রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও বেচারাম মান্না।
সিঙ্গুরের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সোমবার বিজেপি-তে যোগ দিতেই বেচারাম মান্নার অনুগামীদের মধ্যে দেখা গেল কড়া প্রতিক্রিয়া। এলাকার ‘মাস্টারমশাই’কে কেউ বলছেন ‘গদ্দার’। কারও কথায় ‘মীরজাফর দলে থেকে বেইমানি করছিলেন’। বেচারাম অবশ্য সরাসরি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
‘বুড়ো বয়সে ভীমরতি’র তত্ত্বের পাশাপাশি, ‘অশীতিপর মাস্টারমশাই দল বদলে এলাকাবাসীর সম্মান হারালেন’ বলেও আলোচনা চলছে একদা জমি রক্ষা আন্দোলনের প্রতীক সিঙ্গুরে। সোমবার দুপুরে রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর ছেলে তুষার যখন রাজ্য বিজেপি-র নির্বাচনী দফতরে গিয়ে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নিলেন সেসময় সিঙ্গুরে বড়ায় তৃণমূলের কর্মিসভায় চলছিল তাঁর সমালোচনা। হরিপালের বিদায়ী বিধায়ক তথা সিঙ্গুরের তৃণমূল প্রার্থী বেচারামও হাজির ছিলেন সেখানে।
এক সময়ের জমি রক্ষা আন্দেলনের সঙ্গী রবীন্দ্রনাথের বিজেপি-তে যাওয়া নিয়ে অবশ্য বেচারাম মুখ খুলতে চাননি। শুধু বলেন, ‘‘নেত্রীর নির্দেশ ছাড়া রবীন্দ্রনাথবাবুকে নিয়ে কোনও কথা বলব না।’’ বেচারাম কিছু না বললেও তাঁর অনুগামীরা মাস্টারমশাইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, সিঙ্গুর আন্দোলনের অন্যতম মুখ দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘চার বারের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু। বয়স ৮৭। কিন্তু এখনও ওনার চাই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষক হিসেবে ওঁকে সম্মান করাতাম। কিন্তু নিজের এবং ছেলের স্বার্থে নীতি, আদর্শ বিসর্জন দিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিলেন।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, সিঙ্গুরে কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ঠিকই, তবে টাটাকে আন্দোলনকারীরা তাড়াননি। নিজেরাই চলে গিয়েছে। দুধকুমার বলেন, ‘‘মুকুল রায় কিছুদিন আগে সিঙ্গুরে এসে বলেছিলেন, তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল টাটাকে তাড়ানোর আন্দোলনে সামিল হওয়া। সেই ভুলের জন্য ক্ষমাও চান তিনি। বলা হয়, টাটা সিঙ্গুর ছাড়ার পর রাজ্যে আর বড় কোনও শিল্প আসেনি। এ বার পদ্ম শিবিরে যাওয়ার পর রবীন্দ্রনাথবাবুও কি ক্ষমা চাইবেন টাটা সিঙ্গুর ছাড়া করার জন্য?’’
অন্যদিকে, রবীন্দ্রনাথ বা তাঁর ছেলেকে সিঙ্গুর বিধানসভায় বিজেপি-র প্রার্থী করা হতে পারে বলে সোমবার জল্পনা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হুগলি জেলা বিজেপি-র নেতা সৌরেন পাত্র বলেন, ‘‘আমরা দলের অনুগত সৈনিক। দল যাঁকে প্রার্থী করুক না কেন আমরা তৈরি আছি। সিঙ্গুরে তৃণমূল যাকে প্রার্থী করেছে, তাঁর বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ ভোট দেবেন। লোকসভার চেয়েও বেশি ব্যবধানে বিজেপি জিতবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের হিসেবে সিঙ্গুরে তৃণমূলের চেয়ে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ভোটে এগিয়ে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy