Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Extraction

অ্যাকশনেও মাহাত্ম্য প্রমাণিত হল না

মুম্বইয়ের এক ড্রাগ মাফিয়ার (পঙ্কজ ত্রিপাঠী) কিশোর ছেলে অভিকে (রুদ্রাক্ষ জয়সওয়াল) অপহরণ করে তার বাবার কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশের আর এক ড্রাগ মাফিয়া আমির আসিফ (প্রিয়াংশু পাইনুলি)।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০৬:২৩
Share: Save:

ক্রিস হেমসওয়র্থ, স্যাম হারগ্রেভ, ঢাকা, নেটফ্লিক্স, লকডাউন... গত বছর যখন ‘এক্সট্র্যাকশন’-এর শুটিং চলছিল, তখনও শেষ শব্দটি কারও কল্পনায় ছিল না। তবে লকডাউন এই ছবির জন্য শাপে বর। স্যাম হারগ্রেভ পরিচালিত প্রথম ছবি ‘এক্সট্র্যাকশন’ ছবি হিসেবে সাধারণ এবং সারবত্তাহীন। তবে বিশ্বজোড়া দর্শকের এই ছবি ঘিরে উন্মাদনা কম ছিল না!

সুপারহিরো ছবির দীর্ঘ দিনের স্টান্ট ডিরেক্টর স্যাম। এবং মিলেনিয়ালদের ফেভারিট ক্রিস ‘থর’ হেমসওয়র্থ। কিন্তু যখন সুদূরের সুপারহিরোকে ঢাকার রাস্তায় নিয়ে এসে দাঁড় করালেন পরিচালক, তখনও তিনি ইউনিফর্ম ছাড়া অতিমানব! তাতে অবশ্য ক্ষতি ছিল না। কিন্তু ছবির চিত্রনাট্য বড়ই নড়বড়ে। একটি গ্রাফিক নভেলের আদলে জো রুশো, অ্যান্ডি পার্কস এবং অ্যান্থনি রুশোর লেখা চিত্রনাট্য এতটাই মেদহীন যে, ক্রিসের বাইসেপসও তাতে বিশেষ প্রাণ ঢালতে পারেনি।

মুম্বইয়ের এক ড্রাগ মাফিয়ার (পঙ্কজ ত্রিপাঠী) কিশোর ছেলে অভিকে (রুদ্রাক্ষ জয়সওয়াল) অপহরণ করে তার বাবার কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশের আর এক ড্রাগ মাফিয়া আমির আসিফ (প্রিয়াংশু পাইনুলি)। জেলবন্দি মহাজনের টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তবে ছেলেকে বাঁচাতে তার সিন্ডিকেট নিয়োগ করে টাইলার রেককে (ক্রিস হেমসওয়র্থ)। সঙ্গে নিজের পরিবারকে বাঁচাতে মিশনে যোগ দেয় মহাজনের ডেপুটি সাজু (রণদীপ হুডা)। তবে দু’ঘণ্টার কয়েক মিনিটের কম এই ছবিতে অ্যাকশন ও স্টাইলাইজ়েশন ছাড়া আর কিছুই নেই। কিছু ক্ষেত্রে ছবির গতিও মন্থর। ছবির বেশির ভাগ সংলাপ বাঙাল ভাষা, হিন্দিতে। তবে ঢাকার বেশির ভাগ বাড়িতে সব সময়ে হিন্দি গান কেন বাজে, তা স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুন:আমি নাচলেও থলথলে শরীরের ভিডিয়োই হত: পরমা

থিমের দিক থেকে ছবিটিকে বেঁধে রেখেছে অপত্য স্নেহ এবং পিতা-পুত্রের কিছু না-বলা সমীকরণ। পঙ্কজ-রুদ্রাক্ষ, রণদীপ ও তার ছেলে এবং ক্রিস ও তার ছ’বছরের মৃত পুত্রের গল্প চোরাস্রোতের মতো বয়ে চলেছে ছবিতে। অভি ও টাইলারের কথোপকথন ছবির মনে রাখার মতো মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি।

এক্সট্র্যাকশন (ওয়েব মুভি)


পরিচালনা:স্যাম হারগ্রেভ


অভিনয়:ক্রিস, রণদীপ, রুদ্রাক্ষ, প্রিয়াংশু, পঙ্কজ


৪.৫/১০

ক্রিস, রণদীপের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছেন রুদ্রাক্ষ। এই ছবির প্রাপ্তি হিসেবে তাঁকে এগিয়ে রাখতেই হয়। সঙ্গে প্রিয়াংশু পাইনুলি। ‘ভাবেশ জোশী সুপারহিরো’র পরে এটি তাঁর বিগ ব্রেক। মাঝে অবশ্য নেটফ্লিক্সের কয়েকটি প্রজেক্টে কাজ করেছেন। হাড়-হিম করা ভিলেন হিসেবে তিনি অসাধারণ না হলেও, নিরাশ করেননি। ক্রিসের সঙ্গে রণদীপের টক্কর দেখতে ভাল লেগেছে। আন্তর্জাতিক তারকার সামনেও রণবীর যে তাঁর মান ধরে রাখতে পারেন, এই ছবি তার প্রমাণ। তবে পঙ্কজ ত্রিপাঠীকে সে ভাবে ব্যবহার করা হয়নি। ছোট চরিত্রে শতাফ ফিগারও মন্দ নন।

‘স্লামডগ মিলিয়নেয়র’-এর রিলিজ়ের সময়ে যে সমালোচনা বারবার উঠে এসেছিল, এ ছবির ক্ষেত্রেও সেই কথাই খাটে। পশ্চিমি চোখে প্রাচ্যের দেশ মানেই বস্তি নয়তো ড্রাগের রমরমা ব্যবসা? এবং তা ঘিরে অন্তর্দ্বন্দ্ব? এর বাইরে কি প্রাচ্যকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা যায় না? এবং দেশের ছেলেকে বাঁচাতে দরকার পড়ে সেই হোয়াইট ম্যানকে! ‘হোয়াইট ম্যানস বার্ডেন’ এই ছবির মূল সুর এবং ছবি-ভাবনার প্রধান স্তম্ভও বটে। যার জন্যই বোধহয় ছবির নামও ‘ঢাকা’ থেকে পাল্টে রাখা হল ‘এক্সট্র্যাকশন’।

ক্রিসের মুখ দিয়ে বাংলা বলিয়ে প্রাচ্যের কোটি কোটি দর্শককে খুশি করতে চেয়েছেন পরিচালক। তবে ফিল্ম মেকিংয়ের শৈলী তাতে প্রমাণ হয়নি। বরং মিমের সংসারে ক্রিস নিজের বাংলার প্রমাণ দিয়েই চলেছেন এখনও পুরোদমে!

আরও পড়ুন: যে চিঠিতে জীবন শিখিয়েছ, আজ সেখানে মৃত্যু শোয়ানো

অন্য বিষয়গুলি:

Extraction Movie Hollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy