নন্দনের পাশাপাশি মুম্বইয়েও প্রথম দিন প্রেক্ষাগৃহ পায়নি ছবিটি।
‘অপরাজিত রায়’ নন্দনে পরাজিতই! দ্বিতীয় সপ্তাহেও ভাল ছবির ‘তীর্থক্ষেত্র’-এ ঠাঁই হল না অনীক দত্তের ছবির। এবং এমনটা ঘটল আইএমডিবি-তে ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ২’-কে টপকে ৯.২ রেটিং পাওয়ার পরেও; ২৫ থেকে ৪৫টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি ছড়িয়ে পড়ার পরেও; প্রায় সব প্রেক্ষাগৃহে হাউজফুল বোর্ড ঝোলার পরেও। ছবির প্রযোজক ফিরদৌসল হাসানের কথা অনুযায়ী, নন্দনের পাশাপাশি মুম্বইয়েও প্রথম দিন প্রেক্ষাগৃহ পায়নি ছবিটি। অথচ পরদিন থেকেই ভাল ফলাফল করেছে মুম্বই, দিল্লি সহ দেশের একাধিক রাজ্যে।
দ্বিতীয় সপ্তাহে নন্দনে দেখানো হবে মিমি চক্রবর্তীর ‘মিনি’, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভিযান’, দেবের ‘কিশমিশ’, এবং নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘বেলাশুরু’। সম্ভবত জিতের ‘রাবণ’-এর জায়গায় আসতে চলেছে উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার ছবিটি। ২৯ এপ্রিল একই দিনে মুক্তি পেয়েছিল দেব এবং জিতের ছবি। সেই সময় দুই তারকার একটাই অনুরোধ ছিল, বাংলা ছবির পাশে দাঁড়াতে হবে। সব ছবি দেখতে হবে। বাংলা ছবিকে প্রেক্ষাগৃহ দিতে হবে। একে অন্যের ছবির হয়েও মুখ খুলেছিলেন। ‘অপরাজিত’-র বেলায় দুই তারকাই নিশ্চুপ! দেব অবশ্য টুইট করে অনীককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বাংলা বিনোদনের পাশে দাঁড়াতে গেলে তো সবার আগে নিরপেক্ষ হওয়া দরকার! সবার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিও সমান হওয়া জরুরি। ‘অপরাজিত’-র ক্ষেত্রে সেটি কি হচ্ছে? অনীক দত্তের সরকারবিরোধী মনোভাবের কথা সবাই জানেন। এটি তারই ফল নয়তো?
আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, মৈনাক ভৌমিকের কাছে। যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গেও। ফোনে অধরা দু’জনেই। অথচ অনীকের ছবি নন্দনে জায়গা না পাওয়ার ঘটনা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল শিবপ্রসাদের কপালে। অন্য সংবাদমাধ্যমকে সে সময় তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, এ বার নিজের ছবি ‘বেলাশুরু’ নিয়েও তাঁর চিন্তা হচ্ছে। নন্দনে ছবিটি শো পাবে তো?
বিষয়টি নিয়ে প্রসেনজিতের মত, ‘‘নন্দন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন।’’ পরমব্রতও যথেষ্ট সহানুভূতিশীল ‘অপরাজিত’-র প্রতি। বলেছেন, ‘‘আইএমডিবি-তে যথেষ্ট ভাল ফল করেছে অনীকদার ছবি। সমস্ত প্রেক্ষাগৃহেও ভাল ফল করছে। পরিচালক, প্রযোজক এবং গোটা দলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমিও আশা করেছিলাম, নন্দনে ‘অপরাজিত’ আসবে।’’ পাশাপাশি এও- জানিয়েছেন, সাধারণত ভাল বাণিজ্য করলে সেই ছবিকে নন্দন থেকে সরানো হয় না। তিনি এটাই জানেন। সেই দিক থেকে তাঁর ‘অভিযান’ ৬-৭ সপ্তাহের পরেও ভাল ব্যবসা করছে। তাই হয়তো সরানো হয়নি। যদিও পরমব্রত তাঁর ছবি নন্দনে টানা প্রদর্শনের জন্য আলাদা করে কোনও অনুরোধও জানাননি।
বিষয়টি চোখে বিঁধেছে মৈনাক ভৌমিকেরও। তাঁর ছবি ‘মিনি’ দেখানো হচ্ছে নন্দনে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার ছবি বরাবরই নন্দনে জায়গা পায়। তবে এ বার আমিও চিন্তিত ছিলাম। কারণ, মাস জুড়ে একগুচ্ছ ছবি মুক্তি পাচ্ছে। আর নন্দনে শো টাইম ১.৪৫ থেকে শুরু।’’ কিন্তু নন্দন ‘মিনি’কে দুপুর ১২টায় একটি শো টাইম দিয়ে দিয়েছে। ‘অপরাজিত’-র জন্যও কি এমন কিছু করা যেত না? যুক্তি মেনে নিয়েছেন মৈনাক। স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘এটা অনীকদার ছবির ক্ষেত্রেও হওয়া উচিত ছিল। বিশেষ করে যাঁকে নিয়ে ছবিটি তৈরি, সেই সত্যজিৎ রায় নন্দনের নাম এবং নামাঙ্কন করে গিয়েছেন।’’
‘চিনি’-র পরিচালকের দাবি, চাইলে তাঁর শো টাইম নিয়ে নিতে পারে ‘অপরাজিত’। তিনি মন থেকে চাইছেন, নন্দনে দেখানো হোক ছবিটি। তার জন্য তিনি জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি। নন্দন কর্তৃপক্ষ চাইলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারেন। ভেবে দেখতে পারেন প্রযোজক ফিরদৌসল হাসানও। পাশাপাশি এ-ও বলেছেন মৈনাক, ‘‘আমার মনে হয় না সেই প্রয়োজন আর আছে। যে হারে ছবির হলের সংখ্যা বাড়ছে তাতে দর্শকেরা আর নন্দনের অপেক্ষায় বসে নেই। অনেক বছর পরে অনীক দত্ত বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটালেন। ‘অপরাজিত রায়’কে রোখে কে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy