বিয়ের মরসুম চলছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালি বিয়েতে আচার এবং রীতিনীতিতেও এখন পরিবর্তন এসেছে। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে এই বদলে যাওয়া প্রথার সমালোচনা করেন অভিনেতা ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই অভিনেতার দিকে একের পর এক কটাক্ষ।
তার আগে জানা প্রয়োজন ফেসবুকে ভাস্কর ঠিক কী লিখেছিলেন। অভিনেতা তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘‘আমরা খুব দ্রুত এ কোথায় নামছি (না কি উঠছি!)...!! বিবাহ আমাদের একটা সনাতন প্রথা...একটা সংস্কার....ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি...। সেটা এখন একটা প্রহসনে রূপান্তরিত হয়েছে...।’’ এরই সঙ্গে বাঙালি বিয়েতে মেহন্দি, সঙ্গীতের মতো ‘বিদেশি’ রীতি এবং প্রকাশ্যে চুম্বনের অনুপ্রবেশ নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন ভাস্কর। বৈদিক মতে বিয়ে নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। অভিনেতার যুক্তি, ‘‘মানছি যুগ পাল্টেছে....কিন্ত সেটা সুস্থ না হলে সেই পরিবর্তনের কোনও সুফল আছে কি?’’
ভাস্করের মতে, নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার তাগিদেই এই পরিবর্তন। কিন্তু তার ফলে সমাজে বিবাহবিচ্ছেদও বেড়েছে। আগামী প্রজন্ম প্রসঙ্গে তাঁর আশঙ্কার কথা জানাতে ভাস্কর লেখেন, ‘‘আগামী প্রজন্ম একটু এগিয়ে ফুলশয্যার বিষয়টাও প্রকাশ্যেই আনবে...সেটা আশা করি মেনে নেবেন...!’’
আরও পড়ুন:
ভাস্করের পোস্ট নিয়ে নেটাগরিকেরা আপাতত দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। একের পর এক কটাক্ষের শিকার হয়েছেন অভিনেতা। সম্প্রতি টলিপাড়ার একাধিক তারকা বৈদিক মতে বিয়ে করেছেন। সমাজমাধ্যমে অনেকেই দাবি করেন, ভাস্করের নিশানায় আসলে সেই তারকারা রয়েছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা বললেন, ‘‘কাউকে ব্যক্তিগত আঘাত করার কোনও ইচ্ছে আমার নেই। আমার বক্তব্যের সঙ্গে অনেকের নামও জড়ানো হচ্ছে! মুশকিল হচ্ছে, আমি যা লিখিনি, সেটাও এখন দেখছি আমার মুখে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে!’’
ভাস্করের মতে, বাঙালি বিয়ের এই পরিবর্তনকে ভাস্কর ‘সামাজিক ব্যধি’ হিসেবেই উল্লেখ করতে চাইছেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত প্রাচীন। একটা সময় ছিল, সারা দেশ বাংলাকে অনুসরণ করত। আর এখন আমরা বাকিদের অনুকরণ করছি! অন্য কোনও জাতি তো এ রকম করে না।’’ অনুকরণ প্রসঙ্গেই টলিপাড়ার দিকে ফিরলেন ভাস্কর। বললেন, ‘‘মুম্বইয়ের নায়কদের এক রকম প্রথা রয়েছে। আবার দক্ষিণী নায়কেরা তাঁদের সংস্কৃতি থেকেই পর্দায় উঠে আসেন। কিন্তু বাঙালি নায়কদের এখন অবাঙালি বলেই মনে হয়।’’
ভাস্কর জানেন সমাজমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করলে, পক্ষে-বিপক্ষে মতামত আসতেই পারে। তবে কটাক্ষ আসায় চুপ থাকার পাত্র তিনি নন। বললেন, ‘‘আলোচনায় বসলে ভিন্ন মত আসতেই পারে। কিন্তু সেখানেও যেন শালীনতার মাত্রা অতিক্রম না করা হয়, সেটা দেখা উচিত। আমি কিন্তু প্রত্যেককে উত্তর দিয়েছি। যাঁদের যুক্তি নেই, তাঁরা ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। এটা প্রত্যাশিত ছিল।’’ তবে মন্দের ভাল, বিয়ে নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণকে অনেকে সমর্থনও জানিয়েছেন। ভাস্কর বললেন, ‘‘বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু আমাকে সমর্থন করেছে। সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টায় আমার বেশ মজা লেগেছে।’’