প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আজীবনের অভিমান অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের। বড় পর্দার জন্য সব চেয়ে প্রিয় ফুটবল খেলা ছেড়েছিলেন। সেই বড় পর্দা এক সময় তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়েছিল। অপুর সংসার রিয়্যালিটি শো-তে সঞ্চালক শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে দুঃখ করেছিলেন, স্বাক্ষর করা ১২টি ছবি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাঁর থেকে। স্বাক্ষর না করা আরও ১২টি ছবি থেকেও বাদ পড়েছিলেন তিনি। ঈশ্বর সম্ভবত তাঁর যন্ত্রণা বুঝেছিলেন। তাই যাওয়ার আগে বড় পর্দায় ফের নায়ক হয়েই ফিরছিলেন তিনি। রানা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পঞ্চভুজ’ ছবিতে তিনিই মুখ্য অভিনেতা ‘রাঘব’। তাঁকে ঘিরে থাকবেন সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। খুব শিগগিরিই মুক্তি পেতে চলেছে ছবির পোস্টার, গান। প্রযোজনায় সৌমেন চট্টোপাধ্যায়।
বহু দিন পরে আবারও ছায়াছবিতে তিনি। ছবির গল্প কেমন? কী ধরনের চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে?
আনন্দবাজার অনলাইন জানতে চেয়েছিল পরিচালক রানা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাঁর কথায়, ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র রাঘব পঞ্চভুজ আশ্রমের বাসিন্দা। আশ্রমটি শহর থেকে অনেক দূরে। সঙ্গে থাকেন তাঁর মতোই আরও কিছু মানুষ। আর থাকে এক দল অনাথ ছেলে-মেয়ে। যারা ওই আশ্রমের স্কুলে লেখা-পড়া শিখে মানুষ হচ্ছে। রাঘব-এর ভাবনা অনুসরণ করে, এগিয়ে চলতে থাকে ‘পঞ্চভুজ’। পড়াশোনার পাশাপাশি আশ্রমিকেরা ব্যস্ত নানা ধরনের হাতের কাজ নিয়েও। তার মধ্যেই আচমকা সামনে আসে রাঘবের একান্ত ব্যক্তিগত কিছু সঙ্কট। তাকে অতিক্রম করেই কি এগিয়ে যেতে পারবে সে? আপাতত এর বেশি গল্প ভাঙতে নারাজ পরিচালক।
দীর্ঘ দিন পরে ফের বড় পর্দায় ফিরছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন অভিষেক। তবে শারীরিক সমস্যা মাঝেমধ্যেই সেই উৎসাহে বাদ সাধত। যেমন পরিচালক জানিয়েছেন, চিত্রনাট্য অনুযায়ী নৌকোয় ওঠা বা সেখানে বসার দৃশ্য ছিল। সেই সব দৃশ্যে বেশ কষ্ট করে কলতে হয়েছে তাঁকে। কারণ, তাঁর পায়ের সমস্যা। তা সত্ত্বেও তিনি সবটাই করেছেন ভীষণ উপভোগ করে। পরিচালক সারা ক্ষণ ওঁকে জড়িয়ে ধরে থাকতেন। আজ তাঁর আফশোস, বুঝতেই পারেননি সেটাই হবে তাঁর শেষ আলিঙ্গন।
একই কথা শোনা গিয়েছে ধারাবাহিক ‘অপরাজিতা অপু’র ‘আন্টি নম্বর ১’ সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও। ছবিতে তিনি অভিষেকের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। পেশায় মনরোগ বিশেষজ্ঞ। অভিষেক তাঁকেই নিজের স্ত্রী, প্রেমিকা হিসেবে জানেন। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় স্মৃতিতে গলা বুঁজে এসেছে তাঁর, ‘‘টলিউডের ‘কার্তিক ঠাকুর’ ছিলেন মিঠুদা। ওঁর বিপরীতে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে থাকতেন নায়িকারা। তাঁর শেষ ছবির নায়িকা আমি। শুনেই প্রচণ্ড আনন্দিত হয়েছিলাম। পরে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, ওঁর মতো ভদ্র, বিনয়ী, অমায়িক মানুষ ইন্ডাস্ট্রিতে খুব কমই হয়।’’
টলিউড নিয়ে কোনও অভিযোগ ছিল তাঁর? সোমার দাবি, অভিমান ছিল। তবে ছোট পর্দার মাধ্যমে প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন তিনি। নতুন করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন সারা বাংলায়। অভিনেত্রীর আফশোস, ‘‘এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার বয়স হয়নি। আমরাও বুঝতে পারিনি, বড় পর্দায় ফিরে আসার মুহূর্ত নিজের চোখে দেখে যেতে পারবেন না মিঠুদা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy