ফাইল চিত্র
বলিউডের প্রায় সব পরিচালকই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে হাত পাকাচ্ছেন। তবে সেখানে এক্সপেরিমেন্টের বদলে যে জ়ঁরে তাঁরা মাস্টার, সেটাকেই এ দিক-ও দিক করে নামিয়ে দিচ্ছেন। হয়তো সেটা তাঁদের সিগনেচার বলে চাহিদাটা তৈরি হয়েছে। হটস্টারে সদ্য রিলিজ় করেছে ‘স্পেশ্যাল অপস’। এই সিরিজ়ের ক্রিয়েটিভ উপদেষ্টা নীরজ পাণ্ডে। পরিচালকের ‘বেবি’ ছবিটিকে যদি সিরিজ়ের আকারে পরিবেশন করা যায়, তা হলে সেটাই ‘স্পেশ্যাল অপস’।
বিদেশি এসপিয়নেজ ড্রামা বা স্পাই ড্রামা যাঁরা গুলে খেয়েছেন, তাঁদের কাছে নীরজের এই পরিবেশনা ততটা চমক তৈরি করবে না। কিন্তু ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় পরিচালকেরা এর মধ্যে যত কনটেন্ট নিয়ে এসেছেন, তার মধ্যে ‘স্পেশ্যাল অপস’ একটা মাত্রায় পৌঁছতে পেরেছে।
ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি র-এর প্রধান হিম্মত সিংহ (কে কে মেনন)। ২০০১ সালে পার্লামেন্টে হওয়া হামলায় পাঁচ জন জঙ্গি মারা গেলেও, হিম্মতের বিশ্বাস ষষ্ঠ একজন আছে। এবং সে-ই মাস্টারমাইন্ড। ১৯ বছর ধরে ইখলাখ খানের খোঁজ চালিয়ে যেতে থাকে হিম্মত। গোটা বিশ্বে বিশেষত মধ্য প্রাচ্যে ছড়িয়ে রয়েছে তার বিশ্বস্ত এজেন্টরা। ভারতে সন্ত্রাসবাদ রোধে তাদের চালনা করে চলেছে হিম্মত। তবে ইখলাখের খোঁজকে ভিত্তি করেই সিরিজ়টি মূলত এগোতে থাকে।
যেহেতু সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়েই এই স্পাই থ্রিলার, তাই সেখানে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের একটা আবহ থাকেই। এই জায়গাটা খুব চতুর ভাবে সামলানো হয়েছে। হিম্মতকে ক্রমাগত সাহায্য করে চলা দিল্লি পুলিশের আব্বাস (বিনয় পাঠক) বা এজেন্ট ফারুকের চরিত্রটি মুসলিম। তাই ‘স্পেশ্যাল অপস’ কখনওই ইসলাম-বিরোধী হয়ে ওঠেনি।
সিরিজ়ের সৃজন নীরজের এবং তিনি অল্টারনেট এপিসোড নির্দেশনার দায়িত্বে। অন্যান্য এপিসোড পরিচালনা করেছেন শিবম নায়ার। যিনি এর আগে নীরজের ব্যানারে ‘নাম শাবানা’র পরিচালনা করেছেন।
গড়ে ৫০ মিনিট করে আটটি এপিসোড। প্রতিটি এপিসোড যে সমান ভাবে টানটান, তা নয়। সব এজেন্টদের পরীক্ষা নিতে থাকার জায়গাগুলো একঘেয়ে। কিন্তু চমকে দেওয়ার মতো বেশ কিছু জায়গা রয়েছে সিরিজ়ে। নন লিনিয়র স্টাইল স্পাই সিরিজ়ের জন্য একেবারে আদর্শ কথন ভঙ্গি। র-এর অডিটের বিষয়টি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই সিরিজ়ে। স্পাই সিরিজ় রুদ্ধশ্বাস হওয়াই কাম্য, বিশেষত যেখানে এপিসোড ব্রেক হচ্ছে। সেখানে টানটান ব্যাপারটা ধরে রাখলেও ঘটনা পরম্পরায় অনেক মিল রয়ে গিয়েছে।
হিম্মতের নিযুক্ত পাঁচ জন এজেন্টের কর্মকাণ্ড দিয়েই সিরিজ় এগোতে থাকে। এজেন্টদের ব্যাকগ্রাউন্ডও এই সিজ়নে বিশেষ খোলসা করা হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই নির্মাতারা হাতের সব ক’টি তাস এত দ্রুত খেলতে চান না। কে কে মেননের সঙ্গে প্রায় সমান্তরাল জায়গা পেয়েছেন কর্ণ ট্যাকর (ফারুক)। এই সিরিজ়ের হিরো ফারুকের চরিত্রটিই। হয়তো আগামী সিজ়নে অন্য চরিত্রকে তুলে ধরবেন নির্মাতারা।
বলিষ্ঠ চরিত্রাভিনেতা নেওয়ার সুবিধে হল, অনাড়ম্বর অভিনয়। কে কে মেনন, বিনয় পাঠক, কর্ণ ট্যাকর এবং ছবির খলনায়ক সাজ্জাদ দেলাফ্রুজ় সকলেই চরিত্র অনুযায়ী পারফর্ম করেছেন।
স্পাই ড্রামার মধ্যে শুধু ধর-পাকড় খেলা চললে বিষয়টা একপেশে হয়ে যায়। এখানে হিম্মতের পারিবারিক দিকও খানিকটা উঠে এসেছে। কিন্তু ‘ফ্যামিলি ম্যান’-এ আবেগের সঙ্গে থ্রিলারের যতটা মিলমিশ ছিল, সে তুলনায় ‘স্পেশ্যাল অপস’ খানিক পিছিয়েই থাকবে। পিছিয়ে থাকবে স্পাই অপারেশনের অন্যতম ভাল সিরিজ় ‘ফওদা’র থেকেও। কিন্তু স্মার্ট এবং ফাঁকফোকরহীন পরিবেশনের জায়গা থেকে ‘বার্ড অব ব্লাড’-এর চেয়ে ‘স্পেশ্যাল অপস’ অনেকটাই এগিয়ে থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy