Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘হাত খালি থাকলে অস্বস্তি হবেই’

জানুয়ারিতেই রিলিজ় করেছিল ‘বিজয়া’, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’। তার পর একে একে ‘তৃতীয় অধ্যায়’, ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’, ‘বর্ণপরিচয়’।

আবীর। ছবি: দেবর্ষি সরকার

আবীর। ছবি: দেবর্ষি সরকার

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

গত বছর শুট করা পাঁচটি ছবি মুক্তি পেয়েছে এ বছরের গোড়ায়। কিন্তু গত আট মাস ধরে তিনি নতুন কাজের অপেক্ষায়। এটি বৈপরীত্যের সহাবস্থান না কি ধাঁধা? নামটা যখন আবীর চট্টোপাধ্যায়, তখন একটু সত্যান্বেষণ করতে হয় বইকি।

জানুয়ারিতেই রিলিজ় করেছিল ‘বিজয়া’, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’। তার পর একে একে ‘তৃতীয় অধ্যায়’, ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’, ‘বর্ণপরিচয়’। যদিও সব ক’টি ছবিই গত বছর শুট করেছিলেন আবীর। এবং এর মধ্যে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ বাদে বাকিগুলি সফল নয়।

কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু প্রশ্ন উঠছে। এ বছর পাভেলের ‘অসুর’ ছাড়া কোনও ছবির কাজ করেননি আবীর। গত দু’বছর ধরে অভিনেতা যে ভাবে তাঁর কেরিয়ারের জমি তৈরি করেছেন, তাতে এ পরিস্থিতি হজম করা তাঁর পক্ষে কঠিন! ‘‘আট মাস কাজ করিনি, তা নয়। ফেব্রুয়ারিতে ‘দুর্গেশগড়...’-এর কিছু শুট ছিল। তার পর রিলিজ় নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। অগস্ট থেকে ‘অসুর’-এর কাজ শুরু করলাম। সব কিছুরই ভালমন্দ থাকে। ২০১৬ সালেও ছ’মাস কাজ করিনি। এই সময়টা অন্য ভাবে কাজে লাগালাম। শুটিং, রিলিজ়ের চাপে নিজের জন্য সময় হয় না। অনেক নতুন স্ক্রিপ্ট পড়েছি,’’ যুক্তি আবীরের।

তাঁর মতো তারকার হাতে কাজ নেই? ‘‘হাত খালি থাকলে অস্বস্তি হবেই, এটা আমি অস্বীকার করব না। মন খুঁতখুঁত করে,’’ অকপট অভিনেতা। এক বার আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারেই বলেছিলেন, ‘‘হাতে অনেক ছবি আছে ভেবে যে দিন নিশ্চিন্ত হয়ে বসে যাব, সে দিনই কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে।’’ সে কথা তিনি এখনও মানেন। বলছিলেন, ‘‘হাতে ছবি থাকলে নিশ্চিন্ত লাগে। ছবি পিছোলে সমস্যা নেই। কিন্তু সব ঠিক হয়েও প্রজেক্ট বাতিল হলে মন খারাপ হয়।’’

এসভিএফ-এর দুই স্তম্ভ ছিলেন আবীর এবং যিশু সেনগুপ্ত। কিন্তু বছরের শুরুতেই পরিস্থিতি বদলায়। শ্রীকান্ত মোহতা গ্রেফতার হওয়ার পরে এসভিএফ ছবির সংখ্যা কমিয়ে দেয়। যিশু বলিউডে কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও, আবীরকে এখানে ভাল চিত্রনাট্যের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তার মধ্যেই অঞ্জন দত্তর ‘অপারেশন রাইটার্স’ চূড়ান্ত হয়েও বাতিল হয়। ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছবিও বাতিল হয়। আগাথা ক্রিস্টির একটি কাহিনির ভিত্তিতে ছবির পরিকল্পনা করেছিলেন ধ্রুব। অনুমতি না নিয়েই দু’জন চিত্রনাট্যকারকে দিয়ে দুটো ভিন্ন স্ক্রিপ্টও লিখিয়ে ফেলা হয়। মোক্ষম সময়ে স্বত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, অনুমতি পাওয়ার চেষ্টা করা হলেও তা মেলেনি। মৈনাক ভৌমিকের সঙ্গে একটি ছবির কথা ছিল আবীরের। সে ছবিরও হদিশ নেই। ‘‘হাতে কাজ নেই বলে, যে কোনও ছবি করে ফেলব এমন নয়। অপেক্ষা করতে ক্ষতি নেই। এসভিএফ-এর সঙ্গেই আরও একটি চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনা হয়েছিল কিন্তু ব্যাপারটা শেষমেশ জমেনি।’’ ব্যোমকেশ বক্সীর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত। যা অরিন্দম শীলের বদলে বিরসা দাশগুপ্তর পরিচালনা করার কথা। কিন্তু সে ছবিও বিশ বাঁও জলে।

এই মুহূর্তে আবীরের সব ক’টি ছবিই এসভিএফ-এর বাইরে। ‘অসুর’ ছাড়াও রয়েছে সোহিনী সরকারের সঙ্গে ‘আগন্তুক’, অরিন্দম শীলের ‘মায়াকুমারী’। সুরিন্দর ফিল্মসের সঙ্গেও কথাবার্তা হয়েছে তাঁর। জিতের প্রযোজনা সংস্থাতেই আরও একটি ছবির কথা হয়েছে। ‘‘কিছু নতুন পরিচালকের সঙ্গে কথা চলছে। ওয়েব সিরিজ়ের প্রস্তাবও ছিল। স্টোরিলাইন পছন্দ না হলে কোনও কাজ করব না।’’

যাঁরা এসভিএফ-এ নিয়মিত কাজ করেন, বাইরে কাজ করতে হলে তাঁদের সংস্থা থেকে অনুমতি নিতে হয়। আবীরের সঙ্গে অবশ্য সে রকম কিছু হয়নি। এত দিন তিনি এবং যিশু একচ্ছত্র রাজপাট চালিয়েছেন। এখন দেব ফিরে এসেছেন তাঁর পুরনো ক্যাম্পে। এটা কি আবীরকে একটুও ভাবাচ্ছে না? ‘‘দেবের ফিরে আসাটা সময়ের অপেক্ষা ছিল।’’ কিন্তু ধ্রুবর সঙ্গে দু’টি হিট ছবি দেওয়ার পরে তো আশা করতেই পারেন, এই ছবিতেও আপনাকে কাস্ট করা হোক? ‘‘প্রশ্নটা তো হাইপথেটিক্যাল হয়ে গেল! একটা বড় ছবির জন্য বড় মাউন্টিং, বড় স্টার প্রয়োজন। ধ্রুব সব কিছু খুব লার্জ স্কেলে ভাবে,’’ জবাব অভিনেতার। এ তো প্রতিদ্বন্দ্বীকে সার্টিফিকেট দিয়ে দিলেন! ‘‘না দেওয়ার কী আছে! দেবকে এই ছবির জন্য প্রয়োজন মনে হয়েছে, নিয়েছে। আমাকে প্রয়োজন হলেও নিশ্চয়ই বলবে,’’ এ বারেও অকপট আবীর।

অন্য বিষয়গুলি:

Abir Chatterjee Actor Bengali Film
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE