শার্লি মোদক।
হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি বলছে, স্নিগ্ধ ছিলেন। লাস্যময়ী হয়েছেন! চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তি। ৩৬৫ দিন কর্মহীন! সময় কাটাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘নজরবন্দি’ করেছেন টলি পাড়ার বহু জনকে। কোনও গোপন খবর নজরে এসেছে? ‘লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার’ ধারাবাহিকে দ্বিতীয় প্রধান নারী চরিত্র ঝুলিতে পুরেই শার্লি মোদক ফের অকপট আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে।
প্রশ্ন: এক বছর কোনও সাংবাদিক, সংবাদমাধ্যম আপনাকে বিরক্ত করেনি....
শার্লি: (অল্প হেসে) হ্যাঁ, কাজ ছিল না। কারও সঙ্গে কোনও কথাও ছিল না।
প্রশ্ন: দিনগুলো কী ভাবে কাটিয়েছেন?
শার্লি: চার দেওয়ালে বন্দি থেকেছি। নিজের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। যা এত দিন করে উঠতে পারিনি। এবং সেটা করতে গিয়ে দেখলাম, অনেকটা সময় নিজেকে নিয়েই কেটে গেল। শরীরচর্চা করেছি। বাড়তি মেদ ঝরিয়েছি। চেহারা, সাজ বদলেছি। নিজেকে যেন নতুন লাগছে।
প্রশ্ন: বহু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত, কাজ না থাকায় আপনি অবসাদে ভুগেছেন...
শার্লি: সেটাই তো স্বাভাবিক! টানা কাজ করতে করতে হঠাৎ বসে গিয়েছিলাম। তার মানে এটাও নয় যে সারা ক্ষণ অবসাদেই ডুবে থাকতাম। অবসাদ ঘিরে ধরত। মন খারাপ করত খুব। সে সব কাটিয়ে আমি আবার উঠেও দাঁড়াতাম। ভাল থাকার চেষ্টা করতাম। কিছু সময় ভাল থাকতামও। ফের হয়তো অবসন্ন হয়ে পড়তাম। চেষ্টা করতাম নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকার। প্রেমিকের সঙ্গে অনেক ক্ষণ করে সময় কাটাতাম। পরিবারের সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দিয়েছি। শ্যুটের সময় বাড়ির লোকের মুখের দিকে তাকানোর পর্যন্ত সময় পেতাম না। এ ছাড়া, রান্নাবান্না, ঘর গুছনো আমার শখ। সেগুলোও করেছি। চুপচাপ বসে না থাকারই চেষ্টা করতাম।
প্রশ্ন: আর হা-পিত্যেশ অপেক্ষা?
শার্লি: আমি ডাক পাইনি এমন কিন্তু নয়। একটি চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলাম। ফলে, ডাক পেলেও কাজ করতে পারিনি। কিছু কাজ আমারও পছন্দ হয়নি। যদিও চ্যানেল থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট দিনে আমার পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছিল, নতুন ধারাবাহিক এলে ডাকা হবে। কিন্তু যাই হোক, হয়ে ওঠেনি সে সব। ফলে, অপেক্ষা করতেই হয়েছে। চুক্তি ফুরোতেই জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘লক্ষ্মী কাকিমা সুপারহিট’-এ ডাক পেলাম।
প্রশ্ন: কোনও কাজ না করে আক্ষরিক অর্থে বসে বসেই টাকা পেলেন। খারাপ লাগত না?
শার্লি: এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেব না।
প্রশ্ন: অথচ ওই চ্যানেলেই একাধিক নতুন ধারাবাহিক! নিজেকে অযোগ্য মনে হত?
শার্লি: না সেটা মনে হয়নি। কারণ, সব ধারাবাহিকেই আমি সুযোগ পাব এমন তো কথা নেই। হয়তো যে চরিত্রগুলো এসেছে, সেগুলোয় আমায় মানাত না। তাই ডাক পাইনি। তার মানেই আমি অযোগ্য, এমন কেন ভাবব? নিজের যোগ্যতা নিয়ে কোনও দিনই দ্বন্দ্বে ভুগি না।
প্রশ্ন: ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’ ধারাবাহিক বন্ধ হওয়ার কিছু দিন পরেই আপনার সহ-অভিনেতা রাহুল মজুমদার ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’-র নায়ক ‘বিহান’। প্রথম দিন থেকেই জনপ্রিয়। হিংসে বা হীনমন্যতা?
শার্লি: (হেসে ফেলে) না, সেটাও হয়নি। কারণ, নিজের পেশাকে খুব ভাল করেই চিনি। টানা কাজ পেয়ে যাব এমন কোনও কথা নেই। সব ধারাবাহিকে আমি থাকব, তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই। এগুলো মেনে নিতেই হবে। কেউ আগে কাজ পাবেন, কেউ পরে। রাহুল দ্রুত নতুন কাজের সুযোগ পেয়েছে, করছে। ভাল তো!
প্রশ্ন: যে ধারাবাহিকে দেবশঙ্কর হালদার, অপরাজিতা আঢ্য, ভরত কলের মতো অভিনেতা রয়েছেন, সেখানে আপনি নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন?
শার্লি: আমি কিন্তু যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রেই অভিনয় করছি। দ্বিতীয় প্রধান নারী চরিত্র বলতে পারেন। অপাদির জীবনে নানা সমস্যা। সেগুলো আমি মেটাব। ফলে, একে বারে ছোট চরিত্রে বা কম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছি, তা নয়। দুই নারীর গল্প সমান্তরাল ভাবে চলবে।
প্রশ্ন: এক বছর পরে ফের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে ভয়ে হাত-পা কাঁপেনি? সংলাপ, অভিনয় ভুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়নি?
শার্লি: এটা হয়েছিল। রোজ অভিনয় করা এক ধরনের প্রশিক্ষণের মতো। ছেদ পড়লে তাতে জড়তা আসে। প্রচার ঝলক শ্যুটের সময় তাই নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, ঠিক ব্যাটে-বলে হচ্ছে না। কাজ করতে করতে আবার সব স্বাভাবিক।
প্রশ্ন: দেবশঙ্কর-অপরাজিতার বিপরীতে অভিনয়ের ভয় আছে, না সেটাও কাটিয়ে উঠেছেন?
শার্লি: ওরে বাবা! না না, সেই ভয় প্রচণ্ড আছে। প্রথম দিন ওঁদের নাম শুনেই যথেষ্ট নড়ে গিয়েছিলাম। দেবশঙ্করদা, ভরতদা, অপাদি ১০০ শতাংশ নিখুঁত। সেখানে আমার কী যোগ্যতা? যদিও ওঁদের সঙ্গে এখনও পর্দা বা ক্যামেরা ভাগ করিনি। তবে ওঁদের অভিনয় কাছ থেকে দেখাটাও এক ধরনের প্রশিক্ষণ। কত খুঁটিনাটি শিখতে পারছি। তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ প্রযোজক সুশান্ত দাসকে। আর আমার মতে ভয় থাকা ভাল। ভয় থাকলে ভাল কাজের তাড়না থাকবে। আমিও তখন সেরাটা দিতে পারব।
প্রশ্ন: এক বছর ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরে, বাইরে থেকে কেমন দেখতে টলিউড?
শার্লি: (হেসে ফেলে) খুব সুন্দর। নেতিবাচক অর্থে বলছি না কিন্তু! (জোরে হাসি) আগে যখন দিনরাত শ্যুট করতাম, তখন চোখ তুলে কোনও দিকে তাকানোর সুযোগই পেতাম না। নজরেও আসত না অনেক কিছু। নিজের কাজের জায়গার দিকেও নয়। এক বছরে সেটা খেয়াল করেছি খুঁটিয়ে।
প্রশ্ন: সময় কাটাতে পরনিন্দা পরচর্চা করেছেন?
শার্লি: আমার সেটাও হয়নি। কারণ, আমার পরিবার বা প্রেমিক এ সব একেবারেই পছন্দ করেন না। তার বদলে আমি সবার উপরে ভীষণ নজরদারি চালিয়েছি। প্রযুক্তির ভাষায় যাকে ‘স্টক’ করা বলে! অনেক খবরাখবর জানতে পেরেছি সেই সূত্রে। নেটমাধ্যমে আমাদের প্রোফাইল বা পেজগুলো যে ভাবে তৈরি, তাতে আমরা নিজের পেশার লোকেদের দেখতে পাই বেশি। অনেকের অনেক কিছু চোখে পড়েছে।
প্রশ্ন: কবীর সুমনকে ‘স্টক’ করলেন নাকি! শিল্পী আর ব্যক্তি সুমনের ফারাক বুঝলেন?
শার্লি: ওরে বাবা! না না। ওঁকে ‘স্টক’ করিনি (হাসি)।
প্রশ্ন: অবসরে অনেকেই বিয়ে করেছেন। আপনি ভাবেননি তেমন কিছু?
শার্লি: মাত্র দু’বছরের পেশা জীবন। আগে আরও কাজ করি! তার পর বিয়ে। এ সব দিকে আমার কোনও ভাবালুতা নেই। বিয়ে নিয়ে কোনও তাড়াহুড়োও নেই।
প্রশ্ন: এত দিন একটানা প্রেমিকের সঙ্গে। প্রেম ভাঙার পরিস্থিতি হয়নি তো?
শার্লি: আমার উল্টোটাই হয়েছে। মানসিক দিক থেকে ওর উপস্থিতি আমায় আরও শক্ত করেছে। এটা খুব দরকার ছিল। আমি যখন অবসন্ন হয়ে যেতাম, ও আগলাত। ভাল ভাল কথা বলে মনের জোর বাড়াত। ফলে, গত এক বছরে আমাদের সম্পর্ক আরও পোক্ত হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy