিসর তাঁকে দিয়েছে থিয়েটার। আর পেয়েছেন পরিবারের ভালবাসা এবং সমর্থন।

স্নেহার কথায়, ‘‘করোনার সময় না খেতে পেয়ে বাচ্চাগুলো হাহাকার করেছে। কাজ হারানো মানুষ চাল কিনবে বলে টিভি বিক্রি করে দিয়েছে, সেখানে আমার কোনও আক্ষেপ থাকতে পারে কি? আমি ভাগ্যবান। কেবল চাই ছেলেটা হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল হয়ে বড় হোক। নিজের মতো করে বাঁচুক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sneha Chatterjee theatre Motherhood comeback
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy