এই সেই নির্বাচনী কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র।
খাতায়-কলমে তিনি বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট। অথচ তাঁরই বাড়িতে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়। অন্য কোথাও নয়, এমন ছবি রাজ্যের হেভিওয়েট বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের। যেখানে তৃণমূলের প্রার্থী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার ভোট যত ঘনিয়েছে ততই রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপির সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা সামনে আসায় শোরগোল পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মহম্মদপুরে এবং নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের রেয়াপাড়ায় দুটি পৃথক কার্যালয় রয়েছে মমতার। এ ছাড়াও, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক প্রশাসনিক অফিসের উল্টোদিকে একটি তিনতলা বাড়িতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার পর ওই কার্যালয় থেকেও নির্বাচনী কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। যদিও ওই কার্যালয়টি মেঘনাদ পালের নামে রয়েছে। স্থানীয় ব্লক তৃণমূলের দীর্ঘদিনের সভাপতি মেঘনাদ অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ইতিমধ্যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দুর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্টও তিনি। এই অবস্থায় কী ভাবে তাঁরই বাড়িতে শাসকদলের নির্বাচনী কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে, তা নিয়ে হইচই পড়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক সভাপতি থাকার সুবাদে মেঘনাদের নামে কয়েক বছর আগে নন্দীগ্রাম বাজার পার্শ্ববর্তী স্থানীয় প্রশাসনিক অফিসের পাশে তিন ডেসিমাল জমি কেনা হয়েছিল। পরে সেখানে তিনতলা দলীয় কার্যালয় তৈরি হয়। গত জানুয়ারি মাসে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মেঘনাদ। তারপর আর ওই জমি-বাড়ি মেঘনাদের কাছ থেকে হস্তান্তর করিয়ে নেওয়া হয়নি। সমস্যা মেনে নিয়ে নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ স্বদেশ দাস অধিকারী তিনি বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি যিনি থাকবেন তাঁর নামে ওই কার্যালয় চলবে বলেই চুক্তি হয়েছিল প্রথমে মেঘনাদের সঙ্গে। কিন্তু তিনি তৃণমূল ছাড়ার পরেও ওই বাড়িটি এখনও তাঁর নামেই রয়ে গিয়েছে। ফলে উনি যদি ওই বাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপত্তি জানান সে ক্ষেত্রে আমাদের অসুবিধা হতে পারে।’’
কী বলছেন মেঘনাদ স্বয়ং? শুভেন্দু অধিকারীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট বলেন, ‘‘আমি দল ছাড়ার পরেও তৃণমূল এটা নিয়ে কিছুই করেনি। আমি কিছু বলব না।’’ এ ব্যাপারে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘উনি তৃণমূল ছাড়ার পরেও দলের কার্যালয় ফেরত দেননি।’’ ঘটনাকে কটাক্ষ করে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছি এখনও বলছি, তৃণমূল এবং বিজেপির গোপন বোঝাপড়া রয়েছে। নন্দীগ্রামের এই ঘটনায় সেটাই প্রমাণিত।’’
আগামী ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ভোট নন্দীগ্রামে। ২৯ মার্চ নন্দীগ্রামে প্রচারে যেতে পারেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে এমন ঘটনা সামনে চলে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy