Advertisement
১৩ অক্টোবর ২০২৪
Durga Puja 2024

পুজোর ফুল অনশনরত চিকিৎসকদের মাথায় ছুঁইয়ে এলেন চৈতি, সিঁদুরখেলা ত্যাগ করলেন কারা?

শহরে একসঙ্গে প্রতিবাদ ও উৎসবের আবহ। পুজো হলেও বিচারের আশা এখনও জ্বলন্ত। বিচার না মেলায় এ বছর সিঁদুর খেলায় থাকলেন না অপরাজিতা, চৈতি, পাওলিরা।

parajita Adhya, Chaiti Ghoshal and Paoli Dam did not take part in Sindoor khela due to RG Kar incident

অপরাজিতা আঢ্য, চৈতি ঘোষাল, পাওলি দাম। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৭
Share: Save:

পুজোর শহরেও জারি প্রতিবাদ। অন্য বছরের তুলনায় অনেকের পুজোই এ বার আড়ম্বরহীন। পুজোর আগেই আনন্দবাজার অনলাইনকে অপরাজিতা আঢ্য স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, বিজয়ার আগে আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচার না পেলে এ বার মা দুর্গাকে বরণ করবেন না। নিজের সিদ্ধান্ত অনড় অভিনেত্রী। কোনও ভাবেই সিঁদুর খেলায় যোগ দিচ্ছেন না তিনি।

অপরাজিতা বলেন, “প্রত্যেক বার মণ্ডপে গিয়ে ঢাক বাজাই। আনন্দ করি। এ বার কোনওটাই করিনি। যে দিন দুর্গাপুজোর হোম-যজ্ঞ হচ্ছিল, সে দিনই শুধু এক বার মণ্ডপে গিয়েছিলাম। পাড়ার কেউই এ বার সিঁদুর খেলছেন না। প্রতিমা বিসর্জনে শুধু মহিলারাই নাচেন। এ বার সে সব কিছুই হচ্ছে না। মাকে আমরা ভালবাসি। তাঁর পুজো সঠিক ভাবে করাটা আমাদের দায়িত্ব। তবে তার বাইরে কোনও আড়ম্বরে আমরা যাইনি।”

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রথম থেকে সরব চৈতি ঘোষালও। অনশনমঞ্চে জুনিয়র চিকিৎসকদের সমর্থনেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাই তিনিও এ বার নেই সিঁদুর খেলায়। অষ্টমীর বিকেলে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান চৈতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দেবলীনা দত্ত, উষসী চক্রবর্তী ও সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেরার পথে গাড়িতে উঠেই প্রথমেই ছেলে অমর্ত্যকে ফোন করেন। তার পরে গাড়ির কাচ তুলে সকলে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। অভিনেত্রী বলেছেন, “এই অবস্থার পরে পুজোমণ্ডপে গিয়ে কিছু করার মতো আমাদের মনের অবস্থা নেই। আমাদের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। ‘যুক্তি তক্কো গপ্পো’র সময় বাবাকে কাঠের প্রতিমা দিয়েছিলেন রামকিঙ্কর বেজ। মা চণ্ডীপাঠ করে সেই প্রতিমার পুজো করতেন। মা চলে যাওয়ার পর সংকল্প করে পুজো করি আমি। সেটাই করেছি। এ বার জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য সংকল্প করেছিলাম। ওঁদের মাথায় পুজোর ফুল ছুঁইয়েছি। প্রতি দিন প্রার্থনা করছি। এটাই এ বার আমার পুজো।”

এ বছরের পুজো নিয়ে কোনও উত্তেজনা ছিল না পাওলি দামেরও। পুজোর কেনাকাটা, ঠাকুর দেখা, কোনও কিছুতেই তিনি ছিলেন না। তাই দেবীবরণও করছেন না। অভিনেত্রী ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলেন, “এখনও আরজি কর-কাণ্ডের কোনও সুরাহা হল না। কাজ করতে হবে উপার্জনের কারণে। তাই ওইটুকুই করেছি। এক দিনও রাস্তায় বেরোইনি। আবাসনের পুজোয় যোগ দিইনি। নতুন শাড়িও পরিনি। প্রত্যেক বছর আমাদের আবাসনের দেবীবরণে অংশ নিই। আবাসনের প্রবীণারা আশা করে থাকেন, একটা দিন ওঁদের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কাটাব। এ বছর সেখানেও নেই আমি।”

তবে এই বছরের পুজোয় যোগ না দেওয়ার আরও একটি কারণ রয়েছে তাঁর। পাওলির কথায়, “প্রতি বছর সিঁদুরখেলার পর ধুনুচি নাচ হয়, আমার সঙ্গী নীলাঞ্জনাদি। গত বছর দিদিকে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি। তাই সব মিলিয়ে এ বছর পুজোয় সমস্ত উদ্‌যাপন থেকে দূরে। আশা, আগামী বছর সব ঠিক হয়ে যাবে। নিহত তরুণী চিকিৎসক ন্যায় পাবেন। আবারও শারদীয়া ঝলমলিয়ে উঠবে আনন্দে। আমিও হব সিঁদুররাঙা।”

অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তী বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাবেন না বলে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন। আরজি কর নিয়ে প্রথম থেকেই সরব। রাত দখলের কর্মসূচিতেও তাঁর বিশেষ যোগদান ছিল। এখনও সুবিচারের আশায় তিনি। বিদীপ্তার বোন তথা অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীও এ বারের পুজো প্রতিবাদেই কাটিয়েছেন। তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতা জুড়ে নেই পুজোর চিহ্ন মাত্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE