অভিনয় জীবন নিয়ে অনর্গল অদিতি চট্টোপাধ্যায়
ধারাবাহিক ‘এক আকাশের নীচে’ ‘নন্দিনী’কে মনে আছে? শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অদিতি চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ কম আছেন। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘দহন’-এও অভিনয় করেছিলেন। জনপ্রিয়তার মধ্যগগনেই হঠাৎ উধাও। ২৫ বছর পরে তিনিই বড় পর্দায়, জিৎ চক্রবর্তীর ‘কথামৃত’ ছবিতে। এখানেও কি অদিতি ছোট পর্দার মতোই মায়ের ভূমিকায়?
প্রশ্ন: ‘এক আকাশের নীচে’র ‘নন্দিনী’ আজও বহু দর্শকের নস্টালজিয়া...
অদিতি: হ্যাঁ, আজও বহু দর্শক, অনুরাগী সে কথা জানান। শুনে ভাল লাগে। ওই ধারাবাহিকটি প্রচণ্ড জনপ্রিয়তাও দিয়েছিল আমায়।
প্রশ্ন: সেই ‘নন্দিনী’ অদিতি চট্টোপাধ্যায় এখন নায়কের মা! অনুরাগীরা কিন্তু দেখে দুঃখ পান...
অদিতি: মেনে নিয়েছি। এটাই এখন ধারা। বলিউডে দেখুন, মা-ছেলে প্রায় একবয়সী। আজ নয়, অনেক দিন ধরেই এই ধারা চলছে। আমার থেকে যারা বয়সে ছোট তারাও মেনে নিয়েছে এই বদল। তারা বা আমার সমসাময়িকদের তাই মায়ের চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। ‘নন্দিনী’ও তা-ই (হাসি)।
প্রশ্ন: যেন অনেকটা নিজের অস্তিত্ত্ব রক্ষার মতো ব্যাপার?
অদিতি: ঠিক তা বলব না। একটা বয়সের পরে সেটা মেনে নিতেও হয়। এখন আর আমাকে কে মূল চরিত্র দেবে? যদি গল্প অন্য ধরনের হয় সেখানে হয়তো আমায় বাছা হলেও হতে পারে। সে রকম ধারাবাহিক তো হাতেগোনা।
প্রশ্ন: রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু কোনও পর্দাতেই ‘মা’ নন! সঞ্চালনা করে তুমুল জনপ্রিয়, অদিতি এ ভাবেও তো ভাবতে পারতেন?
অদিতি: রচনার ব্যাপারটাই আলাদা। ও খুব ভাল পারফর্ম করতে পারে। সেটা ও অনবরত করে চলেছে। এবং জনপ্রিয়। সেই সুযোগ পেলে আমিও হয়তো ভাবব। কিন্তু সেই সুযোগটাই তো আমায় কেউ দেননি। তা ছাড়া, আমি সঞ্চালনার থেকেও অভিনয় করতে বেশি ভালবাসি।
প্রশ্ন: সেই আক্ষেপ কিছুটা মিটবে পরিচালক জিৎ চক্রবর্তীর ‘কথামৃত’ ছবিতে?
অদিতি: (হেসে ফেলে) বরাবরই ছোট পর্দা প্রিয়। ওখানেই ব্যস্ত থাকি। ফলে, বড় দুটো ছবির কাজ ছাড়তে হয়েছে। বড় পর্দা থেকে ডাক পাই না তা নয় কিন্তু। এ বার বিশ্বনাথ বসুর মারফৎ জিৎ কথা বলেছেন। অনেক করে রাজি করিয়েছেন। মাত্র ৩ দিন সময় দিতে পেরেছি। তার মধ্যে এক দিন শ্যুট হয়েছে। আমার আর দু’দিন বাকি।
প্রশ্ন: ‘দহন’-এর ২৫ বছর পরে আবার বড় পর্দায়? অল্প ভয় করছে?
অদিতি: (একটু থমকে) তা একটু করছে। ওই যে বললাম, ছোট পর্দা আমার ঘরবাড়ি। বড় পর্দায় খুবই কম কাজ করেছি। তবু দুটো ক্ষেত্রেই তো মূল কথা অভিনয়। সেটা করতে পারলে অসুবিধে হয় না। ফলে, ভয়ের সঙ্গে ভালও লাগছে।
প্রশ্ন: এ বার আপনার চরিত্রের নাম কী?
অদিতি: অনন্যা। ছবিতে কর্পোরেট ‘লুক’। তাই রূপটান প্রায় নেইই। আমার বিপরীতে ‘বাবু’। যার সঙ্গে আমার উঠতে বসতে ঝগড়া।
প্রশ্ন: ‘বাবু’ চরিত্রে বিশ্বনাথ বসু?
অদিতি: হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। বিশ্বনাথ আমার বিপরীতে। এই ছবিতে আমার সব কিছু নিয়েই ও ভীষণ খুশি। এর আগে বিশ্বনাথের সঙ্গে একাধিক অভিনয় করেছি। স্টার জলসার, ‘শ্রীকৃষ্ণ’, ‘জয় কালী কলকাত্তেওয়ালি’। তা ছাড়া, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্যও রয়েছেন। কৌশিকদার আমি অন্ধ ভক্ত। ওঁর পরিচালনায় ‘ভাল বাসা মন্দ বাসা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। জিৎকে তো শেষ দিনেও ভয়ের চোটে বলেছিলাম, আমায় ছেড়ে দাও। হয়তো ঠিক মতো পারব না। জিৎ সব সামলে আমায় দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। সব মিলিয়ে সুন্দর অভিজ্ঞতা।
প্রশ্ন: যদি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ পেতেন! মনে হয়?
অদিতি: একেবারেই না। কোনও না কোনও ভাবে এক ছবিতে তো আছি, যথেষ্ট।
প্রশ্ন: ছবিতে সম্পর্কের কথা বলা হচ্ছে, এ দিকে বিনোদন দুনিয়ায় অনবরত বিচ্ছেদের খবর! অদিতির কাছে ‘সম্পর্ক’ শব্দের অর্থ কী?
অদিতি: বন্ধুত্ব আর বিশ্বাস। এই দুটো না থাকলে যে কোনও সম্পর্ক অচল। একই সঙ্গে কথা বলা খুব জরুরি। অনেক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে কথার অভাবে। তাই কোনও সমস্যা দেখা দিলেই আগে মুখোমুখি বসে কথা বলে নেওয়াটা খুব দরকার। তাতে অনেক কিছু মীমাংসা হয়ে যায়। নইলে একের পর বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটতে থাকে। সে কথাও বলবে এই ছবি।
প্রশ্ন: অদিতির কোনও সম্পর্ক ভেঙেছে?
অদিতি: (একটু থেমে) হ্যাঁ, ভেঙেছে। তিনি ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন। তবু নাম নেব না। তার পর থেকে জীবনে আমিও কথার গুরুত্ব বুঝেছি। সম্পর্কে সবার আগে বিশ্বস্ততা, ভরসা খুঁজি।
প্রশ্ন: সেই জন্যই বিয়ের পরে দীর্ঘ দিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন?
অদিতি: সংসার করব বলে দূরে ছিলাম, এটা বলতে পারি। তা ছাড়া, সব কিছুতেই সময় দিতে হয়। এবং সব কিছু নির্দিষ্ট সময়ের উপরে। তাই যখন যা ঘটেছে মেনে নিয়েছি। একেই বোধহয় নিয়তি বলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy