বেহালা পূর্বে রত্নাকে তৃণমূল প্রার্থী করার পরই নতুন করে তরজা।
চার দেওয়ালের ভিতরকার কেচ্ছা প্রকাশ্যে এসে পড়েছে আগেই। ভোটের আবহে সেই কাদা ছোড়াছুড়ি অন্য মাত্রা পেল। রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে কটাক্ষ করলেন অধুনা বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। পাল্টা অবজ্ঞাপূর্ণ শ্লেষ ছুড়ে দিলেন রত্নাও। জানিয়ে দিলেন, শোভন এখন আর তাঁর কেউ নন। বিধানসভা নির্বাচনের সপ্তাহ তিনেক বাকি থাকতে শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জোড়াফুলে থাকাকালীন যে বেহালা পূর্বে শোভনের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল, সেখানে রত্নাকে প্রার্থী ঘোষণা করেন তিনি। তার পরেই নতুন করে কাজিয়া বেধেছে শোভন-রত্নার। শোভনের প্রশ্ন— ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ রত্না আদৌ প্রার্থী হওয়ার যোগ্য কি?
বেহালা পূর্বে তৃণমূল রত্নাকে প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই রত্নার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণে শান দেন শোভন। তিনি বলেন, ‘‘রত্নাদেবী কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন কি না, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। নিউ কাসলের মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে তাঁর মস্তিষ্কের সমস্যা প্রমাণিত। শংসাপত্রও রয়েছে। উনি মানসিক ভারসাম্যহীন। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী এমন কেউ প্রার্থী হতে পারেন কি না, সেটাই প্রশ্নচিহ্নের উপর দাঁড়িয়ে। এটা তৃণমূলের ব্যাপার। তবে উপযুক্ত জায়গায় বিষয়টি জানাব আমরা।’’ ঢের আগেই সম্পর্কের সুতো আলগা হয়ে গিয়েছে শোভন-রত্নার। বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এখন আলাদা থাকেন শোভন। দুই সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন রত্না। তবে বিবাহবিচ্ছেদে এখনও আদালতের সিলমোহর পড়েনি। কিন্তু তাঁর পদবি বাদ দিয়েই রত্নাকে ভোটে লড়তে হবে বলে দাবি তুলেছেন শোভন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘চট্টোপাধ্যায় পরিচয় না ব্যবহার করাই উচিত ওঁর। বরং বিয়ের আগের দাস পদবিই ব্যবহার করুন। ভোটের ময়দানে আমার পরিচয়ে যেন লড়তে না হয়।’’
শোভনের কথা কানে তুলতে নারাজ রত্না। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘‘যে নিজে পাগল, সে-ই অন্যকে পাগল বলে। ওঁর কোনও কথার উত্তর দেব না আমি। দিলেই পাগল প্রতিপন্ন হব। ওঁকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে হবে। এই লড়াইয়ে শোভন আমার কেউ নন। তাই উনি কী বলছেন, কী ভাবছেন, সে ব্যাপারে কোনও আগ্রহ নেই আমার।’’ বেহালা পূর্বে একাহাতে শূন্য থেকে তৃণমূলের জমি শক্ত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন শোভন। তাঁর দাবি, যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এখন বেহালা পশ্চিমের প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল, হাতে ধরে সেখানে তাঁকে জিতিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ বারের ভোটে বেহালার আশপাশ থেকেও কেউ বিধানসভায় যেতে পারবেন না। নিজে হাতে যে জমি তৈরি করেছিলেন, বিজেপি চাইলে সেখান থেকে তিনি লড়তে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন শোভন। তাঁর কথায়, ‘‘ বেহালা পূর্বে লড়তে চাই আমি। বিজেপি রাজি হলেই হল।’’ তাহলে কি এ বার ‘স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যাবে সেখানে? কিন্তু রত্নাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনতে চান না শোভন। তিনি বলেন, ‘‘কীসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই? উনি মানসিক ভারসাম্যহীন। আদৌ লড়তে পারবেন কি না জানি না।’’
রত্নাও সাফ জানিয়েছেন, তাঁর লড়াই শোভনের বিরুদ্ধে নয়, বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কিছু দেখানোর নেই আমার। আর কিছু দেখাতেও চাই না। উনি এখন আর কেউ নন আমার। নেত্রী আমাকে প্রার্থী করেছেন। তাঁর আদর্শ নিয়ে লড়ব। জানি, ব্যক্তিগত আক্রমণ করে আমাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু ও সবে কান দেওয়ার সময় নেই। লড়াই করে জিততে হবে। মর্যাদা রাখতে হবে দিদির আস্থার।’’ কটাক্ষের সুরে রত্নার মন্তব্য, ‘‘আর আমি তো সত্যিই পাগল। উনি নিজেও পাগল। তাই এসব বলে বেড়াচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy