তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা মমতার।
এক দশক পরে ফের পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ গড়ার প্রতিশ্রুতি শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার সময় তিনি জানিয়েছেন, বিধানসভা ভোটে যাঁরা লড়বার সুযোগ পেলেন না, আগামিদিনে রাজ্যে বিধান পরিষদ পড়ে তাঁদের ‘পুনর্বাসন’ দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, রাজ্যে বিধান পরিষদ করতে গেলে সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করাতে হবে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার পাশাপাশি সংসদের দুই কক্ষেও দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিল পাশ করানো প্রয়োজন।
সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ধাঁচে তৈরি বিধান পরিষদেও বিধানসভার মতোই ‘নির্বাচিত’ হতে হয়। কিন্তু সেখানে সাধারণ নাগরিকরা ভোট দেন না। সেখানে ভোট দেন বিভিন্ন ক্ষেত্রভুক্ত পেশার মানুষ, নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি এবং পঞ্চায়েত-পুরসভার মতো স্থানীয় প্রশাসনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কেরা। সারা ভারতে এখনও ছ’টি রাজ্যে বিধান পরিষদ আছে। সেগুলি হল বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং কর্ণাটক। অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় গত বছর বিধান পরিষদ অবলুপ্তির প্রস্তাব পাশ হলেও তা এখনও সংসদের ছাড়পত্র পায়নি।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গেও একটা সময় বিধান পরিষদ ছিল। যুক্তফ্রণ্টের সরকার ক্ষমতায় এসে প্রায় ছয় দশক আগে তার অবলুপ্তি ঘটায়। বাংলা কংগ্রেস এবং বামেদের নিয়ে গড়া যুক্তফ্রন্ট সরকারের পাঠানো বিধানপরিষদ অবলুপ্তির প্রস্তাবে ষাটের দশকের শেষ পর্বে সিলমোহর দিয়েছিল সংসদ। ঘটনাচক্রে, রাজ্যসভায় সেই প্রস্তাবের পক্ষে বক্তৃতা করেছিলেন বাংলা কংগ্রেসের সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেটিই ছিল সংসদে তাঁর প্রথম বক্তৃতা।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী ইস্তাহারে বিধান পরিষদ পুনরুজ্জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বিধান পরিষদের পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগী হয়েছিলেন মমতা। কিন্তু তা করতে গেলে রাজ্য বিধানসভার পাশাপাশি সংসদের দুই কক্ষেও দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সে সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধন বিলটি পাশ করা প্রয়োজনীয় ছিল। তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি তার সহায়ক ছিল না। ফলে ২০১১-র অগস্ট মাসেই রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্যে বিধান পরিষদ পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা নেই। তবে বিধান পরিষদের কথা যে তিনি ভোলেননি, তা শুক্রবার আবার জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। এখন দেখার, রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে পারলে তিনি বিধান পরিষদ নিয়ে কতটা উদ্যোগী হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy