Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

চুক্তিপত্রে কম্প্রোমাইজ়ের কথা লেখা ছিল

মুখ খুললেন মুমতাজ সরকার। মুখোমুখি আনন্দ প্লাসটলিউড ও বলিউডে কাজ করতে গিয়ে নানা রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। ‘‘বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই কম পারিশ্রমিকে রাজি হচ্ছেন বলে, নিজের তো বটেই সঙ্গে অন্যদেরও ক্ষতি করছেন,’’ মত মুমতাজের।

মুমতাজ

মুমতাজ

ঈপ্সিতা বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

‘‘পরিচালকের স্বাধীনতা নষ্ট না করে ওয়েব সিরিজ়ে লজিক্যাল সেন্সরশিপ হওয়া উচিত। অনেক বেশি খোলামেলা হয়ে গিয়েছে। খানিকটা লাগাম টানা দরকার,’’ বললেন মুমতাজ সরকার। সত্যি কথাটা স্পষ্ট করে বলতে কোনও দ্বিধা নেই তাঁর। রজত কপূরের সঙ্গে একটি থ্রিলারধর্মী ওয়েব সিরিজ়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি। তা ছাড়া অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, মুমতাজ নাকি মধুর ভান্ডারকরের পরের ছবিতে কাজ করবেন। ‘‘অফার করা চরিত্রটি পছন্দ হয়নি। মুম্বইয়ে কাজের সুযোগ পাওয়ামাত্রই লুফে নিলে অনেক সময়ে নিজের প্রতি অন্যায় হয়, সেটা করতে চাইনি।’’

টলিউড ও বলিউডে কাজ করতে গিয়ে নানা রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। ‘‘বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই কম পারিশ্রমিকে রাজি হচ্ছেন বলে, নিজের তো বটেই সঙ্গে অন্যদেরও ক্ষতি করছেন,’’ মত মুমতাজের। তার মানে কি পারিশ্রমিক মনের মতো হয়নি বলেই বলিউডে আরও দুটো ছবির সুযোগ ছাড়তে হয়েছিল? ‘‘না, কারণটা অন্য। একটা ছবির চুক্তিপত্রে পরিষ্কার লেখা ছিল, আমাকে ওই ছবিতে কাজ করতে গেলে ‘কম্প্রোমাইজ়’ করতে হবে। আমি বলে নয়, কোনও বিগ স্টার কাজ করলেও কম্প্রোমাইজ় করতে হবে,’’ দৃঢ় গলায় বললেন নায়িকা। শৌচাগার তৈরি সম্পর্কিত সামাজিক বার্তা দেওয়া সেই ছবিটি ছাড়ার কোনও দুঃখ নেই তাঁর। ‘‘পরের একটা ছবির চুক্তিপত্রে সোজাসুজি এ রকম লেখা না থাকলেও, সুন্দর করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল আমাকে কম্প্রোমাইজ় করতে হবে,’’ নির্দ্বিধায় ছবি ছাড়ার কারণ বললেন মুমতাজ।

শোনা গিয়েছে, ‘শালা খড়ুস’ ছবিতে আর মাধবনের সঙ্গে আপনার কাজের অভিজ্ঞতাও নাকি ভাল-মন্দ মিশিয়ে ছিল? অভিনেত্রী হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘মাধবন অসাধারণ অভিনেতা। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। কিন্তু কাজের বাইরে সেই মানুষের অনেক পরত থাকে। সেগুলো তাঁর সম্পর্কে না হয় সিক্রেটই থাকুক। কারণ তিনি আমার সঙ্গে কিছু করার সাহস পাননি। কায়দা করে এড়িয়ে গিয়েছি।’’

২০১০-এ বিরসা দাশগুপ্তের ‘০৩৩’ দিয়ে মুমতাজের কেরিয়ার শুরু। তার পরে ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘রক্তকরবী’, ‘ডাকের সাজ’ ছবিতে কাজ করলেও খুব মসৃণ ভাবে এগোয়নি মুমতাজের কেরিয়ার। সেটা কি কম্প্রোমাইজ় না করার জন্য? ‘‘আমার কাছে ‘অ্যাডজাস্ট’ শব্দটা অস্বস্তিকর। কম্প্রোমাইজ় করলে আজ হয়তো অনেক বেশি লাইমলাইট পেতাম। তবে তা নিয়ে আক্ষেপ নেই।’’ একটু থেমে আবার যোগ করলেন, ‘‘টলিউডে কয়েকজন পরিচালক আছেন, তাঁরা প্রথমে বন্ধু হন। তার পরে অবশ্য আকার-ইঙ্গিতে উদ্দেশ্য বুঝিয়ে দেন।’’ তবে এখন সরাসরি কেউ এমন প্রস্তাব দিলে, সপাটে চড় কষাতেও তাঁর ভয় নেই। ‘‘এ জন্য চার বছর বসে থাকতেও রাজি। আর ঘন ঘন ফোন করে তেল লাগাতে পারি না প্রযোজক-পরিচালকদের,’’ সোজাসাপ্টা কথা মুমতাজের।

এখন তিনি ব্যস্ত ছৌ নাচের অনুশীলনে। ‘‘ছৌ নাচ শিখছি। আমরা ছেলেদেরই ছৌ নাচ করতে দেখেছি। মেয়েরা নাচে না। কিন্তু প্রথম বার একটি ছবিতে ছৌ নাচ করব। ছবির গল্পটা তা নিয়েই,’’ একরাশ উৎসাহ নিয়ে জানালেন অভিনেত্রী।

পি সি সরকারের মেয়ের কাছে যদি ভ্যানিশ করার ক্ষমতা আসে, কাকে ভ্যানিশ করবেন? ‘‘এই রে, তা হলে তো কলকাতার জনসংখ্যা কমে যাবে। তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে আমি নিজেকেই ভ্যানিশ করে দিতে চাই।’’

কেরিয়ার নিয়ে এতটা ঠৌঁটকাটা হলেও ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর স্টেটাস ‘সিঙ্গল’ কি না, সে বিষয়ে কিন্তু মুখ খুললেন না নায়িকা। ‘‘কলকাতার ভাল ছেলেগুলো কোথায় গেল? একটা ছেলেও চোখে পড়ার মতো নেই, যাকে দেখে কুছ কুছ হোতা হ্যায়,’’ মজার ছলে বললেন মুমতাজ।

অন্য বিষয়গুলি:

Mumtaz Sorcar Web Series Censorship
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE