Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Khorkuto

খড়কুটোর প্রভাবে একই রকম চরিত্র দেখা যাচ্ছে কি অন্য দুই ধারাবাহিকেও?

প্রেমের ছবি বা রহস্য-রোমাঞ্চের গল্প জনপ্রিয় হলে ইন্ডাস্ট্রি ব্যবসায়িক সাফল্য পেতে একই ধারার ছবি বানাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, এ প্রয়াস কি তবে তেমনই?

‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’, খড়কুটো, ‘মিঠাই’

‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’, খড়কুটো, ‘মিঠাই’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১ ১৯:১৯
Share: Save:

খড়কুটো কি প্রভাবিত করল অন্য চ্যানেলের দু’টি ধারাবাহিক, ‘মিঠাই’ আর ‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’-কে? যে ভাবে প্রেমের ছবি বা রহস্য-রোমাঞ্চের গল্প জনপ্রিয় হলে ইন্ডাস্ট্রি ব্যবসায়িক সাফল্য পেতে একই ধারার ছবি বানাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, এ প্রয়াস কি তবে তেমনই? বিশেষ করে, খড়কুটোর সৌজন্য আর গুনগুনের দাম্পত্য-প্রেম এখন মিঠাইয়েও অল্প অল্প দেখা যাচ্ছে। সিড আর আগের মতো পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারছে না মিঠাইয়ের উপস্থিতি। ফলাফল? ‘খড়কুটো’-কে টপকে ‘মিঠাই’ উঠে এসেছে সপ্তাহের সেরা হিসেবে।

এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ৩টি ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রেরা, অভিনীত একাধিক দৃশ্য। ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের মূল আকর্ষণ সৌজন্য আর গুনগুন। অনুরাগীদের ভালবাসায় সেই জুটির নতুন নাম ‘সৌগুন’। এই জুটির বৈশিষ্ট্য কী? দুই চরিত্রের মধ্যে খুনসুটি। এই ঝগড়া, তো এই ভাব। যা দেখে পুটুপিসি পর্যন্ত জানিয়েছে,‘তোদের ঝগড়া দেখলে মনে হয়, তোদের মধ্যে টান আছে।’ সম্প্রতি, সৌজন্য আর গুনগুন পরস্পরকে জানিয়েছে তাদের ভালবাসার কথা। ধারাবাহিকের প্রতিটি দৃশ্যেই তাই তাদের প্রেমের ছোঁয়া।

হুবহু এক রকম না হলেও সৌগুনের সম্পর্কের রসায়নের ছায়া যেন দেখা যাচ্ছে ‘মিঠাই’-এর মুখ্য অভিনেতা সিদ্ধার্থ আর মিঠাইয়ের মধ্যেও। কেমন সেই মিল? সৌজন্যের মতোই সিদ্ধার্থও কাজ পাগল। মুখে হাসি প্রায় নেই বললেই চলে। সারাক্ষণ সকলকে ‘ননসেন্স’, ‘ইডিয়ট’ বলে চলেছে। তার বিয়েটাও মন থেকে হয়নি। দাদুর কথা রাখতে গ্রামের মিষ্টি বিক্রেতা মিঠাইকে বিয়ে করেছে সে। তাই তাকে নিজের বউ বলেই মানে না। সৌজন্য এতটাও কড়া নয়। কিন্তু গুনগুনকে কি শুরু থেকেই পছন্দ করত সে?

গত ১২ এপ্রিল থেকে ছোট পর্দায় এসেছে আরও একটি ধারাবাহিক ‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’।ধারাবাহিকের প্রোমোর ঝলক অনুযায়ী, হলুদ ট্যাক্সির চালক ঊর্মির বন্ধু সাত্যকিও সৌজন্যেরই মতো। চোখে চশমা এঁটে গুরুগম্ভীর ভাব। আর ঊর্মি? যেন গুনগুনের প্রতিচ্ছবি!

সত্যিই কি তিনটি ধারাবাহিক একই খাতে বইছে? আনন্দবাজার ডিজিটালকে ‘মিঠাই’-এর কেন্দ্র চরিত্র সৌমিতৃষা কুন্ডুর উত্তর, ‘‘অমিলও তো রয়েছে। সে সব চোখে পড়ছে না?’’ তাঁর বক্তব্য, গুনগুন বড়লোক বাড়ির মেয়ে। মিঠাই পিতৃহারা গরিব ঘরের মিষ্টি বিক্রেতা। গুনগুন সৌজন্যকে ভয় পায় না। মিঠাই সিদ্ধার্থকে নকল করে মজা করলেও আদতে প্রচণ্ড ভয় পায়। কিন্তু বাকিটা? দু’জনের চুটিয়ে ঝগড়া? মনে মনে ভালবেসে ফেলা। ‘ক্রেজি’র মতোই ‘উচ্ছেবাবু’-কে বিশেষ নাম দেওয়া হয়েছে। যৌথ পরিবারের সকলকে ভালবাসা। সৌমিতৃষার দাবি, ‘‘সে ভাবে খুঁটিয়ে দেখলে অন্য ধারাবাহিকগুলির মধ্যেও কিছু না কিছু মিল পাওয়া যাবে। তবে ‘মিঠাই’-এর ক্ষেত্রে বলতে পারি, কোনও মিল চোখে পড়ে থাকলে তা পুরোপুরি কাকতালীয়।’’

মিঠাই ধারাবাহিকটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ‘কাদম্বিনী’ খ্যাত রাজেন্দ্রপ্রসাদ দাস। এ বিষয়ে কী বক্তব্য তাঁর? পরিচালক প্রথমেই জানিয়ে দিলেন, তিনি শ্যুটিংয়ের চাপে এখনও ‘খড়কুটো’ দেখেই উঠতে পারেননি। তবে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া গেলেও তা ইচ্ছাকৃত নয়। বহু ধারাবাহিকের মধ্যেই অল্পবিস্তর মিল পাওয়া যেতে পারে। তাঁর দাবি, শুধু খড়কুটো আর মিঠাই নয়, চারিত্রিক মিল হয়তো অন্য ধারাবাহিকগুলির মধ্যেও আছে। এমনও হতে পারে যে আগামী দিনে মিঠাইয়ের কোনও দৃশ্যের প্রভাব দেখা যেতে পারে আর একটি ধারাবাহিকে। উদাহরণ হিসেবে রাজেন্দ্রপ্রসাদ বলেন, ‘‘সমস্ত চ্যানেল মিলিয়ে কমবেশি ১০০টি ধারাবাহিক চলছে। সেগুলির মধ্যে কোনও মিল থাকবে না, এ কি সম্ভব?’’

পরিচালকের আরও যুক্তি, চলতে গিয়ে সকলেই দুটো রাস্তা খুঁজে পান। এক জন একটি বেছে নেন। দ্বিতীয় জন অন্যটি। তৃতীয় জন যে রাস্তায় হাঁটবেন, সেই রাস্তায় হয় প্রথম, নয় দ্বিতীয় ব্যক্তি হেঁটেছেন। তৃতীয় ব্যক্তি কিন্তু কাউকে অনুসরণ করেননি। নিজের রাস্তা নিজেই বেছে নিয়েছেন। তবু মিলটা হয়েই গিয়েছে। ধারাবাহিকের ক্ষেত্রেও ঠিক এই যুক্তি প্রযোজ্য। তাঁর কথায়, ‘‘ধরে নেওয়া যেতে পারে, তৃতীয় ব্যক্তিটি আমার ধারাবাহিক। নিজের মতো চলেও তার মধ্যে অন্য ধারাবাহিকের ছায়া দেখছেন দর্শক। দাবি, তার পরেও গত সপ্তাহে মিঠাই-ই কিন্তু ‘সেরার সেরা’ হয়েছে। তার ধারপাশে কেউ আসতে পারেনি।’’

খড়কুটোর ভাল মুহূর্তগুলি নিজের মতো করে প্রতি পর্বে তুলে ধরেই শীর্ষে চলে গেল না তো মিঠাই? পরিচালকের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘দর্শক কি এতটাই বোকা? আমি দেখালেই তারা দেখবেন!’’

ফোনে পাওয়া যায়নি সোমবার থেকে শুরু হওয়া নতুন ধারাবাহিকের পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারকে। তবে সাড়া মিলেছে ‘ঊর্মি’ ওরফে অন্বেষা হাজরার থেকে। কী বলেছেন তিনি? অন্বেষার দাবি, ‘‘গল্পের কথা ছেড়ে দিন। দু’টি ধারাবাহিকের চরিত্রেও কোনও মিল নেই। গুনগুন-ঊর্মি দু’জনেই বড়লোক বাড়ির মেয়ে। মিল বলতে ওইটুকুই।’’ পাল্টা যুক্তি দিলেন অন্বেষাও। তাঁর বক্তব্য, সবে মাত্র প্রথম পর্ব সম্প্রচারিত হয়েছে। এর মধ্যেই দর্শক বুঝে গেলেন যে, খড়কুটোর ছায়া ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’-তে রয়েছে? অন্বেষার দাবি, বেশ কিছু পর্ব না দেখলে কিছুতেই বোঝা সম্ভব নয় কোনও কিছুর সঙ্গে এই ধারাবাহিকের মিল আছে কি না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy