Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Soujanyo

Ambarish Bhattacharya: কালিম্পঙে যেমন কাঞ্চনজঙ্ঘা তেমনই সৌজন্য-গুনগুন, চোখ ফেরাতে পারছিলাম না

যেই খবর এল, কেউ বাদ যাবেন না আউটডোর শ্যুট থেকে, সবার মুখ ঝলমলে!

তৃণা এবং কৌশিকের সঙ্গে অম্বরীশ

তৃণা এবং কৌশিকের সঙ্গে অম্বরীশ

অম্বরীশ ভট্টাচার্য
অম্বরীশ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:৫৯
Share: Save:

অনেক দিন ধরেই ধারাবাহিক ‘খড়কুটো’-র দল পরিকল্পনা করছিলেন, আমাদের আউটডোর শ্যুট হবে। ‘খড়কুটো’পরিবারের সকলে যেন সেই আউটডোরে যেতে পারে এই ভাবনাটা মাথায় ঘুরছিল। এর আগেও আমাদের একটা ছোট আউটডোর শ্যুটিং হয়েছিল। সেটা বোলপুর, শান্তিনিকেতনে। বছর খানেক আগে। সেখানে আমরা হাতেগোনা কয়েক জন গিয়েছিলাম। এ বারে যেই খবর এল, কেউ বাদ যাবেন না আউটডোর শ্যুট থেকে, সবার মুখ ঝলমলে! দলে আলোচনা শুরু, পাহাড় না সমুদ্র?

যাঁরা নিয়মিত ‘খড়কুটো’ দেখেন তাঁরা জানেন, একটা বড় সমস্যা পেরিয়ে এসেছে সৌজন্য-গুনগুন। সেই সমস্যার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের সবাই। সবার একটু হাল্কা হওয়া দরকার। তাই আউটডোর শ্যুট। সবার মন উড়ু উড়ু। কথা বেশি কাজ কম দশা! রোজ বৈঠক বসছে আমাদের। সমুদ্রে গেলে কী করা হবে। আর পাহাড় হলেই বা কী করে উপভোগ করব। বাইরে যাওয়া মানেই তো দেদার খাওয়া দাওয়া!

অবশেষে জানা গেল, আমরা পাহাড়ে যাচ্ছি। সবার ফূর্তি দেখে কে? শ্যুটের ফাঁকে, ছুটির দিনে সবাই হইহই করে নতুন নতুন গরম জামা কিনতে শুরু করলেন! সবার বাড়িতেই যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে, তবুও। আর বাইরে যাওয়া নিয়ে কত পরিকল্পনা! একটা আউডডোর শ্যুটকে কেন্দ্র করে ‘খড়কুটো’র প্রতিটি মানুষ উত্তেজনায়, আনন্দে যেন টগবগিয়ে ফুটছেন!

‘সারা দিনের ওই পরিশ্রমের পরেও আমাদের প্রাণে কী ফূর্তি!’

‘সারা দিনের ওই পরিশ্রমের পরেও আমাদের প্রাণে কী ফূর্তি!’

নির্দিষ্ট দিনে আমরা বিমানে, কলাকুশলীরা ট্রেনে চাপলেন। পৌঁছলাম বাগডোগরা বিমানবন্দরে। বাইরে পা রাখতেই দেখি, হাতছানি দিয়ে ডাকছে কালিম্পং। দূরে মেঘের গায়ে হেলান দিয়ে পাহাড়ের চূড়া। যেহেতু পাহাড়ি অঞ্চলে আলো তাড়াতাড়ি কমে যায়, তাই আমাদের ভোর শুরু হত পাঁচটায়! রূপটান নিয়ে ছ’টা থেকে শ্যুট শুরু। একেক সময়ে শ্যুটের প্রয়োজনে কালিম্পং ছাড়িয়ে সবাই চলে যেতাম আরও দূরে। এ ভাবেই কাজের ফাঁকে আমরা দেখে ফেলেছি ডেলো, শিটং। সারা দিনের ওই পরিশ্রমের পরেও আমাদের প্রাণে কী ফূর্তি! কাজ থেকে ফিরে বিশ্রাম না নিয়েই পার্টি শুরু! শুধু ছোটরা যে পার্টি করেছে তা নয়। দুলাল লাহিড়ি, চন্দন সেনও হুল্লোড়ে মাততেন। বয়স অনুযায়ী দল ভাগ হয়ে যেত। তার পর এক একটি ঘরে দেদার খানাপিনা, গানা-বাজানা। আমি দুই প্রজন্মের সেতু। তাই দুই দলের পার্টিতেই আমি আছি!

আরও একটা জিনিস করতাম সবাই। বলুন তো কী? থলি ভর্তি করে বাজার করতাম! শ্যুট সেরে ফেরার পথে কালিম্পং বাজারে নেমে যেতেন কয়েক জন। সেখানে কেউ থলে ভরে শৈল শহরের স্পেশাল লাল লাল লঙ্কা কিনছেন। কেউ অন্য কিছু। কলকাতার শীতে আমার গরম জামা লাগে না। কালিম্পঙেও ভেবেছিলাম সেটাই হবে! কিন্তু এখানে পা দিয়ে উত্তুরে হাওয়ার কামড় খেয়েই মালুম হল, একটা মাফলার অতি অবশ্য জরুরি। সেই ইচ্ছের কথা প্রকাশ করতেই জাদু! পরের দিন শ্যুটে যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে সোহিনী সেনগুপ্ত মানে আমার দিদি ‘পুটু’ একটা মাফলার কিনে এনে উপহার দিল! কী যে ভাল লাগল। ওই মাফলার আপনারা ধারাবাহিকে দেখতে পাবেন। তার পর খেয়াল পড়ল, এক জোড়া উলের মোজাও লাগবে। এ বার সেটা কিনে দিল রাজা গোস্বামী ওরফে ‘রূপাঞ্জন’। আমি খুব খুশি। বেড়ানোও হচ্ছে আবার একের পর এক উপহারও পাচ্ছি।

কাজ ফুরিয়ে গেলে হোটেল ছাড়াও আমাদের আড্ডাখানা ছিল গম্পুজ ফুড জয়েন্ট। এখানে নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায়। চারপাশ কী সুন্দর।

আমি এর আগেও অনেক বার পাহাড়ে এসেছি। কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘাকে এখানকার মতো এত ভাল করে আর কোথাও দেখতে পাইনি। সে সব ছবি আমরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছি। ‘গুনগুন অ্যান্ড কোং’ মনের সুখে রিল ভিডিয়ো বানিয়েছে। আমিও অবশ্য দূরে থাকতে পারিনি। একটা রিল ভিডিয়োয় আমিও ওদের সঙ্গে! অবাক ঘটনা, যে কৌশিক রায় ওরফে ‘সৌজন্য’ এ সব থেকে শত হাত দূরে সেও দেখি দিব্যি মজেছে।

এত কিছু পেয়েও একটি কাজ আমরা ঠিকমতো করতে পারিনি। সেটা কী? চারি দিকে এত ভাল ভাল খাবারের আয়োজন, আর আমরা পেট ভরে এক দিনও খেতে পারিনি! হবে কী করে? অন্ধকার আর বৃষ্টির ভয়ে নাকেমুখে জলখাবার গুঁজেই সবাই হাজির স্পটে। অবসরে স্যান্ডউইচ বা এটা-সেটা খেয়েই চালাতে হত। রাতে পার্টিতে অবশ্য সব কিছুর ঢালাও আয়োজন। যে যে ভাবে পেরেছি, মন খুলে সেজেছি। ধারাবাহিকে সৌজন্য-গুনগুনকে এক বার শুধু দেখবেন। চোখ ফেরাতে পারবেন না। দুলালদা ব্রিটিশদের সাজে ‘হাফ সাহেব’! দেখলাম, উত্তরবঙ্গেও ‘খড়কুটো’ হিট! আমাদের দেখে সেলফি তোলার কী ধুম। বিভিন্ন জায়গায় শ্যুট করতে গিয়ে বেশ সমস্যাও তৈরি হয়েছে এই কারণে। সবার ভালবাসায়, আবেগে শ্যুট বন্ধের জোগাড়। অন্য ট্যুরিস্ট স্পট থেকেও লোকেরা খবর পেয়ে চলে এসেছেন আমাদের স্পটে। আমাদের দেখবেন, আলাপ করে ছবি তুলবেন বলে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy