আবির চট্টোপাধ্যায়।
নন ফিকশনে প্রথম সঞ্চালনা, তা-ও আবার সারেগামাপা-র মতো শো। কতটা রিস্ক নিলেন?
রিস্ক তো নিতেই হবে।তবে আমার মনে হচ্ছে এই মাধ্যমে আমি এখন একজন ‘নিউকামার’।বেশ লাগছে! একজন পারফর্মার হিসেবে সারাক্ষণ খুঁজি নতুন কিছু করার। লকডাউনের সময় কথা চলছিল এই কাজের। এ বার সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকে শুট। তবে একটা কথা বলতে চাই, আমি গানের জগতের মানুষ নই, সারেগামাপা-র অসম্ভব ভাল একটা গবেষণা টিম আছে, আমি নিশ্চিত তাদের সাহায্যে দর্শকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাব আমরা।বলতে পারেন, উত্তেজনাও হচ্ছে আবার টেনশনও হচ্ছে।
যিশু সেনগুপ্ত এই শোয়ের তুমুল জনপ্রিয় সঞ্চালক, সেই মাঠে আপনি খেলতে নামছেন, তাই কি টেনশন?
যিশু এই শোতে দুর্দান্ত কাজ করেছে। সারেগামাপা-য় নতুনদের গান শোনা, গান চর্চা, বিচারকদের পরামর্শ ছাড়াও দর্শক মুখিয়ে থাকত যিশু কী বলবে? কী করবে? ও পুরো অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিল। আমি জানি সেটা।
যিশু না আবির? দর্শকের মনের অন্দরে প্রিয় সঞ্চালকের মুকুট কার ভাগ্যে জুটবে?
সেই জন্যই বাড়তি চাপ?
বাড়তি চাপ অন্য ভাবে বলতে পারেন। যিশু এই শো-কে যে জনপ্রিয়তার জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল সেই রেটিং নিশ্চয় আমার মাথায় থাকবে। কিন্তু তার সঙ্গে এটাও জানি, ওর ঘরানায় ও ওর মতো করে কাজ করেছে। আমি আমার মতো করে করব। ভাল-মন্দ দর্শকের হাতে।
আপনারা তো একসঙ্গে অনেক লাইভ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন…
হ্যাঁ, পাশাপাশি কাজ করেছি। যে যার মতো করেছি বা একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করে কাজ করেছি। ওকে হয়তো বলেছি, ‘তোমার এই প্যাটার্নটা আমি নিলাম’।আসলে বহু বছর ধরে ও এই কাজটা করছে। ওকে এরকম সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখতেও আমার ভাল লাগে।
সঞ্চালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর যিশুর সঙ্গে কথা বলেছেন?
হ্যাঁ। যিশু খুব খুশি। ও ওর মতো করে কয়েকটা টিপস দিয়ে দিয়েছে যেটা আমি একেবারে মনোযোগ সহকারে লিখে রেখেছি।
দু’জনেই ব্যোমকেশ করলেন, সঞ্চালনার রাস্তায় দু’জন পর পর!
যিশু আমার আগে কাজ শুরু করেছে। তবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তো খুব ছোট, পাশাপাশি কাজ করেছি বলে যিশু আর আবিরকে নিয়ে অনেকেই লড়িয়ে দিতে চেয়েছেন অনেক সময়। আমি দেখেছি দর্শকরাও তুলনা করেছে, মিডিয়াতে আমাদের তুলনা করে লেখা হয়েছে।তবে এটা কিন্তু স্বাভাবিক ব্যাপার।
সারেগামা কি এই তুলনার কথা মাথায় রেখে যিশুর পরেই আবিরকে আনছে?
এটা আমি জানি না। তবে আমার তা মনে হয় না।
টেলিভিশনে প্রচুর সময় দিতে হয়। ছবির কাজ কী হবে?
দেখুন এখন শুটিং পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে। আমি প্রোমো শুট করতে গিয়েই দেখলাম সকলে নিয়ম মেনে চলেছেন। এখানে সকলের সুস্থতা জড়িয়ে। কাজ করতে করতে বোঝা যাবে কত সময় লাগছে। অনেক দিন পরে আবার ফ্লোরে ফেরা।
আবির বলছেন, তাঁর এই নতুন দায়িত্বে যিশু খুব খুশি
ভয় করছে?
একটা টেনশন ভেতরে কাজ করছেই রোগের জন্য। দিন বারো আগে প্রোমো শুট করেছি আমি। পাঁচ মাস বাদে ক্যামেরা, পোশাক, মেকআপ…অদ্ভুত লাগছিল। অনেক দিন পরে সেটের দাদা, ক্যামেরাম্যান, লাইটের মানুষের সঙ্গে দেখা। সকলের চোখে একটা কাজ শুরুর তৃপ্তি দেখেছি। তবে এখনও সব কিছু ঠিক তো হয়ে যায়নি। তাই সকলেই সাবধান হয়ে কাজ করবেন। একটু ভয় থাকা সেক্ষেত্রে ভাল।
ছবি আর ওয়েব সিরিজ নিয়ে কী ভাবছেন?
এখনই ওয়েব সিরিজ না। ছবির ক্ষেত্রে ‘আগন্তুক’ তো পুরো তৈরি। অন্য দিকে জুনে ‘সুইঠজাল্যান্ড’–এর ডাবিং শেষ। বাকি ছবিগুলো যেখানে থাকার সেখানেই অসম্পূর্ণহয়ে পড়ে আছে। আর এখন তো সিনেমা হলও খুলছে না। খুললেও লোকে আসবে না, বা আসা উচিত হবে কিনা আমরা জানি না।তবে চিত্রনাট্য পড়েছি নতুন। সব যে পছন্দ হয়েছে তাও না। এখন এই অস্থির সময়ে অপেক্ষা করাই ভাল।
এই অস্থির সময়ে আপনি কি অবসাদে ভুগছিলেন?
দেখুন ‘অবসাদ’ কথাটা অনেক বড়। যাঁরা এর মধ্যে দিয়ে যান তাঁরাই জানেন এর ক্ষয়ক্ষতি। কতখানি লড়াই করতে হয় তাঁদের।যখন তখন ব্যবহার করা একদম ঠিক নয়। আমি এই প্রসঙ্গে শুধু বলতে চাই, অতিমারি, আমফান, গৃহবন্দি দশা আমাদের সকলকে অস্থির করে তুলেছে। চারদিকে প্রচুর মানুষ অসুস্থ হচ্ছে এখন দেখছি। প্রত্যেকে চিন্তায় আছে, এটাই বলতে চাইছি আমি। মানুষ জীবিকা হারাচ্ছে। করোনার ক্ষেত্রে এখন বলব সচেতনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। আমরা বুঝেছি করোনা ম্যাজিকের মতো চলে যাবে না। সঙ্গে থাকবে। এটা বুঝেও কি আমরা দারুণ খুশি? তা তো নয়। লকডাউনে বাড়িতে বসে একটানা কাজ করতে করতেও তো লোকে রেগে যাচ্ছে, বিরক্ত হচ্ছে—আমি এগুলোই বলতে চাইছি। এর মধ্যে যদি মানুষকে সুরের জগতে নিয়ে যেতে পারি সেটাই পাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy