Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
68th National Award

68th National Award: জাতীয় সম্মান মনোরোগীদের কাহিনি ‘থ্রি সিস্টার্স’-এর, মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্ব পাক, আশা রত্নাবলী-পুতুলের

তিন বোন জিতে গেলেন। সমাজের চোখরাঙানির,লোকলজ্জার বিরুদ্ধে। অযথা কলঙ্কের বিরুদ্ধে। অঞ্জলির হাত ধরে জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত ‘থ্রি সিস্টার্স’।

‘থ্রি সিস্টার্স’ ৬৮তম জাতীয় পুরস্কার মঞ্চে ‘রজতকমল’ সম্মানে সম্মানিত।

‘থ্রি সিস্টার্স’ ৬৮তম জাতীয় পুরস্কার মঞ্চে ‘রজতকমল’ সম্মানে সম্মানিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ২১:৫৬
Share: Save:

তিন বোন। ২০ বছর আগে মনের অসুখ করেছিল। সেই থেকে তাঁদের ঠিকানা মানসিক হাসপাতাল। নিয়মিত চিকিৎসা চলেছে। সঙ্গে ওষুধও। চিকিৎসকেরা যত্ন নিয়ে দেখাশোনাও করেন। তবু বাড়ির লোকের তাঁদের প্রতি কোনও হুঁশ নেই! যত বার মানসিক হাসপাতাল থেকে ফোন গিয়েছে, তত বার দায়সারা দায়িত্ব পালন করেই নম্বর বদলে ফেলেছেন পরিবারের সদস্যরা।

শেষে এক দিন মরিয়া চেষ্টা অঞ্জলি মানসিক স্বাস্থ্য অধিকার সংগঠনের। বাস ভাড়া করে সবাইকে নিয়ে তিন বোনের বাড়িতে উপস্থিত। কী ঘটেছিল তার পর? সেই গল্প নিয়েই তৈরি সংস্থার ট্রিলজি তথ্যচিত্র ‘লাভ ইন দ্য টাইম অব ম্যাডনেস’। যার দ্বিতীয় ছবি ‘থ্রি সিস্টার্স’ ৬৮তম জাতীয় পুরস্কার মঞ্চে ‘রজতকমল’ সম্মানে সম্মানিত। আনন্দবাজার অনলাইনের ফোনে ছবির প্রযোজক এবং সংগঠনের কর্ণধার রত্নাবলী রায়ের আশা, ‘‘এ বার যদি মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্ব পায়!’’ আশার আলো দেখছেন ছবির পরিচালক পুতুল মেহমুদও। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণের জন্য ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে আরও ভাল লাগবে। খুব ইচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে বড় ছবি বানাই।’’

সরকারি পক্ষ থেকে নয়, রত্নাবলী পুরস্কৃত হওয়ার খবর পেয়েছেন সংবাদমাধ্যম থেকে। শুনে প্রথমে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারেননি! তার পর সংগঠনকে জানাতেই উল্লাস শুরু। অঞ্জলি মানসিক স্বাস্থ্য অধিকার সংগঠনের কর্ণধারের দাবি, ‘‘এই জয় তো একটি বা দু’টি মানুষের নয়! এই জয় আমাদের সবার। তাই সবাই মিলে উচ্ছ্বসিত। অনেক লড়াইয়ের পরে এই জয় এসেছে। এ বার যদি মানসিক স্বাস্থ্য, মনোরোগীদের নিয়ে সাধারণের দৃষ্টি বদলায়।’’

অতিমারির ঠিক আগেই এই ট্রিলজি বানিয়েছিলেন পুতুল আর রত্না। প্রথম ছবি ‘অতসী’ মুম্বই থেকে বিশেষ সম্মান পেয়েছিল। তার দু’বছর পরে জাতীয় পুরস্কার। সরকারি সম্মান পাওয়া ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে দর্শকেরা বেশি আগ্রহী হন। এতে ছবির প্রচারও বেশি হয়। মানসিক রোগীরাও যে সুস্থ হয়ে মূল স্রোতে ফিরতে পারেন, সেই বার্তাও ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ বেশি। পরিচালক, প্রযোজক কি এই পথে হাঁটবেন? পুতুলের মতে, ‘‘আমারও তা-ই ইচ্ছে। বাংলা যদি আমাদের পাশে থাকে, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তা হলে এই স্বপ্নও পূরণ হবে।’’

আর ওই তিন বোন? যাঁরা ২০ বছর ধরে মানসিক হাসপাতালকেই ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন। কী বলছেন তাঁরা? রত্নাবলীর কথায়, শনিবার সকালেই এই খবর পৌঁছে যাবে তাঁদের কাছেও। নিশ্চয়ই তাঁরাও উল্লসিত হবেন বাকিদের মতো। আবদার জানাবেন, ‘‘তা হলে খাওয়াও রত্নাদি!’’

অন্য বিষয়গুলি:

68th National Award Three Sisters documentary film
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE