‘দোহার’। ছবি: সংগৃহীত।
লোকগীতি মানেই মাটির টান। শিকড়ের কাছাকাছি যা কিছু, তা-ই গান হিসাবে বার বার উঠে এসেছে লোকসঙ্গীতের পরম্পরায়। সেই পরম্পরাকেই গত দুই যুগ ধরে ধারণ ও বহন করে এসেছে ‘দোহার’। পথচলতি মানুষ এখনও যাকে কালিকাদার গানের দল বলে চেনেন। ‘দোহার’-এর সেই প্রাণপুরুষ কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্য ইহলোক ত্যাগ করেছেন বছর ছয়েক আগে। অনেকেই ভেবেছিলেন, কালিকাদার অকালমৃত্যুর পরে হারিয়ে যাবে তাঁর প্রাণপ্রিয় গানের দল। সেই সংশয়কে ভুল প্রমাণ করে গানের দলকে আরও মন দিয়ে বেঁধেছেন ‘দোহার’-এর অন্যতম স্রষ্টা রাজীব দাস। আসছে বছর ২৫-এ পা দিচ্ছে বাংলার প্রিয় লোকগানের দল। সেই মাইলফলক উদ্যাপনের তোড়জোড় শুরু চলতি বছর থেকেই। মহানগরের বুকেই সেই উদ্যাপনের শুভসূচনা। আগামী ৭ অগস্ট ট্রামে চড়ে গানের সফর শুরু করতে চলেছে ‘দোহার’। গোটা বছর জুড়ে কী কী অনুষ্ঠানে সাজানো থাকবে ‘দোহার’-এর ডালি? আনন্দবাজার অনলাইনকে তারই আভাস দিলেন রাজীব দাস।
মানুষের জন্য মানুষের গান। বরাবর এই মন্ত্রে বিশ্বাস রেখেই গান বেঁধেছে ‘দোহার’। নিজেদের অনুষ্ঠানেও শামিল করেছে মানুষকে। মাটির গান তো আসলে মানুষেরই গান... মানুষের সুখ-দুঃখের পরম প্রিয় বন্ধুও। সেই বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে কেমনে! সেই আবেগে শান দিয়েই মহানগরে বুকে নিজেদের গানের ডালা সাজিয়ে বসছে ‘দোহার’। আগামী ৭ অগস্ট গড়িয়াহাট ট্রাম ডিপোয় জমায়েতের মাধ্যমে শুরু এই উদ্যাপনের। সেখান থেকেই শুভসূচনা ট্রামযাত্রারও। গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে শ্যামবাজার পর্যন্ত চলবে এই ট্রামযাত্রা। সঙ্গে মনের কাছের গান। ‘দোহার’-এর ২৫তম বর্ষের উদ্যাপনের শুভ মহরতের জন্য ট্রামযাত্রাকে কেন বেছে নিল ‘দোহার’?
রাজীবের কথায়, ‘‘১৫০ বছরের ঐতিহ্যের পরেও কলকাতায় এখন ট্রাম প্রায় বিলুপ্তির পথে। ট্রামের রুটও ক্রমশ ছোট হতে হতে এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। কোনও একটা জায়গায় গিয়ে ট্রামও অক্সিজেন খুঁজছে। আমরাও তো বাংলার সংস্কৃতি ও শিকড়কে বাঁচিয়ে রাখতে রাখতেই এতগুলো বছর পেরোলাম। আমাদের যাত্রা এখনও অব্যাহত। সেই জায়গা থেকেই এটা অনেকটা আত্মিক যোগ বলে মনে হয়েছে।’’ ট্রামের সঙ্গে ‘দোহার’-এর এই যোগ যদিও নতুন নয়। ২০০২ সালে ‘বাংলার গান, শিকড়ের টান’ অ্যালবাম উদ্বোধনের সময়েও একটি সুসজ্জিত ট্রামেই যাত্রা করেছিল ‘দোহার’। গানের দলের ২৫তম বছরের এসে এও এক রকমের ফিরে দেখাই। অতীতের ঐতিহ্যকে পাথেয় করেই ভবিষ্যতের দিকে এগোতে চায় ‘দোহার’। তাই এই উদ্যোগ পারস্পরিক সম্পর্কেরও বটে।
‘দোহার’-এর এই গানের গাড়ির সওয়ারি হওয়ার উদ্যোগে স্মরণে ও মননে থাকবেন বাংলার অগনিত বাউল, ফকির ও লোকগানের শিল্পীরা। গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজোর মতো নিজেদের পূর্বসূরীদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেই উত্তরাধিকারের পথে এগিয়ে যেতে চায় ‘দোহার’। আগামী ৭ অগস্ট থেকে শুভসূচনা সেই যাত্রার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy