আরিয়ান ভৌমিক।
প্রশ্ন: রমরমিয়ে চলছে ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। তিন দিনে এক কোটি টাকা লাভ হয়েছে, আপনার জায়গা তা হলে পাকা?
আরিয়ান: অবশ্যই। তার থেকেও বড় কথা, কোভিডের প্রকোপ কমেছে। মানুষ হলমুখী হয়েছেন। বাংলা ছবির জয়জয়কার। এই বছরের প্রথম সুপারহিট ছবি এটা। একইসঙ্গে মানুষ ‘বাবা বেবি ও’ ছবিটিও দেখছেন। খুব আনন্দ হচ্ছে।
প্রশ্ন: এই ছবিতে ভর্তি জন্তু জানোয়ার গল্প ঘিরে, কী ভাবে শ্যুটিং করলেন?
আরিয়ান: দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে! প্রত্যেক দিনই আফ্রিকার জঙ্গলে ভয়াবহ কাণ্ড ঘটেছিল । প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুভয় ছিল। শ্যুটের একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল। আজ আমরা সিংহদের সঙ্গে শ্যুট করব। কাল আমরা বাঘের সঙ্গে শ্যুট করব। পরশু আমার সহ-অভিনেতা, অভিনেত্রী হবে জলহস্তি। তার পরের দিন সাপ। উফ সে এক শ্যুটিং বটে! এক দিন তো চিতাবাঘ এসে আমাদের পা চেটে গিয়েছে, জানেন? কিন্তু আমি সব থেকে আনন্দ পেয়েছি সাপের সঙ্গে শ্যুট করে।
প্রশ্ন: সেকী! সাপকে ভয় পান না?
আরিয়ান: একটুও না। যেই সাপটার সঙ্গে শ্যুট করেছিলাম, তাকে প্রচুর আদর করেছি আমি। সাপের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান রয়েছে আমার। তাই একমাত্র সাপের সময়ে একটুও ভয় করেনি আমার। খুব মিস করছি ওকে আমি।
প্রশ্ন: পুষতে চান?
আরিয়ান: চাই তো! কিন্তু মা-বাবা রাজি নন। কী আর করব?
প্রশ্ন: সেই শ্যুটের সময়েই তো প্রথম ভারতে করোনার প্রবেশ, বাড়ি ফিরতে পারবেন না ভেবে চিন্তিত ছিলেন?
আরিয়ান: ওখান থেকে জানতে পারি, লকডাউন হয়ে যাবে কলকাতায়। ভাইরাসের ভয় গোটা শহর কাঁপছে। এত কিলোমিটার দূর থেকে কিছু বুঝতে পারছিলাম না আমরা। তবে গোটা টিমকে নিয়ে প্রযোজনা সংস্থা কিন্তু ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরেছে, এটা প্রশংসনীয়। যে দিন থেকে ভারতে লকডাউন, ঠিক তার আগের দিন শহরে নেমেছি আমরা। তার পর সব স্তব্ধ। এই ছবির মুক্তির মাধ্যমে যেন সেই সুসময়টা ফিরে আসছে, যেটা চলে গিয়েছিল তখন।সন্তু করার মজাই আলাদা।
প্রশ্ন: মনে হয় বয়স বেড়ে গেলে আর সন্তু করতে পারবেন না?
আরিয়ান: চরিত্রের প্রয়োজনে এইটুকু তো মেনে নিতেই হবে। এক জন সাহিত্যিকের তৈরি চরিত্র। বয়স বেড়ে গেলেও যদি আমিই সন্তু করতে থাকি, তা হলে তো সাহিত্যের প্রতি অবিচার করা হবে। তাই আমি চিরকাল সন্তু করব না, এটা প্রথম থেকেই জানতাম। সৃজিতদাও (মুখোপাধ্যায়) তো বলছিলেন, সম্ভবত পরেরটা থেকেই আমি আর সন্তু হব না। সেটাই স্বাভাবিক। তবে হ্যাঁ, মন খারাপ তো হবেই। সন্তুর সঙ্গে সঙ্গে বড় হয়েছি আমি। টানা ন’বছর ধরে যে চরিত্রটির সঙ্গে একাত্ম বোধ করেছি, তা অন্য কারও হাতে ছেড়ে দিতে একটু কষ্ট তো হবেই।
প্রশ্ন: আপনার পরে কে হতে পারে সন্তু?
আরিয়ান: এই রে সেটা আমি কী করে বলব? কোনও ধারণাই নেই আমার।
প্রশ্ন: কাকে আপনি দেখতে চান?
আরিয়ান: সত্যিই আমার মাথায় আপাতত কেউ নেই। হতেই পারে, একদম নতুন মুখ নেওয়া হল। যাঁকে এখনও কেউ চেনে না।
প্রশ্ন: ‘মিশর রহস্য’ থেকে শুরু। ২০১৩ সাল। আর এখন ২০২২। ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে কোনও পরিবর্তন দেখলেন?
আরিয়ান: পরিবর্তন জানি না। কী রয়ে গিয়েছে, সেটা জানি। বুম্বা আঙ্কলের (প্রসেনজিৎ) যে অপরিসীম ধৈর্য, তা অতুলনীয়। সেই ২০১৩ সাল থেকে দেখে আসছি আমি। কোনও দিন সেটে আমি মাথা গরম করতে দেখিনি।
প্রশ্ন: ছবিতে সন্তুর চরিত্র প্রেমে পড়ছে, প্রেম করছে ত্রিধা চৌধুরীর সঙ্গে, এ সব নিয়ে ২০১৩ সালে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল…
আরিয়ান: হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু একইসঙ্গে অনেকের ভালও লেগেছিল। তাঁরা বলেছিলেন, ‘বেশ নতুন একটা ব্যাপার’। আসলে খুব কম বাঙালিই আছেন, যাঁরা কাকাবাবু পড়েননি। সেখান থেকে হয়তো অনেকেই সন্তুর চরিত্রের নতুন রং মেনে নিতে পারেননি। সেটা ভাঙতে লেগে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আসবেই।
প্রশ্ন: ত্রিধার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সেই সময়ে গুজব রটেছিল…
আরিয়ান: তাই নাকি? এটা জানতাম না। না না, আমার সঙ্গে ত্রিধার প্রেম ছিল না। আমি প্রেমের বিষয়ে কখনও কিছু লুকিয়ে রাখি না। খুল্লমখুল্লা প্রেম করি আমি।
প্রশ্ন: অদ্রিজা রায়ের সঙ্গে প্রেম ভাঙার পরে নতুন কাউকে খুঁজে পেলেন?
আরিয়ান: হ্যাঁ অবশ্যই। প্রেম করছি। নন্দিনী দত্ত। সেও এক জন অভিনেত্রী। ইনস্টাগ্রামে ছবিও দিই একসঙ্গে। এক বছরের বেশি হয়ে গেল আমরা প্রেম করছি।
প্রশ্ন: বিয়ের পরিকল্পনা চলছে নাকি?
আরিয়ান: না না এখনই না। সময় আসেনি এখনও। আগে মন দিয়ে অভিনয় করি, আরও নানা ধরনের কাজকর্ম করি, তার পরে ও সব সংসার পাতার কথা ভাবা যাবে।
প্রশ্ন: ‘তিতলি’ ধারাবাহিক করার পরে আবার সুযোগ এলে ছোটপর্দায় ফিরবেন?
আরিয়ান: হ্যাঁ সব কিছু দু’য়ে দু’য়ে চার হলে অবশ্যই করব ধারাবাহিক।
প্রশ্ন: কিন্তু ‘তিতলি’-র বিমান চালানো নিয়ে তো নেটমাধ্যমে প্রচুর ঠাট্টা মস্করা হয়েছে। ভিডিয়ো তৈরি হয়েছে, মিমে মিমে ছয়লাপ…
আরিয়ান: আমার তো খুব মজা লাগত তখন। নিজে কতবার সেই মিম শেয়ার করেছি! দেখুন, যে রকম ভাবেই হোক, মানুষকে আনন্দ তো দিতে পেরেছি। মানুষ হেসেছেন তো। ব্যস ওটাই ভাল। আমরা বিনোদনী মানুষ। যে ভাবে সম্ভব আনন্দ দিতে পারলেই আমরা সফল। তাই কখনও প্রভাবিত হইনি এ সব নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy