সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া। আমার শহর কলকাতা থেকে এই জায়গা বেশ কিছুটা দূরে। ইচ্ছা হলেই সেখানে এক ছুটে চলে যাওয়া যায় না। রাজনীতিতে আসার আগে সেখানে গিয়েছি বেশ কয়েক বার। তবে কারণটা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। তখন শুধুমাত্র ‘নায়িকা’ সায়ন্তিকা হয়ে পা রেখেছি ওই জেলায়। মাচা করেছি। মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে হাত নেড়েছি। নাচে-গানে মাতিয়ে রেখেছি দর্শকদের। তখন ভাবতেও পারিনি, কয়েক বছর পর আবারও ফিরে যাব তাঁদের কাছে। তবে অন্য ভূমিকায়। অন্য রূপে।
রাজনীতিতে এসেছিলাম কাজ করার আশায়। অনেকেই যদিও ভেবেছিলেন, কাজ না পেয়ে উপার্জনের আশায় দলীয় পতাকা হাতে তুলেছি। কিন্তু অভিনয় করে যা রোজগার করি বা করেছি, তা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। টাকা আর ক্ষমতার আশায় রাজনৈতিক ময়দানের প্রয়োজন অনুভব করিনি কখনও। আমাকে প্রার্থী করা হবে কিনা, সেটা নিয়েও আলাদা করে কোনও চিন্তা ভাবনা ছিল না। এমনকি বাঁকুড়ার প্রার্থী হিসেবে যখন দিদি আমার নাম ঘোষণা করেছিলেন, তখন আনন্দ করার সময়টুকুও পাইনি। মনে হয়েছিল, এই সময়টা তো আনন্দ করার নয়! এতগুলো মানুষের ভাল-মন্দের দায়িত্ব আমার উপর। এ বার তা পালন করার সময়।
দায়িত্ব পালন করতে গেলে, যাঁদের দায়িত্ব নিচ্ছি, তাঁদেরকে জানতে হত। বাঁকুড়াকে চিনতে হত। এই চেনা-জানার প্রক্রিয়ায় অভিনেত্রী থেকে যে কখন ছাত্রী হয়ে উঠেছিলাম, বুঝতেও পারিনি। হাতের তালুর মতো করে চিনে নিয়েছিলাম জায়গাটাকে। সেখানকার প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা মানুষজনের সঙ্গেও আলাপ করে ফেলেছিলাম। নির্বাচনের শুরুর দিকে অনেক প্রার্থীই বলেছিলেন, তাঁরা মানুষের পাশে থাকতে রাজনীতিতে যোগদান করেছেন। আমি কিন্তু একেবারেই সেই মতে বিশ্বাসী নই। আমি মানুষের পাশে থাকতে নয়, তাঁদের মধ্যে মিশে যেতে এসেছি। মনে হয় কিছুটা সফলও হয়েছি। তাই পথেঘাটে রাজনৈতিক প্রচারে নেমে অনায়াসেই ‘মার গুড় দিয়ে রুটি…’-র মতো সংলাপ বলে তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। নিজের মানুষ ছাড়া কি এমন কাজ করা যায়!
মাত্র কয়েক দিনেই ওই মানুষগুলোর সঙ্গে কেমন একটা আত্মীয়তা গড়ে উঠল। আমার উপর ভরসা রেখে ওঁরা ওঁদের নানা সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সেগুলিকে আর শুধুই নিজের কেন্দ্রের সমস্যা হিসেবে দেখতে পারছি না। নিজের পরিবারের সমস্যা বলেই মনে করছি। কারণ হার-জিতের ঊর্ধ্বে গিয়েও কিছু সম্পর্ক তৈরি হয়। বাঁকুড়ার সঙ্গে এখন আমার প্রাণের সম্পর্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy