Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Naseeruddin Shah

Naseeruddin Shah-Amrita Chattopadhyay: বোলপুরের কাঠফাটা গরমেও শুধু আমায় সাহায্য করতে চেয়ে বাইরে বসেছিলেন নাসিরজি: অমৃতা

এক দিকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অন্য দিকে নাসিরুদ্দিন শাহ। দুই কিংবদন্তি অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অমৃতা চট্টোপাধ্যায়।

নাসিরুদ্দিন শাহ্‌  এবং অমৃতা চট্টোপাধ্যায়।

নাসিরুদ্দিন শাহ্‌ এবং অমৃতা চট্টোপাধ্যায়।

অমৃতা চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২২ ১৪:০০
Share: Save:

দেখতে দেখতে তিন-চারটে বছর কেটে গেল। সালটা ২০১৮। হঠাৎই শৈবালদার (মিত্র) ফোন। একটি ছবিতে মুখ্য চরিত্রে চাইছেন আমাকে। সহ-অভিনেতা? নাসিরুদ্দিন শাহ্‌ এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়! প্রথমে নিজের কানকেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। সম্বিত ফিরতে লাফিয়ে উঠেছিলাম!

অবশেষে এল শ্যুটিং শুরুর দিন। ২০১৯-এর এপ্রিল বা মে। আমাদের জীবনে তখনও করোনা আসেনি। নাসিরজি এবং সৌমিত্রবাবু চুটিয়ে কাজ করছেন। আমার সঙ্গে সৌমিত্রবাবুর আগে থেকেই আলাপ ছিল। তবে সেই প্রথম সামনে থেকে নাসিরজিকে দেখলাম। কোর্টরুমের একটা দৃশ্যে শট দেওয়ার আগে আমাদের সবাইকে ডাকা হল। ওঁদের সঙ্গে আলাপ করার জন্য। দু’জনেই একদম তৈরি হয়ে বসে। আলাপ পর্ব মিটে শ্যুটিং শুরু হয়ে গেল ঝটপট।

সংক্ষিপ্ত সেই আলাপ পর্বের পর থেকে নাসিরজি কিন্তু আমাকে অমৃতা বলেই ডাকছিলেন। শুধু আমাকে নয়, প্রত্যেককে তাঁর নাম ধরে সম্বোধন। আমি হতবাক। মাত্র ১৫ মিনিটের আলাপে সকলের নাম কী করে মনে থাকতে পারে এক জন মানুষের! তা-ও আবার অত বড় মাপের এক জন অভিনেতার!

প্রথম দৃশ্য শ্যুটের পরে ভয়টা একটু কেটে গেল। অনেকেই বলেন ওঁরা নাকি খুব মেজাজি। আমার ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা হয়নি। বরং বেশ স্নেহশীল ছিলেন দু’জনেই। প্রচুর প্রশ্ন করতাম। ধৈর্য ধরে উত্তরও দিতেন। এত দিনের অভিজ্ঞতা ওঁদের। সামনের মানুষটাকে বোধহয় সহজেই পড়ে নেওয়া যায় তাতে।

শটের পর শট দিচ্ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এ দিকে, তখন এত অসুস্থ! পাশে নার্স দাঁড়িয়ে ওষুধ দিচ্ছেন। তা খেয়েই আবার তিনি পরের শটের জন্য তৈরি। এত বড় এক জন অভিনেতার এই বয়সেও এতখানি নিষ্ঠা— দেখছিলাম আর প্রাণভরে শিখছিলাম সবটা।

ওই শ্যুটিংয়েই আমার পাওনা হয়েছে আরও একটা মুহূর্ত, যা হয়তো আজীবনের সম্পদ। ভরা গ্রীষ্ম। বোলপুরে তখন সত্যিই যাকে বলে চাঁদিফাটা রোদ। তার মধ্যে আমার আর নাসিরজির শ্যুট চলছে ভরদুপুরে। নাসিরজির সব শট নিয়ে পরিচালক ওঁকে বললেন, ‘‘আপনি এ বার বিশ্রাম নিন।’’ তখনও আমার শট বাকি। নাসিরজি সটান বললেন, ‘‘আমি কী করে বিশ্রাম নেব, আমাকে কিউ দিতে হবে তো!’’ ওঁকে বার বার বলার পরেও ওই কাঠফাটা গরমে বসে আমাকে কিউ দিলেন। শট শেষ হল। আবারও শিখলাম পেশাদারিত্ব কাকে বলে। অভিনয়ের প্রতি ভালবাসা কাকে বলে। ‘আ হোলি কন্সপিরেসি’-র সেটে এই দুটো জিনিসই শিখেছি সৌমিত্রবাবু এবং নাসিরজির থেকে। সারা জীবন তা-ই আমার পাথেয় হয়ে রইল।

অন্য বিষয়গুলি:

Naseeruddin Shah Amrita Chattopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy