ঐন্দ্রিলা শর্মা।
সাল ২০১৫। বয়স মাত্র ১৬ কি ১৭! ঐন্দ্রিলা শর্মা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে। তার পর? মুখে হাসি, চোখে জল নিয়ে প্রথম বারের মতো ক্যানসারমুক্ত অভিনেত্রী তার বর্ণনা দিয়েছিলেন ২০১৮-র ‘দিদি নং ১’-এর মঞ্চে। অকপটে জানিয়েছিলেন, কেমো নেওয়ার পরে মাথার সব চুল পড়ে গিয়েছিল। বিকৃত হয়ে গিয়েছিল চোখ-মুখও। সেই অবস্থায় এক রাতে শৌচাগারে গিয়েছেন তিনি। কেমোর জন্য মুখে জ্বালা করছিল খুব। আরাম পেতে জলের ঝাপটা দেওয়ার পরে আয়নায় নিজেকে দেখে ভয়ে শিউরে উঠেছিলেন নিজেই। ‘জিয়ন কাঠি’ ধারাবাহিকের নায়িকার কথা শুনে মনখারাপ সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সে দিন সেটে উপস্থিত ছিলেন রোশনি ভট্টাচার্য, দিয়া মুখোপাধ্যায়-সহ ছোট পর্দার একাধিক জনপ্রিয় মুখ। বাকি সহ-অভিনেতা তথা প্রতিযোগীদের সামনেই সে দিন তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমিই যদি নিজেকে এত ভয় পাই, তা হলে বাইরের লোকেদের কী অবস্থা হয়েছিল?’’
ছোট থেকেই ঐন্দ্রিলার শখ, অভিনেত্রী হবেন। বাবা, দিদি পেশায় চিকিৎসক। মা সেবিকা। পরিবার তাই চেয়েছিল, ছোট মেয়েও চিকিৎসাবিদ্যার সঙ্গেই যুক্ত থাকুন। তবে তাঁর শখের কথা জানার পর কেউ তাঁকে বাধা দেননি। অভিনেত্রী জানান, আপাতদৃষ্টিতে তিনি সুস্থই ছিলেন। খেলা, শরীরচর্চা, গানবাজনা, নাচ করতেন। শুধু দ্রুত হাঁপিয়ে যাওয়া আর মাথা ঘোরা ছাড়া আর কোনও সমস্যা ছিল না তাঁর। আচমকাই পেটে একটি বড় টিউমার ধরা পড়ে। যা দ্রুত বাড়তে থাকে। নানা পরীক্ষার পর দিল্লিতে এক বেসরকারি হাসপাতালে মা-বাবা-সহ অন্যান্য চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর। ৩০টিরও বেশি রেডিয়েশন নিতে হয়েছিল তাঁকে। ঐন্দ্রিলার ভাষায়, ‘‘ক্যানসারের চিকিৎসা ভীষণ কষ্টকর। সেই সময় মা-বাবা মনের জোর বাড়াতে আমায় বলেছিলেন, সাময়িক খুবই কষ্ট হবে। তার পর সব ঠিক হয়ে যাবে।’’ ২০১৬-র জুলাই পর্যন্ত টানা চিকিৎসায় থাকার পর মারণরোগকে হারিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। ছ’মাস বিশ্রাম নেওয়ার পরে প্রথম পা রাখেন তাঁর স্বপ্ননগরী টলিউডে। যিশু সেনগুপ্ত প্রযোজিত ধারাবাহিক দিয়ে অভিনয় দুনিয়ায় ঐন্দ্রিলার পথচলা শুরু।
২০২০-তে দ্বিতীয় বার ক্যানসারে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। এ বার মারণ রোগ থাবা বসিয়েছে তাঁর ফুসফুসে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে প্রথমে টানা চিকিৎসা। তার পর সফল অস্ত্রোপচার। এখন কেমোথেরাপি চলছে ঐন্দ্রিলার। প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী (ছোট পর্দার সাধক বামাখ্যাপা) বলেছেন, ‘‘কিছু কিছু দিন বড়ই কষ্ট পায়। মাঝে মধ্যেই রক্তচাপ অস্বাভাবিক ভাবে কমে যায়। বিছানা থেকে মাথা তুলতে পারে না। রক্তের মধ্যেও বিস্তর গোলযোগ দেখা যায়।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন ‘‘ব্রহ্মতালু থেকে শুরু করে পায়ের পাতা পর্যন্ত মারাত্মক যন্ত্রণা হতে থাকে। মুঠো মুঠো ব্যথার ওষুধেও যা কমতে চায় না। হাত-পা টিপে দিলে বা গরম সেঁক দিলে সাময়িক আরাম পায় ঠিকই, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। কড়া মাত্রার ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কোনও মতে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয় ঐন্দ্রিলাকে।’’
তার মধ্যেই যখন একটু ভাল থাকেন তখন পছন্দের মোমো খান অভিনেত্রী। শুয়ে শুয়ে নানা ধরনের ছবি দেখেন। শরীর একটু ভাল থাকলে বিরিয়ানি খাওয়ারও বায়না করেন ঐন্দ্রিলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy