Actress Vidya Sinha Excelled in Simple and Pleasant Heroine Roles dgtl
স্বামী-নির্যাতিতা, দীর্ঘ দিনের প্রবাসী, মারা গেলেন সাতের দশকের এই সুপারহিট নায়িকা
বিদ্যা যে ধরনের ভূমিকায় মানাতেন, সেই ধরনের নায়িকা চরিত্র আটের দশকের মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে হিন্দি সিনেমায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বিদ্যা সরে যান অভিনয় জগত থেকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৯ ১৩:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
তথাকথিত গ্ল্যামারাস ছিলেন না। কিন্তু সাবলীল অভিনয়ের সঙ্গে ছিল পাশের বাড়ির মেয়েসুলভ লাবণ্য। তাতেই বাজিমাত। তারকাখচিত নয়, কম বাজেটের ছবি সফল করার জাদু ছিল নায়িকা বিদ্যা সিনহার। সাতের দশকে নায়িকাদের ভিড়ে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন অভিনয়ের গুণে।
০২১৬
পর্দার ভাবমূর্তির সঙ্গে বিদ্যার বাস্তবের ভাবমূর্তির ফারাক ছিল বিস্তর। ছবির সাদাসিধে মেয়ে পর্দার বাইরে ছিলেন যথেষ্ট ছক-ভাঙা। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পরে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছিলেন ৫৪ বছর বয়সে।
০৩১৬
বিদ্যার জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৫ নভেম্বর। তাঁর বাবা রানাপ্রতাপ সিংহ ছিলেন প্রযোজক। বলিউডে পরিচিত ছিলেন প্রতাপ এ রানা নামে। মায়ের সূত্রেও বিদ্যার সম্পর্ক ছিল বলিউডের সঙ্গে। তাঁর মায়ের বাবা মোহন সিনহা ছিলেন বিখ্যাত পরিচালক। মধুবালার নাম দিয়েছিলেন মোহন। মদন পুরীকে বলিউডে ডেবিউ করিয়েছিলেন মোহনই।
০৪১৬
১৮ বছর বয়সে বিদ্যার মডেলিং পর্ব শুরু। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় তিনি ‘মিস বম্বে’ শিরোপা পেয়েছিলেন।
০৫১৬
তার কয়েক বছর পরেই বিয়ে। ভালবেসে প্রতিবেশী বেঙ্কটশরণ আইয়ারকে বিয়ে করেছিলেন একুশ বছরের বিদ্যা। বিয়ের ছ’বছর পরে, ১৯৭৪ সালে প্রথম অভিনয়, ‘রাজা কাকা’ ছবিতে, কিরণ কুমারের বিপরীতে।
০৬১৬
ওই বছরেই অভিনয় করেন বাসু চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ‘রজনীগন্ধা’-য়। তথাকথিত তারকাবিহীন কম বাজেটের এই ছবি বক্সঅফিসে চূড়ান্ত সফল হয়। বাসু চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বিদ্যার মেন্টর। বাসু চট্টোপাধ্যায়ের মিষ্টি রোম্যান্সের ছবিগুলিতে বিদ্যার অভিনয় দাগ কেটে গিয়েছে দর্শকমনে।
০৭১৬
‘রজনীগন্ধা’ ছাড়া তাঁর কেরিয়ারে অন্যতম সেরা তিনটি ছবি হল ‘ছোটি সি বাত’, ‘পতি পত্নী অর উও’ এবং ‘মুক্তি’। ‘ছোটি সি বাত’ ছবিতে বিদ্যা ছিলেন তরুণী অফিস চাকুরে। তাঁকে নিয়ে স্বপ্নে বিভোর দুই তরুণ, অমল পালেকর এবং আসরানি।
০৮১৬
‘পতি পত্নী অর উও’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৮ সালে। এই ছবিতে বিদ্যা অভিনয় করেছিলেন কমিক রোলে। আবার তার বিপরীতধর্মী অভিনয়ে বিদ্যা প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ‘মুক্তি’ ছবিতে। এই ছবিতে তিনি শশী কপূরের স্ত্রী। স্বামী শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত হওয়ায় স্ত্রী একা হাতে বড় করেন মেয়েকে।
০৯১৬
১০ বছরের কেরিয়ার তিরিশটি ছবিতে অভিনয় করেছেন বিদ্যা। ‘কর্ম’, ‘ইনকার’, ‘কিতাব’, ‘মীরা’ ছবিতেও তাঁর কাজ স্মরণীয়। একমাত্র নেগেটিভ রোলে অভিনয় করেছিলেন রমেশ সিপ্পির ‘যোশ’ ছবিতে। সেই সঙ্গে সঞ্জীব কুমার, শশী কপূর, বিনোদ খন্না, বিনোদ মেহেরার সঙ্গে অভিনীত ছবিগুলি জনপ্রিয় হয়।
১০১৬
‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবিতে জিনাত আমনের আগে অভিনয় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকেই। কিন্তু খোলামেলা পোশাকে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, তাই ফিরিয়ে দেন অভিনয়ের প্রস্তাব।
১১১৬
বিদ্যা যে ধরনের ভূমিকায় মানাতেন, সেই ধরনের নায়িকা চরিত্র আটের দশকের মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে হিন্দি সিনেমায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বিদ্যা সরে যান অভিনয় জগত থেকে।
১২১৬
অভিনয় থেকে বিদায়ের পরে কয়েক বছর বিদ্যা সংসারেই আবদ্ধ ছিলেন। তখন তাঁর স্বামী অসুস্থ। দীর্ঘ অসুস্থতার পরে বিদ্যার প্রথম স্বামী বেঙ্কটশরণ মারা যান ১৯৯৬ সালে। এরপর বিদ্যা তাঁর মেয়ে জাহ্নবীকে নিয়ে পাড়ি দেন অস্ট্রেলিয়া। জাহ্নবীকে তিনি দত্তক নিয়েছিলেন ১৯৮৯ সালে।
১৩১৬
অস্ট্রেলিয়ায় বিদ্যার সঙ্গে অনলাইনে আলাপ হয় চিকিৎসক নেতাজি ভীমরাও সালুঙ্কের সঙ্গে। সংক্ষিপ্ত প্রেমপর্বের পরে ২০০১ সালে বিয়ে দু’জনের। বিয়ের কয়েক দিন পরেই একটি মেয়েকে দত্তক নেন তাঁরা।
১৪১৬
বিদ্যার দ্বিতীয় দাম্পত্য ভেঙে যায় ২০০৯ সালে। স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তিনি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে খোরপোশের মামলায় জয়ী হন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
১৫১৬
কয়েক বছর অস্ট্রেলিয়াবাসের পরে ভারতে ফিরে আসেন বিদ্যা। অভিনয় করেন ‘কাব্যাঞ্জলি’, ‘জারা’-সহ বেশ কিছু মেগা সিরিয়ালে। কামব্যাক করেন বড় পর্দাতেও। ২০১১ সালে সলমন খানের ‘বডিগার্ড’-এ অভিনয় করেন তিনি। এটাই ছিল বিদ্যার শেষ ছবি। ছোটপর্দায় শেষ বার দেখা গিয়েছিল ‘কুলফিকুমার বাজেওয়ালা’-য়।
১৬১৬
কিছু দিন আগে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন বিদ্যা। বৃহস্পতিবার মারা গেলেন এই প্রবীণ অভিনেত্রী। বয়স হয়েছিল ৭১।