সংসারের চাপ বাড়তে থাকায় বেশি দিন এই শখের অভিনয় চলল না। স্কুলজীবনের বন্ধু সঞ্জয় গুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করে পঙ্কজ পরাশরের কিছু ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ১২:৫০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
স্বয়ং সলমন খান তাঁর শ্যালক। তিনি নিজে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনা ও প্রযোজনাও করেছেন। কিন্তু বলিউডে নায়ক বা অভিনেতা হিসেবে প্রত্যাশিত সাফল্য অধরাই থেকে গিয়েছে অতুল অগ্নিহোত্রীর কাছে।
০২১৮
আদতে দিল্লির ছেলে অতুল। সেখানেই তাঁর জন্ম ১৯৭০ সালের ৮ জুলাই। বাবা রোহিত অগ্নিহোত্রীও ছিলেন অভিনেতা। তবে বলিউডে সাফল্য পাননি তিনি। কিছু দিন পর অভিনয় ছেড়েও দেন। তার পর তিনি সিনেমার হোর্ডিং লাগানোর ব্যবসা শুরু করেন।
০৩১৮
অল্প বয়সেই বাবাকে হারান অতুল। তাঁর উপরে সংসারের সম্পূর্ণ ভার এসে পড়ে। সে সময় মুম্বইয়ে তাঁদের বাড়িতে কিছু দিনের জন্য থাকতে এসেছিলেন আত্মীয়া রতি অগ্নিহোত্রী। তিনি অতুলের তুতো দিদি হন।
০৪১৮
অতুলদের পরিবারের সঙ্গে বছর দু’য়েক থেকেই বলিউডে কেরিয়ার শুরু করেন রতি। তাঁকে দেখে অতুলও আগ্রহী হন অভিনয়ে।
০৫১৮
রতির সুপারিশে অতুল প্রথম কাজ পান ছবিতে। অভিনয় করেন বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পসন্দ আপনি আপনি’-তে। মিঠুন চক্রবর্তী-রতি অগ্নিহোত্রী অভিনীত সুপারহিট এই ছবিতে একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। ছবিতেও তিনি রতির ভাই হয়েছিলেন। অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল ‘অনিল’।
০৬১৮
এর পরই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়তে থাকে অতুলের। তিনি একটি নাটকের দলে যোগ দেন। সকালে কলেজের ক্লাসের পরে তিনি নাটকের দলে অভিনয় করতেন।
০৭১৮
কিন্তু সংসারের চাপ বাড়তে থাকায় বেশি দিন এই শখের অভিনয় চলল না। স্কুলজীবনের বন্ধু সঞ্জয় গুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করে পঙ্কজ পরাশরের কিছু ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
০৮১৮
সহকারী পরিচালকের কাজ করতে করতেই অতুল সুযোগ পেলেন অভিনয়ে। সে সময় অর্থের জন্য তিনি সব রকম কাজ করতে রাজি হয়ে যেতেন। ১৯৮৩ সালে প্রথম ছবির ১০ বছর পরে মহেশ ভট্টের ‘স্যর’-এ অভিনয় করলেন তিনি। পরের বছর ‘আতিশ’ ছবিতে দর্শকদের নজর কাড়েন অতুল।
০৯১৮
ছবির পাশাপাশি অতুল কাজ করতেন বিজ্ঞাপনেও। একটি রঙের বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় আলভিরা খানের। সেলিম খানের মেয়ে তথা সলমন খানের বোন অলবীরা তখন বিজ্ঞাপনী ছবির কাজে কৈলাস সুরেন্দ্রনাথের সহকারী ছিলেন।
১০১৮
প্রথম আলাপেই দু’জনের দু’জনকে ভাল লাগে। তার পর ক্রমশ জমে ওঠে বন্ধুত্ব। অলবীরার কথায় অতুল সুযোগ পান সলমনের ‘বীরগতি’ ছবিতে। সে সময় শ্যুটিংয়ে প্রায়ই যেতেন অতুল। ক্রমে আলভিরার সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব পাল্টে যায় প্রেমে। ১৯৯৬ সালে দু’জনে বিয়ে করেন।
১১১৮
তবে খান পরিবারের জামাই হয়েও অতুলের অভিনয়-ভাগ্য বিশেষ বদলায়নি। নায়ক তো দূর অস্ত্। পার্শ্বনায়কের ভূমিকাতেও তিনি ছিলেন অনিয়মিত। ‘চাচি ৪২০’, ‘হোতে হোতে প্যায়ার হো গ্যয়া’, ‘কোহরম’, ‘হম তুমহারে হ্যায় সনম’, ‘জানি দুশমন’, ‘সনম তেরি কসম’-সহ বেশ কিছু ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। কিন্তু আসতে পারেননি জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে।
১২১৮
অভিনয়ে সুযোগ না পেয়ে অতুল সরে আসেন পরিচালনায়। এ বার কিন্তু সলমন তাঁকে অনেক সাহায্য করেন। সলমনকে নিয়ে তিনি পরিচালনা করেন ‘দিল নে জিসে আপনা কহা’। কিন্তু ছবিটি ব্যর্থ হয়।
১৩১৮
২০০৮ সালে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন অতুল। এ বার তিনি পরিচালনা ও প্রযোজন করেন ‘হ্যালো’। ছবির সঙ্গে পুরো খান পরিবার যুক্ত ছিল। অভিনয় করেন সলমন, সোহেল এবং আরবাজ। কিন্তু এটা আগের ছবি তুলনায় আরও বেশি ব্যর্থ হয়।
১৪১৮
এর পর সলমনের ‘বডিগার্ড’ ছবিরও প্রযোজনা করেন অতুল। সলমনের সত্যিকারের দেহরক্ষী শেরার জীবনের গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছিল ছবিটি। আগের সব লোকসান এই সুপারহিট ছবিতে লাভে পরিণত করে নেন অতুল।
১৫১৮
এর পর তিনি প্রযোজনা করেন ‘ও তেরি’। কিন্তু পুলকিত সম্রাট অভিনীত এই ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে সলমন-ক্যাটরিনা কইফের ‘ভারত’ ছবি প্রযোজনা করে অতুল প্রযোজক হিসেবে বড় অঙ্কের লাভের মুখ দেখেন।
১৬১৮
‘ভারত’-এ প্রথমে অভিনয়ের কথা ছিল প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। কিন্তু পরে তিনি এই ছবি থেকে সরে আসেন। অতুলের অভিযোগ ছিল, প্রিয়ঙ্কা কাউকে না জানিয়েই ছবি থেকে সরে দাঁড়ান।
১৭১৮
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি অতুলকে। তবে তিনি অভিনেতা হিসেবে যত না জনপ্রিয়তা, পরিচিতি এবং সাফল্য পেয়েছেন, তার থেকে অনেক গুণ বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন প্রযোজক হিসেবে।
১৮১৮
অভিনেতা পরিচয়ের মোহের পিছনে পড়ে থাকেননি অতুল। জীবন যেভাবে বাঁক নিয়েছে, তিনিও সেভাবেই পা ফেলেছেন। বলিউডের বিস্মৃত নায়কদের তালিকার অংশ না হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন প্রযোজক পরিচয়ে।