বাপ্পা চন্দ্রাধূর্য। —ফাইল চিত্র।
বাঁকুড়ার মালিয়াড়া-কাণ্ডে ভোটকর্মীদের পেটানোর ঘটনায় ধরা পড়ল আরও এক ‘ভূত’। সেই ‘ভূত’, যারা ভোটের আগের রাতে (গত রবিবার) বড়জোড়ার মালিয়াড়ায় প্রিসাইডিং অফিসার-সহ চার ভোটকর্মীকে মারধর করেছিল। সব মিলিয়ে ওই ঘটনায় ধৃত পাঁচ। তবে এলাকা ঘুরে হামলার মূল হোতা হিসেবে মালিয়াড়া পঞ্চায়েতের ষে তৃণমূল সদস্যের নাম আনন্দবাজার পেয়েছে, সেই বাপ্পা চন্দ্রাধূর্যের নাগাল পুলিশ এখনও পায়নি। কিন্তু গোটা ঘটনায় তাঁদের অস্বস্তির পারদ যে ক্রমশ চড়ছে, তা মেনে নিচ্ছেন জেলা ও এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
ভোটকর্মীদের উপরে হামলার ঘটনায় শুক্রবার মালিয়াড়ার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী রাজু পালকে গ্রেফতার করা হয়। রাজু এবং আগে ধরা পড়া চার জন— এলাকায় বাপ্পার অনুগামী বলেই পরিচিত। তা হলে বাপ্পা কেন অধরা? এ প্রশ্নে ঘটনার পর থেকেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কিন্তু এ বার প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরেই।
বড়জোড়ার একাধিক তৃণমূল নেতা এ দিন ‘আনন্দবাজার’কে বলেছেন, ‘‘রাস্তাঘাটে দেখা হলে, আত্মীয়, বন্ধুদের অনেকে খোঁচা দিচ্ছেন, তারকাকে (সোহম চক্রবর্তী) ভোটে নামিয়েও কি আমরা হারার ভয় করছি, তাই ভোটকর্মীদেরও মারধর করতে হচ্ছে? কাকে, কী বোঝাব!’’ তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের বড় অংশের দাবি, বাপ্পাকে বড়জোর দলের সক্রিয় কর্মী বলা যায়। কিন্তু ভোটের আগের রাতে তিনি ‘অতিসক্রিয়’ হয়ে ওঠায় দলের অন্দরে অস্বস্তি রয়েছে। পুলিশ এফআইআর নিতে গড়িমসি করেছে বলে অভিযোগ ওঠায় ও বাপ্পা গ্রেফতার না হওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে।
বড়জোড়ার দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা অলক মুখোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি, “বড়জোড়া, মালিয়াড়ার ভোট-সংস্কৃতি এ রকম ছিল না। মালিয়াড়ার ওই ঘটনার পরে মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের।’’ সোহম এ দিন ফোন ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসের। তবে তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট সুখেন বিদ বলেন, “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে লোকসভা, পঞ্চায়েত ভোট পার করেছি। কেউ অনিয়মের অভিযোগ তুলতে পারেনি। কিন্তু এ বার ওই ঘটনাই সব গোলমাল করে দিল!’’ তৃণমূলের উঁচুতলা পর্যন্ত অস্বস্তি যে সংক্রামিত হয়েছে সে ইঙ্গিত মিলেছে, জেলা কোর কমিটির সদস্য তথা জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর কথায়। তিনি বলেন, “আমরাও চাই, সত্য-মিথ্যা যাচাই হোক।’’
বাপ্পার মোবাইলে এ দিন ফোন করা হলে শোনা যায়, ‘কল ফরোয়ার্ড করা হচ্ছে’। তবে তা বলতে বলতেই ছিন্ন হয় সংযোগ। জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, “বাপ্পা পলাতক। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই জালে পড়ে যাবে।’’ ভরসা করতে পারছেন না বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরীর কটাক্ষ, “তৃণমূল করলেই অপরাধের লাইসেন্স পাওয়া যায়। এটাই এখন দস্তুর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy