সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণে অনুপম রায়।
সন্ধ্যাদি আর নেই। ভাবতে পারছি না। আসলে ভাবতে চাইছিও না। এই তো দিন কয়েক আগেই কথা হয়েছিল ওঁর সঙ্গে। সেই মানুষটাই সব কিছু ছেড়ে চলে গেলেন! এ কথা মন বিশ্বাস করতে চাইছে না।
আমি আর সন্ধ্যাদি একই পাড়ায় থাকি। বেঙ্গালুরু থেকে যখন প্রথম কলকাতায় ফিরেছিলাম, তখন খুব বেশি কথা হত না। তবে গত দু’তিন বছরে অনেক কথা হয়েছে আমাদের। আর সব আড্ডা-আলোচনার মূলেই থাকত গান। আমি আমার তৈরি গান শোনাতাম সন্ধ্যাদিকে।
ইদানীং করোনা পরিস্থিতির কারণে খুব সাবধানে থাকতেন তিনি। বাড়ি গিয়ে দেখা করা হত না। সন্ধ্যাদি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতেন না। তাঁকে যিনি দেখাশোনা করতেন, তাঁর নম্বরে আমি আমার গানগুলি পাঠাতাম। সন্ধ্যাদি খুব মন দিয়ে শুনতেন। গানের সুর নিয়ে নিজের মতামত জানাতেন। সেই মানুষটার সঙ্গেই আর কখনও কথা হবে না। এই সত্যিটা নাকচ করে দিতে ইচ্ছে করতে। প্রচণ্ড আফশোস হচ্ছে। এত কথা হল। কিন্তু সন্ধ্যাদির সঙ্গে আর দেখা হল না। শেষ দেখা হয়েছিল নজরুল মঞ্চে। কোনও এক অনুষ্ঠানে। তারিখটা আর মনে পড়ে না। কিন্তু সন্ধ্যাদিদের মনে রাখতে কি দিনক্ষণ আবশ্যিক? তাঁরা তো আমাদের মননে উজ্জ্বল।
গায়িকা হিসেবে তিনি কতটা উচ্চ মানের, তা নিয়ে আমি বলব না। কারণ সে কথা সকলেই জানেন। তাঁর গাওয়া অজস্র গানের মধ্যে থেকে প্রিয় গান বাছাইয়ের ক্ষমতাও আমার নেই। আমি বলব মানুষ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কথা। তাঁর যাপন জুড়ে ছিল শুধুই সঙ্গীত। গানের বাইরে আর কোনও কিছু নিয়েই ভাবতেন না। গলার যে ভাবে যত্ন নিতেন, তা শিক্ষণীয়।
সন্ধ্যাদি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন অন্য সুরলোকে। কিন্তু এমন শিল্পীরা কি সত্যিই চলে যেতে পারেন? তাঁরা আসলে থেকে যান চিরতরে। সুরের মায়ায়। সৃষ্টির আলোয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy