ইন্দ্রাণী হালদার এবং ঊষসী চক্রবর্তী—ফাইল চিত্র।
দু’জনে প্রথম পাশপাশি বসলেন। জুন আর শ্রীময়ী। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পাড়া, কলেজ ক্যান্টিন, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো বাঙালি এখন জুন আর শ্রীময়ীতে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এক গাল হেসে আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন শ্রীময়ী ওরফে ইন্দ্রাণী হালদার, “একটু খেয়াল করে দেখুন, জুন কিন্তু নিজের জায়গায় একদম ঠিক। সে ভালবেসেছে অনিন্দ্যকে। তার পর সে চাইছে স্ত্রী শ্রীময়ীর কাছ থেকে চলে এসে অনিন্দ্য যেন তার সঙ্গে সংসার করে। এতে দোষটা কোথায়?” শ্রীময়ীর ঠিক পাশেই জুন, ‘জুন আন্টি’ বা ‘জুজু’। সাদামাটা হলদে খয়রেটে শাড়িতে। প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে বললেন,“এগজ্যাক্টলি।অনিন্দ্য যদি দু’নৌকায় পা দিয়ে চলতে চায়, সেটা তো হতে দেওয়া যায় না। আমি যাকে ভালবাসি তার সঙ্গে সংসার করতে চেয়েছি। এতে দোষ কোথায়?”
বোঝা গেল, জুন আর শ্রীময়ী দু’জনেই আসলে নারী। মানুষ তাঁদের নিয়ে যতই চুলোচুলি করুন না কেন, মেয়েদের সম্মান এবং স্বীকৃতির ক্ষেত্রকেই তাঁরা বড় করে তুলে ধরতে চাইছেন। শ্রীময়ী যেমন বললেন, “আমি চেয়েছিলাম জুন আর অনিন্দ্যর বিয়ে হোক। আমি পেলাম না, কিন্তু অন্য একটা মেয়ে তো তার সম্মান পাক। হ্যাঁ, আমার বুক ফেটে গিয়েছিল। পাথর চাপা দিয়ে এই কাজে এগিয়ে গিয়েছিলাম।” এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই শ্রীময়ী তাঁর ভক্তদের মনে করিয়ে দিতে চান, যদি কোনও মহিলা জানতে পারেন তাঁর স্বামী অন্য মহিলার প্রেমে পড়েছেন তাঁর মানে তাঁকেও যে শ্রীময়ীর মতো সেই মহিলার সঙ্গে স্বামীর বিয়ে দিয়ে দিতে হবে— এমন একেবারেই নয়। তিনি বললেন, “শ্রীময়ী এখানে পরিস্থিতির শিকার।”
শ্রীময়ী ধারাবাহিকের দুই নারীমুখের এই আড্ডায় বেরিয়ে এল আর এক নারীর নাম। তিনি এই ধারাবাহিকের লেখক লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। শ্রীময়ী বললেন, ‘‘লীনাদি এত চমত্কার ভাবে এই দুই নারীর বাস্তব জায়গাটা ধরেছেন যে এই গল্প মানুষের মজ্জায় ঢুকে গেছে।’’ সম্মতি জানিয়ে যোগ করলেন ঊষসী, ‘‘শুধু সিনেমা নয়, ধারাবাহিকেও কনটেন্ট আসল। লীনাদি সেটা বুঝিয়ে দিচ্ছেন।’’
দেখুন ভিডিও:
চলে আসে নারী দিবসের প্রসঙ্গ। কথা বলে উঠলেন জুন ওরফে ঊষসী। “আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উইমেন স্টাডিজ নিয়ে পড়েছি। সেই জায়গা থেকে একটা কথা বলতে পারি, শ্রীময়ী এবং জুন পিতৃতন্ত্রের শিকার। জুন একধরনের চরিত্র, সেটা আমি করছি মানেই মানুষ ধরে নিচ্ছে ব্যক্তিগত ভাবে আমিও জুন! এটা কেন হবে?”
আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’: অশিক্ষা, কুসংস্কার শুষে নিতে কত ন্যাপকিন লাগবে?
শ্রীময়ীর জীবনে এসে গিয়েছেন রোহিত রায়। কী হতে চলেছে এ বার? প্রশ্নটা আসতেই চট করে কথা বলে উঠলেন ইন্দ্রাণী। “নারী-পুরুষের বন্ধুতাকে সমাজ সোজা চোখে দেখে না। ভাবে ওর মধ্যে নিশ্চয় কোনও গল্প আছে। এটা কেন হবে? দু’জনে দু’জনের ‘সাপোর্ট সিস্টেম’ হয়েও তো থাকতে পারে।”
আড্ডা দিতে দিতেই কখন যেন ‘জুন’ থেকে ঊষসী এবং ‘শ্রীময়ী’ থেকে ইন্দ্রাণী হয়ে উঠলেন তাঁরা। দু’জনের বক্তব্যের মধ্যেই বেরিয়ে এল সমাজে মেয়েদের কাজের মাধ্যমে স্বীকৃতির কথা। পুরনো প্রবাদকে নস্যাৎ করে ওঁরা বলতে চাইলেন, ‘মেয়েরা শুধু দেখার নয়, শোনার।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy