অঙ্কিতা চক্রবর্তী।
২১-এর নির্বাচনের একটা করে দিন পেরোচ্ছে। বাংলা আর রাজ্যবাসী উত্তেজনায় টানটান। প্রতি মুহূর্তে ‘কী হয় কী হয়’ ভাব। ঠিক এই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের অতীত আর বর্তমানের ভোট চিত্র এক ফ্রেমে ধরার চেষ্টা করলেন অভিনেত্রী অঙ্কিতা চক্রবর্তী। মেলাতে পারলেন?
আক্ষরিক অর্থেই যেন হতাশ তিনি, ‘‘আমার ছোট বেলায় ভোট ছিল উৎসব। পাড়া জুড়ে উত্তেজনা। এলাকার কাকুরা, দাদারা পোস্টার সাঁটাচ্ছেন। দেওয়াল লিখছেন সারা রাত ধরে।’’ আর এখন? অভিনেত্রীর মতে, উৎসবকে আতঙ্ক গ্রাস করেছে!
তখন ভোটের দিন কী হত? অঙ্কিতা বললেন, ‘‘উত্তেজনা ছিল। তার মধ্যেই সবাই এক সঙ্গে ক্লাবে বা পাড়ার মোড়ে বসে আড্ডাও মারছেন।’’ তাঁর দাবি, এই ছবি এখনও কমবেশি তিনি দেখতে পান নিজের পাড়ায়। তা হলে বদলালো কী? অঙ্কিতার মতে, উত্তেজনা বদলে গিয়েছে আতঙ্কে। এবং সেটা শুধুই রাজনৈতিক হত্যা বা নিরাপত্তাহীনতা নয়। বন্ধু হারানো, পরিবারের সদস্য কমে যাওয়ার সংখ্যা এখন যেন প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কিত করে তুলছে সবাইকে। কেমন সেটা? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন তিনি, ‘‘ধরুন, গত রাতেই এক বন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে সুখদুঃখের আলোচনা সারলাম। সে-ই হয়তো এই ভোটের বাজারে সকালে ঘুম থেকে উঠে গত কালের দুঃখের সঙ্গে আড়ি করে সুখের ঘরে ভাব জমালো। অর্থাৎ দল বদলে ফেলল।’’ ফলাফল? মনখারাপ। পরিবার থেকে এক জন সদস্য কমে গেলে সত্যিই মনখারাপ হয়, দাবি অভিনেত্রীর। যদিও তিনি নাম নেননি কারওর। তবে এই অভিজ্ঞতা তাঁরও হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছেন ইঙ্গিতে।
অঙ্কিতার আরও অভিযোগ, এই আতঙ্ক, পলকে দলবদলের এই হিড়িকের পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধা-সম্মান, বিশ্বাস, শালীনতার মাত্রাজ্ঞান নষ্ট হতে বসেছে। তাঁর দাবি, ক্রমশ এই সমস্যা সমাজে গেঁথে বসছে। এক্ষুণি একে আটকানো না গেলে আগামীর ভবিষ্যত সত্যিই ভয়ঙ্কর।
‘‘তারকাদের রাজনীতিতে যোগদান আমার কখনওই খারাপ লাগে না’’, এ কথাও জানিয়েছেন অঙ্কিতা। তবে তাঁর মতে, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে সেই দলের রাজনৈতিক কাজকর্মের সঙ্গে পরিচিত হওয়া দরকার, ‘‘কম করে ৪ বছর দলের আদর্শকে জানুন। নিজেকে সেই আদর্শের উপযুক্ত করে গড়ে তুলুন। লোকের সঙ্গে মিশুন। তাঁদের সমস্যার কথা জানুন। তার পর পা রাখুন।’’ কেন? তাঁর যুক্তি, নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করা মানে তাঁকে মানুষের সমস্যার কথা বিধানসভা বা লোকসভাতে তুলে ধরতে হবে। হোমওয়র্ক করা থাকলে প্রার্থীর কাজ করতে সুবিধে হয়।
বর্তমানে জনসভায় ভাষার অপ-প্রয়োগ মারাত্মক। শালীনতার গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে পারস্পরিক আক্রমণের ভাষা। এ বিষয়ে তাঁর কী মত? ‘‘কু-ভাষা ব্যবহার শুধু রাজনীতি কেন! সব ক্ষেত্রেই আজকাল শুনতে পাচ্ছি’’, সাফ জবাব অঙ্কিতার। এখনকার বেশকিছু নাটকেও নাকি অশালীন ভাষার প্রয়োগ তিনি দেখছেন। তাই ভাষার সংযমের দিকে সবার আগে নজর ফেরানো দরকার, দাবি অভিনেত্রীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy