(বাঁ দিকে) মিঠুন চক্রবর্তী। রজতাভ দত্ত (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ছবি ‘শাস্ত্রী’। সম্প্রতি ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে এসেছে। অনুমান করা যায় মিঠুনের বিপরীতে ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত।
ট্রেলারের একটি দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তারক্ষীর পোশাকে মিঠুন, উল্টো দিকে বসে রজতাভ। এক সময় বর্ষীয়ান অভিনেতার কোলে দু’পা তুলে দিয়েছেন রজতাভ। ট্রেলার প্রকাশেই মানুষের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করেছে ‘শাস্ত্রী’। পুরনো চেনা অবতারে দেখা যাচ্ছে মিঠুনকে। সঙ্গী দেবশ্রী।
ট্রেলারের শেষে পরিস্থিতি উল্টে যাচ্ছে একেবারে। সেখানে রজতাভর দুই কাঁধে শোভা পাচ্ছে মিঠুনের পা। মিঠুনের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক রজতাভর। ওই দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে যে প্রথমে কুণ্ঠা বোধ করেছিলেন, সে কথা স্বীকার করে নিলেন রজতাভ। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “একটু অস্বস্তি হয়েছিল বইকি! কিন্তু চিত্রনাট্যে এমনই ছিল। মিঠুনদাকে সেটা জানাতেই বললেন, ‘আরে, চল তো। শট দে!”’
রজতাভ বিশ্বাস করেন, বাণিজ্যিক ছবিতে দর্শকের মন জয় করার জন্য কিছু ফর্মুলা মানা হয়। বললেন, “পরে যখন মিুঠুনদা আমার কাঁধে পা তুলে দিচ্ছেন, ওই দৃশ্যে সবচেয়ে বেশি হাততালি পড়বে প্রেক্ষাগৃহে।” এরই সঙ্গে রজতাভ যোগ করলেন, “ওই দৃশ্যের পর মিঠুনদার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলাম।”
ব্রাত্য বসু পরিচালিত ‘রাস্তা’ ছবিতে মিঠুন ও রজতাভ প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন। তবে মিঠুনের সঙ্গে অভিনেতার বাণিজ্যিক ছবিগুলোই দর্শকের কাছে জনপ্রিয় হয়। নায়ক মিঠুন এবং খলচরিত্রে রজতাভ— বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় জুটি। এই জুটির প্রথম ছবি ছিল ‘বারুদ’। রজতাভর কথায়, “আমি তখন নবাগত। প্রথম খল চরিত্র। আমার ধারণা, আমাকে নির্বাচনের নেপথ্যে মিঠুনদার বড় অবদান ছিল।” যদিও তিনি জানালেন, ‘শাস্ত্রী’র সেটে মিঠুনকে সে কথা জিজ্ঞাসা করতে অভিনেতা জানান, পুরনো স্মৃতি তাঁর আর মনে নেই। রজতাভ বললেন, “সাধারণত এ রকম ক্ষেত্রে অনেকেই হয়তো কৃতিত্ব নিতে চাইবেন। কিন্তু, মিঠুনদা সরল মনেই বলে দিলেন যে তিনিই আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন কি না, সেটা আর মনে করতে পারছেন না।”
শুরুর দিন থেকেই মিঠুনের কাছে অভিনয় শেখার সুযোগ পেয়েছেন, অভিনেতা হিসেবে এটা তাঁর বিশেষ প্রাপ্তি বলেই মনে করেন রজতাভ। ‘বারুদ’ ছবির একটি ঘটনার কথা তাঁর মনে পড়ে। একটি ‘অবাস্তব’ দৃশ্যে কী ভাবে শট দেবেন বুঝতে পারছিলেন না রজতাভ। মিঠুন নাকি মজা করে তাঁকে বলেছিলেন, “বেশি থিয়েটার করলে এই অবস্থাই হয়!” একই সঙ্গে সমস্যার সমাধানও করে দেন মিঠুন। রজতাভ বললেন, “প্রথমে দৃশ্যটার সংলাপ মুখস্থ আছে কি না, জানতে চাইলেন দাদা। তার পর আমার চরিত্রে দাদা এবং আমি দাদার চরিত্রে, এই ভাবে এক বার রিহার্সাল করে দেখিয়ে দিলেন। সারা জীবনে ওই এক বারই ফ্লোরে কেউ আমাকে অভিনয় দেখিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর থেকে বাণিজ্যিক ছবির চরিত্রকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সেটা আত্মস্থ করে নিই।”
রজতাভের মতে, মিঠুন নিজে অভিনয়ের বিশ্বকোষ। ‘মহাগুরু’র সঙ্গে তাঁর অজস্র স্মৃতি। হেসে বললেন, “সেই মানুষটার কোলে পা তুলে দিচ্ছি ভেবেই মনের মধ্যে একটা দ্বিধা কাজ করছিল। শেষ পর্যন্ত মিঠুনদাই বিষয়টাকে সহজ করে দেন।” ‘শাস্ত্রী’ ছবিতেই একটি দৃশ্যে মিঠুনকে মিষ্টি খেতে হয়। তার জন্য পরে অভিনেতার শরীরও খারাপ হয়। রজতাভ বললেন, “আমি জিজ্ঞাসা করতেই মিঠুনদা বলেছিলেন, ‘কী করব! শটে তো প্রয়োজন’। সত্যিই মানুষটার থেকে এ রকম অজস্র জিনিস শেখার সুযোগ পেয়েছি।”
রজতাভ জানালেন, তিনি জানেন অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে মিঠুন বিভিন্ন জায়গায় তাঁর প্রশংসা করতেন। তাঁর কাছে এটা যে কোনও পুরস্কারের চেয়ে কম নয়, তা জানাতে দ্বিধা করেন না রজতাভ। ‘রহমত আলি’ মুক্তির ১৪ বছর পর আবার দু’জনে ‘শাস্ত্রী’ ছবিতে কাজ করছেন। রজতাভ বললেন, “মনে আছে, একটা ছবিতে আমাকে কয়েক লাইন লিখে দিয়েছিলেন মিঠুনদা। এখনও যত্ন করে রেখে দিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে নানা অনুষ্ঠানেও আমাদের দেখা হয়। দাদা সুস্থ থাকুন, এটাই চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy