বাড়ি ভীষণ ভালবাসেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। সদ্য নতুন বাড়ি করেছেন। শনিবার অন্দরমহলের ছবি অভিনেত্রীর সামাজিক পাতা জুড়ে। ছবি বলছে, খুব যত্ন নিয়ে সাজিয়েছেন প্রতিটি ঘর। কাকতালীয় ভাবে প্রেম দিবসে প্রকাশ্যে তাঁর আগামী ছবি ‘গৃহস্থ’-এর টিজ়ার। সেখানে ঋতাভরী অভিনীত ‘অপর্ণা’ চরিত্রটি ভীষণ ঘরকুনো। বাড়ি থেকে বেরোতেই চায় না! বাস্তব আর কাল্পনিক চরিত্র কি রুপোলি পর্দায় একাকার? আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছিল অভিনেত্রীর কাছে। তিনি জানিয়েছেন, দরকারে বাড়িতে থাকতে ভালই বাসেন তিনি।
আরও পড়ুন:
এসকে মুভিজ়ের আগামী ছবি ‘গৃহস্থ’তে সেই চেনা মৈনাক ভৌমিক। সম্পর্ক আর রোমাঞ্চ দিয়ে বুনেছেন তাঁর আগামী ছবি। যেখানে প্রতি মুহূর্তে কী কী উত্তেজনা, গা ছমছমে রহস্য। টিজ়ার দেখে অনেকেই ঋতাভরীকে ‘খুনি’ ভেবে নিচ্ছেন! সাতটি দিন প্রেমের জন্য ছাড় থাকলেও অলিখিত ভাবে গোটা ফেব্রুয়ারিই যেন ভালবাসার মরসুম। আর ঋতাভরী কিনা তাঁর অনুরাগীদের ভয় দেখাচ্ছেন! কেন? অভিনেত্রী হাসতে হাসতে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন, “প্রেমের চেয়ে ভয়ঙ্কর আর কী হতে পারে? ঠিকঠাক প্রেম না হলে হৃদয় ভাঙে, ঘর ভাঙে, সংসার তছনছ, মানুষের জীবন নষ্ট!” একটু দম নিয়েই ফের অনর্গল, “এমন একজন কাউকে দেখাতে পারবেন, অন্তত এক বার যাঁর প্রেম ভাঙেনি! আমি তো জানি না।”
একই ঘটনা পর্দার ‘অপর্ণা’র সঙ্গেও ঘটেছে। যার জেরে মিশুকে মেয়েটি আচমকা বদলে গিয়েছে। সারা ক্ষণ একমাত্র সন্তানের জীবনহানির শঙ্কায় কাঁটা। ভয়ে ঘরের বাইরে পা রাখতে চায় না। লোকে তাকে ‘পাগলি’ বলে! সেই মেয়েটিই পড়শি হয়ে আসা এক এক মেয়ের জীবন রক্ষা করতে গিয়ে কত বড় অসাধ্যসাধন করেছে— তারই গল্প এই ছবি। “অপর্ণা ঘর থেকে বেরোয় না বলেই সে গৃহস্থ। সেই নামে ছবির নাম”, দাবি ঋতাভরীর। ছবিতে তিনি ছাড়াও আছেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ দাস, সাহেব ভট্টাচার্য, অনুষা বিশ্বনাথন-সহ আরও অনেকে। বিদেশে পুরো ছবির শুটিং হয়েছে। অভিনেত্রীর দাবি, ছকভাঙা কিছু করবেন— এই ভাবনা গোটা দলের ছিল। তাই প্রত্যেকে মানসিক দিক থেকে জড়িয়ে পড়েছিলেন ‘গৃহস্থ’-র সঙ্গে। যেমন, মৈনাক পরিচালনার পাশাপাশি লাইট দেখেছেন। ঋতাভরী অভিনয়ের পাশাপাশি পোশাক বা দৃশ্যে ব্যবহৃত মুখোশ বেছে জোগাড় করেছেন। অ্যাকশন দৃশ্যে সকলের অভিনয় কেমন হবে, তার পরামর্শ দিয়েছেন সাহেব।

‘গৃহস্থ’ ছবির দৃশ্যে ঋতাভরী চক্রবর্তী।
সিনেবোদ্ধাদের মতে, সম্ভবত ‘বহুরূপী’তে ‘পরী’ চরিত্র দিয়ে পর্দায় জটিল মনস্তাত্ত্বিক চরিত্রে অভিনয়ের হাতেখড়ি ঋতাভরী। টিজ়ার বলছে, ‘গৃহস্থ’ও প্রায় একই ধাঁচের। আগের সেই ‘বাবলি গার্ল’ ঋতাভরী কি উধাও? আর ফিরবে না সে?
প্রশ্ন শুনে বড় করে শ্বাস নিয়েছেন অভিনেত্রী। জানিয়েছেন, ‘গৃহস্থ’ উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার ছবি ‘বহুরূপী’র আগে নির্মিত। চরিত্র দুটোয় ফারাক রয়েছে। যেমন, নতুন ছবিতে ‘অপর্ণা’ মানসিক আঘাতে বদলে গিয়েছে। সে মানসিক রোগী নয়। ‘বহুরূপী’র ‘পরী’ কিন্তু বাইপোলার ডিজ়অর্ডার এবং স্ক্রিৎজ়োফ্রিনিয়ার শিকার। তাকে ওষুধ খেয়ে সুস্থ থাকতে হয়। তবে দুটো চরিত্রেই যে জটিল মানসিক অবস্থার ছোঁয়া রয়েছে এবং চরিত্র দুটো তাঁকে নিংড়ে নিয়েছে, মনের উপরে চাপ এবং ছাপ ফেলে গিয়েছে, তা অস্বীকার করেননি। “হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য যে সিরিজ়ে অভিনয় করছি, তাতে আমি বিধবার চরিত্রে। পরের আর একটি ছবিতেও তাই-ই। নাগাড়ে এই ধরনের চরিত্র করতে ভাল লাগে? আগের মতো হাসিখুশি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। পটের বিবি সেজে নায়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতেও আপত্তি নেই। কিন্তু কোথাও বোধ হয় পরিচালকদের চোখে আমি আগের তুলনায় পরিণত হয়ে গিয়েছি। যার জেরে তাঁরা মনে করছেন, শক্ত চরিত্র, তাতে মনস্তত্ত্বের প্রলেপ মানেই ঋতাভরী!”

শুটিংয়ের ফাঁকে ঋতাভরীর সঙ্গে পরিচালক মৈনাক ভৌমিক।
অভিনেত্রীর মতে, পরিচালকদের এই ভাবনা একাধারে তাঁর জন্য আশীর্বাদ এবং অভিশাপও। নিত্যনতুন কঠিন ও জটিল চরিত্রে অভিনয়ের খিদে বাড়ছে তাঁর। সম্পর্কের নানা স্তর এই ধারার চরিত্রের মাধ্যমে আবিষ্কার করতে পারছেন। দর্শকও ইদানীং তাই বদলে যাওয়া ঋতাভরীকে দেখতেই আগ্রহী।