Actress Sarika lost most of her property to a servant dgtl
Sarika
Sarika: মামলায় হেরে সঞ্চয় খোয়ান সারিকা, সব সম্পত্তি নিয়ে যান পরিচারিকা!
স্বাধীন এবং দৃঢ়চেতা তিনি। অথচ এই মানুষটিকেই পরবর্তীকালে নিজের উপার্জনের সমস্ত সম্পত্তি খোয়াতে হয়েছিল পরিচারিকার কাছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:৪৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
খুব ছোট বয়স থেকেই অভিনয়ে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। মায়ের সৌজন্যে স্টুডিয়োই হয়ে উঠেছিল তাঁর খেলার মাঠ। কখনও স্কুলে যাননি। অথচ অভিনয়-ব্যক্তিত্ব-মানসিকতায় সমসাময়িক অভিনেত্রীদের থেকে অনেকটাই অন্য রকম সারিকা। স্বাধীন এবং দৃঢ়চেতা তিনি। অথচ এই মানুষটিকেই পরবর্তীকালে নিজের উপার্জনের সমস্ত সম্পত্তি খোয়াতে হয়েছিল পরিচারিকার কাছে।
০২১৩
তিনি বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সারিকা। জন্মগত নাম সারিকা ঠাকুর। শৈশবেই দেখেছিলেন বাবা মায়ের বিচ্ছেদ। স্ত্রী, সন্তানের দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না সারিকার বাবা। ফলে সারিকাকে ছোট থেকে অভিনয় শুরু করতে হয়। উপার্জনের চাপেই তিনি কোনও দিন স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি।
০৩১৩
শিশুশিল্পী হিসেবে সারিকার প্রথম ছবি ‘মঝলি দিদি’। ছবিতে মেজদিদির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন মীনাকুমারী। তাঁর মেয়ে হেমাঙ্গিনীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সারিকা। এর পর শিশুশিল্পী হিসাবে একাধিক ছবির প্রস্তাব পেতে শুরু করেন তিনি। শিশুশিল্পী হিসাবে ছেলের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন।
০৪১৩
কিন্তু চেহারায় পরিবর্তন আসায় বেশি দিন শিশুশিল্পী হিসাবে কাজ করতে পারেননি তিনি। সারিকা বুঝতে পেরেছিলেন এ বার অন্য চরিত্র খুঁজতে হবে। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই নায়িকা হয়ে যান তিনি। ১৯৭৫ সালে রাজশ্রী প্রোডাকশনের মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘গীত গাতা চল’-এ সচিনের নায়িকা হয়েছিলেন সারিকা। প্রথম ছবিতেই সচিন-সারিকা হয়ে উঠেছিলেন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি।
০৫১৩
সারিকা তাঁর মায়ের সঙ্গেই থাকতেন। তিনি কোন ছবি করবেন কোনটা নয়, সবই সিদ্ধান্ত নিতেন তাঁর মা। সচিনের সঙ্গে সারিকার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সারিকা বিয়েও করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মায়ের হস্তক্ষেপে সেটা হয়ে ওঠেনি।
০৬১৩
সারিকার জীবন পুরোপুরি মায়ের নিয়ন্ত্রণে চলছিল। যত সময় এগিয়েছে সারিকা কেরিয়ারে আরও উন্নতি করেছেন, আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। প্রচুর টাকাও উপার্জন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সবই ছিল মায়ের অধীন।
০৭১৩
সারিকার মা শুধু তাঁকে নিয়ন্ত্রণই করতেন না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের উপর নির্যাতনও শুরু করেছিলেন বলে অভিযোগ। প্রথমে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু মেয়ের বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খ্যাতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যেও সারিকাকে বিভিন্ন সময়ে হেনস্থা করতে শুরু করেছিলেন।
০৮১৩
এক বার প্রকাশ্যে অনুরাগীদের সামনেই চড় মেরেছিলেন মেয়ে সারিকাকে। সহ্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল সারিকার। ওই দিনই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তিনি। মাত্র ২১ বছর বয়সে মায়ের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে একা থাকতে শুরু করেন। কোনও টাকাপয়সা না নিয়ে একবস্ত্রে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। প্রথম কয়েক দিন নিজের গাড়িতে প্রায় ভবঘুরে জীবন কাটিয়ে ধীরে ধীরে থিতু হন একাকী জীবনে।
০৯১৩
থাকার জন্য মুম্বইয়ে ঘর খুঁজছিলেন তিনি। যে সমস্ত ব্রোকারদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল এ নিয়ে তাঁরাই তাঁকে এমন একটি খবর দিয়েছিলেন যা একেবারেই অজানা ছিল সারিকার। তাঁরা জানিয়েছিলেন, যে এলাকায় থাকার জন্য ঘর খুঁজছিলেন তিনি, সেখানেই নাকি ছয়টি ফ্ল্যাট কেনা রয়েছে তাঁর! খোঁজ নিয়ে সারিকা জানতে পেরেছিলেন এত দিন উপার্জন করে যে টাকা তিনি মায়ের হাতে তুলে দিতেন সে সব দিয়েই তাঁর মা নিজের নামে এই ফ্ল্যাটগুলি কিনেছিলেন।
১০১৩
সারিকা তখন এই নিয়ে মাকে কিছুই বলেননি। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি ফ্ল্যাটগুলি নিজের অধিকারে নিতে যান, তখন আর এক সমস্যায় পড়েন। জানতে পারেন, সমস্ত সম্পত্তি তাঁর মা এক পরিচারিকার নামে লিখে দিয়েছিলেন। শেষ জীবনে মায়ের দেখভাল করতেন ওই পরিচারিকাই। এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন সারিকা। কিন্তু কোনও সম্পত্তিই তিনি হাতে পাননি। তাঁর উপার্জনের ওই সমস্ত সম্পত্তি পরিচারিকা নিয়ে নেন।
১১১৩
পরবর্তীকালে অভিনয় সূত্রে সুপারস্টার কমল হাসনের সঙ্গে আলাপ সারিকার। ক্রমে আলাপ থেকে প্রণয়। তখন কমল হাসন আর বাণী গণপতির দাম্পত্যের বয়স এক দশকের কাছাকাছি। সব জেনেই কমলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সারিকা। দু’জনের কেউ তাঁদের সম্পর্ক গোপনও করেননি। কয়েক বছর লিভ ইন সম্পর্কে থাকার পর তাঁরা বিয়েও করেন। দুই মেয়ে শ্রুতি এবং অক্ষরার জন্মও দেন তিনি। কিন্তু সবাইকে হতবাক করে তাঁদের ১৬ বছরের দাম্পত্য ভেঙে যায় ২০০৪ সালে।
১২১৩
কমলকে বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিচ্ছেদের পর ফের নতুন করে অভিনয়ের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন। সারিকা বরাবরই সামনে তাকিয়ে চলতে পছন্দ করেন। ঘটে যাওয়া কঠিন সত্যকে আঁকড়ে বিষাদে ভাসতে রাজি নন তিনি। জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস-এও তাই সাফল্য পেয়েছেন। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পরজানিয়া’ ছবিতে পার্সি মহিলার ভূমিকায় অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পান সারিকা। তার পরের কয়েক বছরে ‘ভেজা ফ্রাই’, ‘মনোরমা সিক্স ফিট আন্ডার’, ‘যব তক হ্যায় জান’, ‘পুরানি জিন্স’, ‘বার বার দেখো’ ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়।
১৩১৩
সারিকা শুধুমাত্র অভিনেত্রীই নন, পাশাপাশি আজ তিনি একজন সফল কস্টিউম ডিজাইনার, সাউন্ড জিজাইনার এবং সহকারী পরিচালকও।