এনসিবি অফিসে অনন্যা। ফাইল চিত্র।
আরিয়ান খান নাকি গাঁজা চেয়েছিলেন বাল্যবন্ধু অনন্যা পাণ্ডের কাছে। শাহরুখ খানের জ্যেষ্ঠ পুত্রের হোয়াটসঅ্যাপে দু’জনের তেমনই কথাবার্তা হয়েছিল বলে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরো (এনসিবি)-র একটি সূত্র দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের কাছে। অনন্যা নাকি ওই চ্যাটে আরিয়ানকে বলেছিলেন, তিনি গাঁজার ‘ব্যবস্থা’ করে দেবেন।
সূত্রটির দাবি, এনসিবি অফিসে আজ দ্বিতীয় দিনের জিজ্ঞাসাবাদে অনন্যা দাবি করেছেন, মজা করেই আরিয়ানকে ওই কথা লিখেছিলেন তিনি। আসলে তিনি কখনওই কাউকে কোনও মাদক পৌঁছে দেননি। নিজেও জীবনে কখনও মাদক নেননি। আজ চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে অনন্যা বাড়ি ফিরে গেলেও এনসিবি অফিসারেরা তাঁকে পুরোপুরি ছাড় দিয়েছেন, এমনটা এখনও বলা যাচ্ছে না। কারণ এনসিবি সূত্রই বলছে, দু’জনের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকে সন্দেহ করার অবকাশ রয়েছে যে, ২০১৮-১৯ সাল নাগাদ অনন্যা অন্তত তিন বার আরিয়ানকে মাদক ব্যবসায়ীদের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। এক বার নাকি কোনও এক গেট-টুগেদারে মাদক পৌঁছেও গিয়েছিল আরিয়ানের কাছে। তবে পুরোটাই সূত্রের দাবি। অনন্যাকে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারি ভাবে কেউ কিছু বলেননি। আরিয়ানকে অনন্যা সত্যিই গাঁজার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন কি না, কিংবা তিনি নিজে মাদক নিয়েছিলেন কি না, সে বিষয়ে কোনও অকাট্য প্রমাণ পাওয়ার কথা বলেনি এনসিবি-ও।
চাঙ্কি পাণ্ডের অভিনেত্রী কন্যা অনন্যাকে আজ সকাল ১১টায় তলব করা হলেও বান্দ্রার বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে এনসিবি দফতরে তিনি এসে পৌঁছন দুপুর ২টো ২০ নাগাদ। সংবাদমাধ্যমের ভিড়কে যথাসম্ভব এড়িয়ে ব্যারিকেড ও পুলিশের ঘেরাটোপে এনসিবি দফতরে ঢোকেন তিনি। ২২ বছরের অনন্যার এখনকার মোবাইল, পুরনো মোবাইল হ্যান্ডসেট এবং ল্যাপটপ গত কালই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এনসিবি সূত্রের বক্তব্য, কোনও প্রমাণ ইতিমধ্যেই নষ্ট করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে। বহু বার নাকি মাদকের বিষয়ে চ্যাটে কথা বলেছিলেন দুই বন্ধু। সেই কথোপকথন দেখিয়েই আজ এনসিবি অফিসারেরা অনন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে খবর।
পরে এনসিবি অফিসার অশোক মুথা জৈন এএনআইকে বলেন, ‘‘সোমবার ওঁকে (অনন্যা) আবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ আরিয়ানকে মাদক ব্যবসায়ীদের নম্বর দেওয়া নিয়ে অনন্যা কোনও তথ্য দিয়েছেন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনও এমন কোনও খবর নেই।’’ ঘনিষ্ঠেরা আন্দাজ করছেন, আপাতত এই জিজ্ঞাসাবাদ-পর্ব চলতে পারে। সেই কথা ভেবেই বেশ কিছু দিন শুটিং বন্ধ রাখতে পারেন অনন্যা।
গত কাল কিছু কাগজপত্র আনতে শাহরুখের বাড়ি ‘মন্নত’-এ গিয়েছিল এনসিবি। আজ শাহরুখের দেহরক্ষীকে একটি কাগজ হাতে নিয়ে এনসিবি দফতরে ঢুকতে দেখা যায়। দ্রুতই অবশ্য তিনি সেখান থেকে চলে যান। দিনভর ইন্টারনেটে ঘুরেছে কর্ণ জোহরের টিভি শোয়ে শাহরুখ ও কাজলের একটি পুরনো সাক্ষাৎকারের অংশ। বাচ্চাদের কথা বলতে গিয়ে ওই শোয়ে শাহরুখ বলেছিলেন, ‘‘আমার সবচেয়ে বড় ভয় হল, ওদের জীবনে আমার খ্যাতির প্রভাব। আমি আশা করব, ওরা আমার ছায়া থেকে বেরিয়ে বাঁচবে। আমার খ্যাতি ওদের জীবন নষ্ট করে দিতে পারে। আমি সেটা চাই না।’’ পর্দায় চলছে তিন সন্তানের সঙ্গে শাহরুখ-গৌরীর ছবির কোলাজ। শাহরুখ বলছিলেন, ‘‘নিজের শরীরের একটা অংশ যদি বাইরে হাঁটাচলা করে, তাকেই বলে সন্তান। আজ যদি দুরন্ত গতিতে কোনও গাড়ি আমার ছেলেমেয়ের দিকে ছুটে আসে, আমি তার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ওদের বাঁচাব।’’
বাস্তব হল, ইতিমধ্যেই কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে, প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ারই মাসুল দিচ্ছেন আরিয়ান। তাই বার বার জামিনের আর্জি নাকচ হচ্ছে তাঁর। বম্বে হাই কোর্টে জামিনের আবেদনে আরিয়ান বলেছেন, ‘‘আইনে এমন কোনও অনুমান চলে না, যেখানে বলা হবে যে, শুধু প্রভাবশালী বলেই কেউ তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হয়, যা এ ক্ষেত্রে নেই।’’ শাহরুখ-পুত্রের অভিযোগ, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের অপব্যাখ্যা করে তাঁকে মাদক কাণ্ডে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই মেসেজের সঙ্গে কোনও ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র টানা যায় না। এটা ভুল এবং অযৌক্তিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy