গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় চমক যে থাকবে, সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। তেমনই প্রত্যাশিত ছিল তরুণ এবং নতুন মুখের প্রার্থিতালিকায় স্থান পাওয়া। হলও তাই। পাশাপাশি, বেশ কিছু কেন্দ্রে প্রার্থী রদবদলও করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ভবানীপুর। বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গড়’ বা ‘ঘরের মাঠ’ হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এ বার মমতা পূর্বঘোষণা মতো গেলেন নন্দীগ্রামে। ভবানীপুরে দিয়ে গেলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা প্রবীণ রাজনীতিক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। গত বিধানসভা ভোটে রাসবিহারী থেকে লড়ে জিতেছিলেন তিনি। এবার রাসবিহারীতে প্রার্থী করা হয়েছে মূলত পুর-রাজনীতিতে প্রবীণ মুখ দেবাশিস কুমারকে।
নন্দীগ্রাম থেকে যে তিনি লড়বেন, তা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মমতা। নন্দীগ্রামের পাশাপাশি তাঁর নিজের কেন্দ্র ভবানীপুরেও মমতা প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে একটা জল্পনা ছিল। কারণ, ২০১১ এবং ২০১৬ সালে তিনি ভবানীপুর থেকেই জিতেছেন। ফলে ভবানীপুরের প্রার্থী নিয়েও রাজনৈতিক মহলে কৌতুহল ছিল চরমে। দেখা গেল, মমতা ভবানীপুরের জন্য বেছে নিলেন তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক শোভনদেবকে। একদা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন শোভনদেব। তৃণমূল গঠনের পর ১৯৯৮ সালে বারুইপুরের বিধায়ক পদ ছেড়ে রাসবিহারী উপ নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হন। কংগ্রেস বিধায়ক হৈমী বসুর মৃত্যুতে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছিল। শোভনদেবের সেই উপ নির্বাচনে জয়েই প্রথম বিধানসভায় প্রবেশ তৃণমূলের। এ বার সেই শোভনদেবকেই নিজের কেন্দ্র ছেড়ে দিলেন মমতা।
বিরোধী বিজেপি এই সিদ্ধান্তের মধ্যে অবশ্য ‘রাজনীতি’ দেখছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ টুইট করেছেন, ‘নিশ্চিত পরাজয়ের ভয়ে মমতা ভবানীপুর থেকে নন্দীগ্রামে একটি ঐতিহাসিক লং-জাম্প দিয়েছেন। কিন্তু আপনি দৌড়লেও লুকোতে পারবেন না। নন্দীগ্রাম ভুলে যান। বাংলার কোনও আসনই মমতার জন্য নিরাপদ নয়’। বিজেপি-র প্রথমসারির নেতা শিশির বাজোরিয়ার কথায়, ‘‘বুঝতে হবে যে, মুখ্যমন্ত্রী একজন অভিজ্ঞ এবং পোড়খাওয়ার রাজনীতিকের হাতে ভবানীপুর লড়তে দিয়ে গিয়েছেন। উনি যদি অত নিশ্চিন্তই হতেন, তা হলে তো কোনও তারকা প্রার্থীকে ভবানীপুরে দাঁড় করিয়ে হাসতে হাসতে জিতিয়ে আনতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী ভবানীপুর নিয়ে নিশ্চিত নন।’’ শিশিরের আরও দাবি, ‘‘অবাঙালি-অধ্যুষিত ভবানীপুর কেন্দ্র আর তৃণমূলের জন্য নিরাপদ নয়। সেটা বুঝেই মমতা নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন।’’ নন্দীগ্রাম যেমন এ বারের নির্বাচনের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু, তেমনই ভবানীপুর নির্বাচনী আকর্ষণের দ্বিতীয় কেন্দ্রবিন্দু। কারণ নন্দীগ্রামে মমতা যেমন নিজে প্রার্থী হয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, একই সঙ্গে শোভনদেবকে ভবানীপুরে প্রার্থী করে আরও বড় একটা চ্যালেঞ্জ নিলেন মমতা। কারণ, নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন ভবানীপুর তাঁর ‘বড়বোন’। এ বার সেই ‘বড়বোন’-কে রক্ষার দায়িত্ব একদা বক্সিং রিংয়ে অনায়াস শোভনদেবের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy