নোবেলের সঙ্গে মিম নিয়ে মুখ খুললেন পল্লবী।
হাসিমুখে দাঁড়িয়ে জবা। সঙ্গী নোবেল। একই মালা জড়ানো দু’জনের গলায়। নোবেলের পরনে পাঞ্জাবি। জবা সেজে উঠেছে উজ্জ্বল কমলা রঙের শাড়িতে।
কয়েক মাস আগে এই ছবি নেটপাড়ায় ছড়িয়ে যেতেই হইহই রব। কাউকে না জানিয়ে জবাকে বিয়ে করে ফেললেন নোবেল? করলেই বা কবে করলেন? এ ধরনের নানা প্রশ্নে ভরে গিয়েছিল পোস্টের মন্তব্য বাক্স।
আসলে এ সবটাই ঘটেছে মিম স্রষ্টাদের কল্পনায়। ‘সা রে গা মা পা’ খ্যাত নোবেলের পোস্ট করা একটি ছবিতে তাঁর মহিলা সঙ্গিনীর মুখের বদলে প্রযুক্তির মাধ্যমে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল জবার মুখ। জবা অর্থাৎ স্টার জলসার ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র। জবাকে নিয়ে এই ঠাট্টা-তামাশা নতুন নয়। চার বছর চলার পর ধারাবাহিক শেষ হয়। কিন্তু তা নিয়ে ট্রোল-মিমের পর্ব এখনও অব্যাহত।
ধারাবাহিকে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের কাজের মেয়ে হিসেবে জবার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আবার সেই পরিবারের ছেলেকে বিয়ে করে রাতারাতি পড়াশোনা শিখে নিমেষে আইনজীবী হয় সে! কী ভাবছেন? জবার কেরামতি এখানেই শেষ?
একে বারেই না। চরম বিপদের সময় মাথা ঠান্ডা রেখে শুধু মাত্র একটি কাঁচির সাহায্যে বোম নিষ্ক্রিয় করে ফেলে জবা সেনগুপ্ত! নেটাগরিকদের প্রশ্ন, ডিসি-মার্ভেলের সুপারহিরোদের থেকে কি কোনও অংশে কম ভাবা যায় তাকে? রাতারাতি মিম স্রষ্টাদের প্রিয় বিষয়ের তালিকায় উঠে আসে জবার নাম!
কয়েক মাসের মধ্যেই ‘সুপারহিরো’ থেকে ‘অ্যামিবা’-য় রূপান্তর ঘটে জবার। জা এবং জামাইয়ের হাতে বলিকাঠে বলি হওয়ার পরে গলায় একটা পাতলা ব্যান্ডেজ বেঁধে অনায়াসে ফিরে এসেছিল সে। দুষ্টদের ঘুম ছুটিয়েছিল ‘ভূত’ সেজে। কিন্তু জবার গলার ব্যান্ডেজ নাকি আদৌ ব্যান্ডেজ নয়! নেটাগরিকদের দাবি, দেহ থেকে বাদ পড়া মাথা সেলো টেপ দিয়ে জুড়ে ফিরে এসেছিল জবা! ব্যস! এরই সঙ্গে ‘সুপারহিরো’-র সুপার পাওয়ারের তালিকায় জুড়ে গেল অমরত্ব। কেউ কেউ বললেন, “জবা নাকি সেই এককোষী প্রাণীর মতো, যাকে মেরে ফেলা প্রায় অসম্ভব।”
নেটমাধ্যমে জবা ওরফে পল্লবী শর্মাকে নিয়ে অবিরত চর্চা হলেও নিজে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন না অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, নেটমাধ্যমে তাঁর নামে যে প্রোফাইলগুলো দেখা যায়, সে সবই তাঁর অনুরাগীদের তৈরি। নিজেকে নিয়ে ট্রোল, মিম দেখতে প্রতিবেশীদের মুখ চেয়ে থাকতে হয় তাঁকে। আনন্দবাজার অনলাইনকে পল্লবী বলেন, “আমি আসলে একটু একা থাকতে ভালবাসি।আমাকে নিয়ে যে ট্রোল হয় আমি জানতামই না। অন্যরা এসে আমাকে দেখায়। এই তো কবে দেখলাম আমার সঙ্গে নোবেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এ দিকে নোবেলকে আমি চিনিই না।”
নিজেকে নিয়ে এই ব্যঙ্গ-কৌতুকে যদিও আপত্তি নেই তাঁর। তিনি মনে করেন, ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পরেও ‘জবা’ চরিত্রটির জনপ্রিয়তা কমেনি। তাই তাকে নিয়ে মানুষ এখনও চর্চা করে চলেছে। ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পরেও মজার ট্রোল-মিমের মাধ্যমেই অনুরাগীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ইদানীং সময় ধারাবাহিকে মহিলা চরিত্র অনেক বেশি গুরুত্ব পায়। পর্দা জুড়ে তারাই থাকে বেশি। দর্শকের সঙ্গেও তাই একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের নিয়ে হাসি-মজা চললে তো কোনও ক্ষতি নেই।”
কিন্তু ধারাবাহিক বলে কি গল্পের গরু গাছে তোলা যায়? প্রশ্ন ছুড়ে দিতেই হেসে পল্লবীর উত্তর, “ধারাবাহিক তৈরি হয় মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য। সে ক্ষেত্রে বাস্তবের সঙ্গে সব কিছুর মিল না খোঁজাই ভাল। ধারাবাহিক খুব বেশি বাস্তববাদী হয়ে গেলে হয়তো দর্শকেরই সেটা আর ভাল লাগবে না।” একটু থেমে তিনি বললেন, “একটি দৃশ্যে অভিনয় করার আগে যদি আমি ভাবি কোনটা অবাস্তব বা হাস্যকর, তা হলে হয় তো আমি কাজটাই ঠিক করে করতে পারব না। বেশি চর্চা করে তাই নিজেই নিজের অশান্তি ডেকে আনি না।”
২০১৬ সালের পর থেকেই জবা এবং পল্লবী সমার্থক। ধারাবাহিক শেষ করে তাই টানা ছুটি কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী। স্টারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকলেও কোনও কাজ করছেন না তিনি। ‘জবা’-র ছাপ মুছে ফেলতে পারলেই নতুন কোনও চরিত্র হয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করেন পল্লবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy