Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

মাথা কবে ধরা পড়বে, প্রশ্ন মালিয়াড়া-কাণ্ডে

‘ভূত’ ধরার সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বুধবার রাত অবধি ছিল এক। বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই তা হয়ে গেল চার! বাঁকুড়ার জেলাশাসকের ‘ধাতানি’ পড়তেই ভোটের আগের রাতে বড়জোড়ার মালিয়াড়ায় বুথে প্রিসাইডিং অফিসার-সহ চার ভোটকর্মীকে মারধর করা ‘ভূতে’দের ধরতে উঠেপড়ে লেগেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৪
Share: Save:

‘ভূত’ ধরার সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বুধবার রাত অবধি ছিল এক। বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই তা হয়ে গেল চার! বাঁকুড়ার জেলাশাসকের ‘ধাতানি’ পড়তেই ভোটের আগের রাতে বড়জোড়ার মালিয়াড়ায় বুথে প্রিসাইডিং অফিসার-সহ চার ভোটকর্মীকে মারধর করা ‘ভূতে’দের ধরতে উঠেপড়ে লেগেছে পুলিশ। সেই পুলিশ যারা ঘটনার রাতে প্রিসাইডিং অফিসারের মুখ থেকে সব শুনেও এফআইআর পর্যন্ত নিতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ।

তবে, এলাকা ঘুরে আনন্দবাজার বুথে হামলার মূল হোতা হিসাবে যাঁর নাম পেয়েছে, সেই মালিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বাপ্পা চন্দ্রাধূর্য এখনও অধরা। যার ফলে বিরোধীদের প্রশ্ন, পুলিশ এখনও চুনোপুঁটিকেই ধরেছে। আদৌ তৃণমূল নেতা বাপ্পাকে পুলিশ ধরবে কি? এ ক্ষেত্রে অনেকেই গত লোকসভা নির্বাচনে সোনামুখীর বিদায়ী বিধায়ক দীপালি সাহার বুথে ঢুকে মারধর ও ছাপ্পা ভোট দেওয়া এবং চলতি জানুয়ারিতে সোনামুখী শহর মহিলা তৃণমূলের সভাপতি পুতুল গরাইয়ের অন্তঃসত্ত্বা বধূর পেটে লাথি মারার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। দু’টি ঘটনাতেই দুই মূল অভিযুক্ত দীপালিদেবী ও পুতুলকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। বদলে নিচুতলার কিছু তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেই নিজের দায় সেরেছিল।

মালিয়াড়া-কাণ্ডেও বুধবার রাত থেকে এখনও অবধি চার জনকে ধরেছে পুলিশ। ধৃতেরা সকলেই মালিয়াড়াই বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে মনিকাঞ্চন ফৌজদার ও বাবলু বাউরি ওরফে হোদলকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। রামদাস বাউরি ও সজল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় বাঁকুড়া আদালত।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সিপিএম নেতা সুজয় চৌধুরী বলছেন, “পুলিশ আগে মূল পান্ডাকে ধরুক। তবেই বুঝব কাজের কাজ হচ্ছে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, “বাপ্পা এলাকায় নেই। তাঁর খোঁজ আমরা চালাচ্ছি। কাউকেই রেয়াত করা হবে না।’’ জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর অবশ্য আশ্বাস, “আমি নিজে তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখছি।’’

শুধু জেলা প্রশাসনই নয়, বিষয়টির উপরে নজর রাখছে নির্বাচন কমিশনও। বৃহস্পতিবারই রাজ্য নির্বাচন আধিকারিকের অফিস থেকে জেলাশাসকের কাছে ফোন করে ঘটনাটি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। এর পর থেকেই জেলা প্রশাসনের অন্দরে আরও তৎপরতা শুরু হয়ে যায় বলে সূত্রের খবর। ঘটনা হল, ওই প্রিসাইডিং অফিসার ও ভোট কর্মীরা মার খাওয়ার পর প্রশাসনের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মার খেয়ে জখম প্রিসাইডিং অফিসার জয়ন্তকুমার নন্দীর অভিযোগ ছিল, থানায় অভিযোগ করানোর বা তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করানোর বদলে ‘শারীরিক অসুস্থতার জন্য ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চাই’—এই মর্মে মুচলেকা লেখান বড়জোড়ার বিডিও পঙ্কজ আচার্য।

জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তাও মানছেন, “প্রথম থেকেই যদি ওই মারধরের ঘটনাটিকে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ করা হত, তা হলে জল এত দূর গড়াতো না।’’ এখনই অবশ্য প্রশাসনিক গাফিলতির বিভাগীয় তদন্তের পথে নামতে রাজি নন জেলাশাসক। তিনি বলেন, “আগে এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের ধরা হোক। তদন্ত শুরু হোক। বিভাগীয় তদন্ত নিয়ে এখন ভাবছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy