নতুন হিন্দি ছবির কাজে হাত দিলেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সংগৃহীত।
প্রায় শেষের পথে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের গল্প ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ এবং ‘সরকার মশাইয়ের থলে’, এই দু’টি অবলম্বনে তৈরি অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ছবি।
ছবি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বললেন, ‘‘বারে বারে ভুলে যাওয়া রাজা হবুচন্দ্রর ভূমিকায় শাশ্বত আর তার দাপুটে রানি অর্পিতার কাজ নিঃসন্দেহে অন্য রকম হয়েছে। সঙ্গে মন্ত্রী খরাজের অভিনয় আর চুপচাপ থাকা মন্ত্রী শুভাশিষ— এই রূপকথা শীতের ডিসেম্বরে চমকে দেবে সকলকে।’’
রূপকথা গল্প, ঠাকুমার ঝুলি, ঠাকুরদার ঝুলির কথা শুনলে সেই ছেলেবেলার কথাই মনে পড়ে। ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’র মতো ছবির প্রসঙ্গ চলে আসে। ‘‘ছবি তৈরির প্রথম দিন থেকেই খুব সচেতন ছিলাম ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ ছবিটা যেন ‘হীরক রাজার দেশ’-এর মতো দেখতে না হয়’’, বললেন অনিকেত।
আসলে এই ছবি কি রাজনীতির কথা বলে? প্রশ্নটা করতেই একদা সাংবাদিক অনিকেত বুঝিয়ে দিলেন তাঁর নিজস্ব মত। ‘‘আমি মনে করি সব ছবি কোনও না কোনও রাজনীতির মাধ্যমেই এগোয়। হতেই পারে। ‘হীরক রাজার দেশে’-র সেই সংলাপ, ‘দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান’, এই সংলাপ তো রাজনৈতিক। এই সংলাপ যে কোনও স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায়। এই ছবিতেই রাজনীতি আছে। তবে আপাতদৃষ্টিতে এই ছবি রূপকথার। ছোটদের। সকলের।’’
তবে এই ছবির কাজ শেষ করতেই করতেই এক ভিন্ন ভাবনায় আবদ্ধ হয়েছে তাঁর পড়াশোনা। ‘‘আজও পৃথিবীতে কোথাও কোথাও কিশোরী মেয়েদের যৌন আনন্দের অঙ্গ কেটে বাদ দেওয়া হয়। যাকে বলে ‘ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন’। কি সাঙ্ঘাতিক এক অভ্যেস যা আজও চলছে। এই পদ্ধতিকে উৎসবের মতো পালন করা হয়। আমার পরের ছবি শুরু হচ্ছে এ রকম একটা ঘটনা দিয়ে। এক জন প্রটাগনিস্ট আছে। আর এক আইনজ্ঞের চরিত্র আছে। যারা উভয়েই মেয়ে। তারাই এই ভিক্টিম মেয়ের জন্য লড়াই করবে। আমরা অনেকেই এই বিষয়ে জানি না,’’ ক্ষোভ অনিকেতের গলায়।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আজ বিয়ে নুসরতের, কে কে গেলেন, মেনুই বা কী? জেনে নিন
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝগড়া প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
এই ছবির মাধ্যমে বিশ্বে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনাকে সামনে তুলে ধরতে চাইছেন পরিচালক। কিন্তু বাংলা ছবিতে এমন বিষয়?
‘‘নাহ, এই ছবি হিন্দিতে হবে। চরিত্ররা বাংলা থেকে থাকবে। আমি প্রচুর পড়াশোনা করছি এই নিয়ে। এক জন পুরুষ বিয়ের পর দেশের বাইরে কাজে চলে যাচ্ছে। এই পরিসরে তার স্ত্রী যাতে কোনও ‘পাপ’ কাজ না করে তার জন্য এই ব্যবস্থা! এই ছবি দেখাতে হলে আমি হিন্দিতেই দেখাব,’’ সাফ জবাব অনিকেতের।
আরও পড়ুন: স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করতে আচমকা বলিউড ছাড়েন সইফের এই নায়িকা! এখন তিনি...
গল্পটা ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছেন তিনি। গল্প শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড থেকে। সেখান থেকে মুম্বই, গুজরাত। বয়স্ক শিক্ষিত ধনী মহিলারা উদ্যোগী হয়ে এই কাজ করে থাকেন। সেই ছবিও তুলে ধরতে চাইছেন তিনি।
ছবি আর পড়াশোনা নিয়ে এত ব্যস্ত তিনি, হঠাৎ সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝগড়া করছেন কেন?
প্রশ্নটা শুনেই অনিকেত বললেন, ‘‘আমি ঝগড়া করিনি তো! সৃজিতের কাজ আমার ভাল লাগে। আমি ওর ছবি দেখি। ‘উমা’ দেখে খুব ভাল লেগেছিল। ফেসবুকে লিখেওছি। কিন্তু আমার কিছু বক্তব্য আছে গুমনামি বাবা সম্পর্কিত সাম্প্রতিক একটি বই নিয়ে। সেটা তো বলবই।’’
আরও পড়ুন: নুসরতের বিয়েতে পৌঁছে প্রথম ছবি শেয়ার করলেন মিমি
‘‘বিরিঞ্চিবাবা ধাঁচের লেখা। ভুল তথ্য। এটা তো বলব। যাকে খুশি নেতাজি বললেই হল?’’ প্রশ্ন তুলেছেন অনিকেত। তিনি যোগ করলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর বউদির সঙ্গে প্রেম আর নেতাজি ফিরে আসবেন, বেঁচে আছেন, বিয়ে করেছেন কি না, এই বিষয় নিয়ে যত অখাদ্য বই লেখা হোক না কেন সে বই ছাপা হবে। আমি আমার পড়াশোনা দিয়ে যা কিছু ভুল তার বিরুদ্ধতা করব।’’
এক দিকে গুমনামি বাবা নিয়ে লড়াই, অন্য দিকে, মেয়েদের উপর নৃশংস অত্যাচারের ঘটনায় ডুবে আছেন অনিকেত।
এ শুধুমাত্র ভাবনা নয়। দুই ভিন্ন ভাবনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এ বার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy