Actress Sarika did not keep her relation with married Kamal Haasan under the wraps dgtl
Bollywood
লিভ ইন সম্পর্কেই বিবাহিত প্রেমিক কমল হাসানের সন্তানের মা হন সারিকা
সারিকা যখন একুশ বছরের তরুণী, মায়ের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে একা থাকতে শুরু করেন। কোনও টাকাপয়সা না নিয়ে একবস্ত্রে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। প্রথম কয়েকদিন প্রায় ভবঘুরে জীবন কাটিয়ে ধীরে ধীরে থিতু হন একাকী জীবনে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৩৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
নিজে শৈশবেই দেখেছিলেন বাবা মায়ের বিচ্ছেদ। ছোট থেকেই দায়িত্ব নিতে হয়েছিল পরিবারের। দায়িত্ব নেওয়ার পর্ব জারি পরবর্তী জীবনেও। একটা সময়ের পরে দুই মেয়ের ক্ষেত্রে পালন করতে হয় সিঙ্গল মাদারের ভূমিকা। অভিনয়-ব্যক্তিত্ব-মানসিকতায় সমসাময়িক অভিনেত্রীদের থেকে অনেকটাই অন্যরকম সারিকা।
০২১৯
জন্মগত নাম সারিকা ঠাকুর। বাবা ছিলেন মরাঠি। মা, হিমাচলি। সারিকার জন্ম দিল্লিতে, ১৯৬০-এর ৫ ডিসেম্বর। তিনি যখন খুব ছোট, তাঁর বাবা তাঁদের ফেলে সংসার ছেড়ে চলে যান।
০৩১৯
স্ত্রী সন্তানের দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না সারিকার বাবা। ফলে সারিকাকে ছোট থেকে অভিনয় শুরু করতে হয়। উপার্জনের চাপে তিনি কোনওদিন স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি।
০৪১৯
শিশুশিল্পী হিসেবে সারিকার প্রথম ছবি ‘মঝলি দিদি’। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘মেজদিদি’ অবলম্বনে ছবির পরিচালক ছিলেন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়। মেজদিদির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন মীনাকুমারী। তাঁর মেয়ে হেমাঙ্গিনীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সারিকা।
০৫১৯
ষাট ও সত্তরের দশকের অনেক ছবিতে সারিকা শিশুশিল্পী হিসাবে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুপারহিট ছবি ‘হমরাজ’-এ নায়িকা ভিমির মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সারিকা। পরে রাজশ্রী প্রোডাকশনের ‘গীত গাতা চল’-এ সচিনের নায়িকা হয়েছিলেন সারিকা। সচিন-সারিকা ছিল বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি।
০৬১৯
সারিকা যখন একুশ বছরের তরুণী, মায়ের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে একা থাকতে শুরু করেন। কোনও টাকাপয়সা না নিয়ে একবস্ত্রে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। প্রথম কয়েকদিন নিজের গাড়িতে প্রায় ভবঘুরে জীবন কাটিয়ে ধীরে ধীরে থিতু হন একাকী জীবনে। ঠিক করেন, পজেসিভ মাকে ছাড়া একাই এগোবেন ইন্ডাস্ট্রিতে।
০৭১৯
খুব সহজে মূলস্রোতের বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হয়ে উঠতে পারেননি সারিকা। কারণ তাঁর চেহারায় ছিল পশ্চিমী প্রভাব। ভারতীয় বিনোদন জগতে তাঁর চেহারার গ্রহণযোগ্যতা কম ছিল। সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে নেন তিনি।
০৮১৯
তাঁর সাজপোশাক, মেকআপের ধরনও ছিল আলাদা। তিনি চড়া মেকআপ একদমই পছন্দ করতেন না। নিজেই জানিয়েছেন, অভিনয়ের সময়েও চেষ্টা করতেন যৎসামান্য সাজগোজ করতে। কারণ, তাঁর মনে হয় মেকআপ করলে তাঁকে দেখতে ভাল লাগে না।
০৯১৯
অভিনয় সূত্রেই সুপারস্টার কমল হাসানের সঙ্গে আলাপ সারিকার। ক্রমে আলাপ থেকে প্রণয়। তখন কমল হাসান আর বাণী গণপতির দাম্পত্যের বয়স এক দশকের কাছাকাছি। সব জেনেই কমলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সারিকা। দু’জনের কেউ তাঁদের সম্পর্ক গোপনও করেননি।
১০১৯
এ দিকে বাণী গণপতির সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি, অন্যদিকে সারিকার সঙ্গে লিভ ইন শুরু করে দেন কমল হাসান। তাঁদের প্রথম সন্তান শ্রুতির জন্ম ১৯৮৬ সালে। তারও দু’বছর পরে কমল হাসান সারিকাকে বিয়ে করেন। তখনও প্রথম স্ত্রী বাণীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি কমলের।
১১১৯
১৯৯১ সালে জন্ম কমল-সারিকার দ্বিতীয় মেয়ে অক্ষরার। দুই মেয়েকে নিয়ে কমল-সারিকার দাম্পত্যকে বলিউডে আদর্শ হিসেবে ধরা হত। কিন্তু সবাইকে হতবাক করে তাঁদের ষোলো বছরের দাম্পত্য ভেঙে যায় ২০০৪ সালে।
১২১৯
বিয়ে ভাঙার কারণ নিয়ে দু’জনের কেউ মুখ খোলেননি। কিন্তু শোনা যায়, সারিকার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী গৌতমীর সঙ্গে কমলের সম্পর্ক ধরা পড়ে যায় সারিকার কাছে। তিনি দাম্পত্য থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
১৩১৯
কমলের থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেন সারিকা। একই সময়ে কমল হাসান তাঁর প্রথম স্ত্রী বাণী গণপতির কাছে ডিভোর্স চান। বলতে গেলে অভিনেতার দু’টি বিয়ে কার্যত একই সময়ে কাগজে কলমে শেষ হয়।
১৪১৯
কমল হাসান বরাবর বলেছেন তিনি বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানে বিশ্বাস করেন না। বাণী গণপতি এবং সারিকার সঙ্গে দাম্পত্যের পরেও তিনি একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। গৌতমীর সঙ্গে দীর্ঘ লিভ ইন-এর পরে ভেঙেছেন সেই সম্পর্কও।
১৫১৯
অন্যদিকে, সারিকা থেকেছেন একাই। কমলকে বিয়ের পরে তিনি অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন। সিঙ্গল মাদার হিসেবে জীবনের দ্বিতীয় পর্বে আবার নতুন করে অভিনয়ের ইনিংস শুরু করেন। অভিনেত্রী হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংসেই তিনি বেশি সফল।
১৬১৯
২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পরজানিয়া’ ছবিতে পার্সি মহিলার ভূমিকায় অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পান সারিকা। পাশাপাশি তার পরের কয়েক বছরে ‘ভেজা ফ্রাই’, ‘মনোরমা সিক্স ফিট আন্ডার’, ‘যব তক হ্যায় জান’, ‘পুরানি জিন্স’, ‘বার বার দেখো’ ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়।
১৭১৯
অভিনেত্রীর পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিতে আরও পরিচয় আছে সারিকার। তিনি একজন সফল কস্টিউম ডিজাইনার, সাউন্ড জিজাইনার এবং সহকারী পরিচলক। ২০০০ সালে প্রাক্তন স্বামী কমল হাসানের ছবি ‘হে রাম’-এর পোশাক পরিকল্পনা করে জাতীয় পুরস্কার পান।
১৮১৯
সারিকার দুই মেয়েও সফল অভিনেত্রী। শ্রুতি আর অক্ষরাকেও নিজের মতো স্বাধীন ভাবে বাঁচতে শিখিয়েছেন সারিকা। বড় মেয়ে শ্রুতি একজন সুবক্তাও। নিজের ব্যর্থ সম্পর্ক থেকে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, সব বিষয়েই স্পষ্ট মতামত জানিয়েছেন তিনি।
১৯১৯
শ্রুতি বলেছেন, তিনি বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ নিয়ে দুঃখিত নন। বরং তাঁর মনে হয়েছে, তাঁরা স্বাধীন ব্যক্তি হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই ছাদের নীচে প্রেমহীন দাম্পত্যের থেকে আলাদা থাকা ভাল, মনে করেন কমল-সারিকার বড় মেয়ে।