জন্মদিনে ছবি মুক্তি নিয়ে খুশি তুহিনা।
সমুদ্রপাড়ের নোনা বাতাস নেই। রকমারি মাছের পদ নেই। মায়ের হাতের পায়েসও নেই। শুক্রবার জন্মদিনে নিজের শহর কাঁথি থেকে অনেকটাই দূরে তুহিনা দাস। পেশার কারণে শহর কলকাতায়। এ দিন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন ছবি ‘অপরাজিতা’। খুব খুশি তুহিনা? শুভেচ্ছা জানিয়ে অভিনেত্রীর কাছে এই প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
উচ্ছ্বসিত তুহিনা বললেন, ‘‘নিজের শহরে নেই। মা পাশে নেই। শহর কলকাতা বুঝতে দেয়নি তা। সকাল থেকে ফোনের পরে ফোন। একগাদা উপহার। নতুন শাড়ি। মায়ের অভাব মিটিয়ে দিয়েছে বন্ধুরা। এক বন্ধু দায়িত্ব নিয়ে পায়েস রেঁধেছে। দুপুরে কব্জি ডুবিয়ে মাছ, মাংস, মিষ্টি সব খেয়েছি। বড় হওয়ার পরেও এত ধুমধাম আমার জন্মদিন নিয়ে! অনেক সৌভাগ্য আমার।’’ একই সঙ্গে তিনি খুশি, জন্মদিনে তাঁর ছবি্র মুক্তি নিয়ে। 'অপরাজিতা'-র মতো একটি ছবি আসছে প্রেক্ষাগৃহে। এক থেকে বড় উদ্যাপন আর কী হতে পারে? খুশি হওয়ার মতোই ঘটনা তুহিনার কাছে। এবং এর জন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিচালক রোহন সেন, প্রযোজক অমৃতা দে-কে। ছবিটি দর্শকের কাছে প্রশংসিত হলে আকাশ ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি।
সব ভাল-র মধ্যেও বড় কাঁটা, ‘অপরাজিতা’ কোনও উল্লেখযোগ্য মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে না। প্রাইম টাইমও পাচ্ছে না। কলকাতায় বড় কোনও প্রেক্ষাগৃহ জায়গা দেয়নি ছবিটিকে। পরিচালক-প্রযোজককে সমানে লড়ে যেতে হচ্ছে তার জন্য। বিষয়টি নিশ্চয়ই বিঁধছে তুহিনাকে? পর্দার ‘দময়ন্তী সেন’-এর কথাগুলো যেন বিষণ্ণ, ‘‘এটাই বাস্তব। আমার জন্মদিনে নিজের বাংলা ছবি বাংলায় জায়গা পাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিতে হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমেও মুখ খুলতে হচ্ছে। তার মানে আমরা এখনও কতটা পিছিয়ে! এটা যেন তারই প্রমাণ।’’ অভিনেত্রীর মতে, নিজের মাতৃভাষায় নিজের জায়গায় নিজের দর্শকের সমর্থন না পাওয়ার মতো লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না। প্রশ্ন রেখেছেন, ‘‘বাংলা ও বাঙালি বাংলা ছবিকে সমর্থন না করলে ছবিগুলো কোথায় যাবে? কাকে দেখানো হবে? ’’
তুহিনার যুক্তি, অন্যান্য অঞ্চল সমবেত ভাবে নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে এককাট্টা। বাংলায় নতুন পরিচালকের ছবির জন্য প্রথম সারির প্রেক্ষাগৃহের দরজা বন্ধ। অথচ প্রত্যেকে প্রচণ্ড পরিশ্রম করে ছবিটি বানিয়েছেন। মাত্র ২২ বছরের পরিচালক রোহনের এই লড়াই তাই অন্তর থেকেই অনুভব করছেন তাঁর পর্দার ‘অপরাজিতা’। প্রতি দিন, প্রতি মুহূর্ত অভিনয়ে বাঁচেন তুহিনা। জন্মদিনে বাংলা ছবির সমৃদ্ধির জন্য ঈশ্বরের কাছে কী চাইবেন তিনি? স্পষ্টবক্তা অভিনেত্রী এ দিনেও অকপট। বলে উঠলেন, ‘‘খুব সত্যি কথা বলব? তিনটি জিনিস চাই। এক, সবাই সুস্থ থাকুন। দুই, যোগ্যতা অনুযায়ী অভিনয় দুনিয়ায় অভিনেতাদের বাছা হোক। অনেক হয়েছে। আর চেনাজানা হিসেবে নয়, মেধা অনুযায়ী ছবিতে সুযোগ পান অভিনেতারা। তিন, বাংলা ছবির পাশে বাঙালি দর্শকেরা দয়া করে দাঁড়ান। নইলে ক্রমশ ছোট হতে হতে মিলিয়ে যাবে বাংলা বিনোদন দুনিয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy