কী বলছেন টেলিপাড়ার অভিনেতারা?
টেলিপাড়ায় কি ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ চালু হওয়া উচিত? নাকি লকডাউন ওঠার পর শ্যুট শুরু হবে? এই নিয়ে দ্বন্দ্বে আর্টিস্ট ফোরাম-ফেডারেশন। প্রথম পক্ষের প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মেনে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু হলে ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ হবে না কেন? দ্বিতীয় পক্ষের দাবি, বাড়ি থেকে শ্যুটিং হলে উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে রূপসজ্জা শিল্পী, খাবার সরবরাহকারী, জুনিয়র শিল্পী সহ বহু কলাকুশলীর। এখানেই ফেডারেশনের আপত্তি।
কী বলছেন টেলিপাড়ার অভিনেতারা? তাঁরা কোন পক্ষে?
বিষয়টি নিয়ে দোলাচলে ভুগছেন ‘শ্রীময়ী’-র ‘ডিঙ্কা’ ওরফে সপ্তর্ষি মৌলিক। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘২ সংগঠনের কোনও যুক্তিই ফেলে দেওয়ার নয়। জীবন-জীবিকার কথা ভাবলে ফোরামের মত সঠিক। আবার বাড়ি থেকে শ্যুটিং চললে সত্যিই কলাকুশলীরা বঞ্চিত হবেন। কারণ, তখন অভিনেতারা নিজেরাই প্রায় সব কিছু করে নেবেন।’’ পাশাপাশি চুপচাপ বসে থাকাটাও তাঁর মতে যুক্তিযুক্ত নয়। দর্শক বিনোদনের দিকটিও অস্বীকার করেননি তিনি। তাই সব দিক থেকে বিবেচনা করে সপ্তর্ষির দাবি, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ছোট ছোট ইউনিটে ভাগ করে ফেডারশেন আপাতত শ্যুটিংয়ের অনুমতি দিলে আখেরে সবার লাভ।
একই কথা বললেন ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ‘পটকা’ অম্বরীশ ভট্টাচার্যও। ‘‘ফেডারেশন এবং ফোরাম, উভয়েই আমাদের অভিভাবক। টেকনিশিয়ানরা ফেডারশনের অন্তর্ভুক্ত। ফোরাম অভিনেতাদের মাথায় ছাতা ধরে আছে। পরিবারে মা-বাবার মধ্যে মতবিরোধ হলে সন্তানদের যেমন অবস্থা হয়, আমাদেরও এখন সেই দশা,’’ দাবি অভিনেতার। যদিও অম্বরীশের কথায়, ২ সংগঠনের এই মতবিরোধ সাময়িক। তিনি আশাবাদী, খুব শিগগিরিই এই বিরোধ মিটে যাবে। আগের মতোই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সঙ্গে লড়বে ফোরাম-ফেডারেশন। তত দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করাই শ্রেয়, মত তাঁর। অভিনেতার যুক্তি, কলাকুশলী এবং অভিনেতা একে অন্যের পরিপূরক। এর কোনও এক পক্ষকে বাদ দিয়ে তাই দীর্ঘদিন পথ চলা অসম্ভব।
‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের প্রধান আকর্ষণ ‘শ্যামা’ ওরফে তিয়াসা রায়। আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানালেন, ইতিমধ্যেই তিনি বাড়ি থেকে শ্যুটিংয়ে শামিল। ফোরাম সোমবার অভিনেতাদের সেই পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়েছে। যদিও ফেডারেশন আগের সিদ্ধান্তে অনড়। তিয়াসা কোন পক্ষে? শ্যুটিং করতে করতেই অভিনেত্রী জানালেন, বিনোদন দুনিয়ার প্রধান ২ স্তম্ভ ফোরাম এবং ফেডারেশন। তাই তাদের মুখের উপর কথা বলার ক্ষমতা তিনি অন্তত রাখেন না। তাঁর মতে, ২ সংগঠন যা রায় দেবে সেটাই তিনি মেনে নেবেন।
ওই ধারাবাহিকের আরেক জনপ্রিয় চরিত্র বিভান ঘোষ কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাঁর দাবি, ‘‘গত বছর আমার প্রথম করোনা হয়েছিল। আমিই প্রথম ‘বাড়ি থেকে শ্যুট’ নিয়মের পরামর্শ দিয়েছিলাম। এ বছরেও গত বছরের ছায়া। এবং মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং যেখানে বাড়ি থেকে কাজের পক্ষে, তা হলে আমরাই বা বাদ যাই কেন?’’ একই সঙ্গে অভিনেতার মত, এতে দর্শকসংখ্যা কমবে না। ইন্ডাস্ট্রি থেমে যাবে না। উপার্জন হবে। প্রত্যেকেই উপকৃত হবেন। তা হলে রূপসজ্জা শিল্পী, খাবার সরবরাহকারী, জুনিয়র শিল্পী সহ বাকি কলাকুশলীদের কী হবে? বিভানের যুক্তি, গত বছর এঁদের পাশে ২ সংগঠন, প্রযোজকেরা ছিলেন। আশা, এ বছরেও তার ব্যতিক্রম হবে না। বরং লকডাউন ওঠার আগে কয়েকটি দিন ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ চললে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy