সায়নী ঘোষ
ছুটেছি। উন্নয়নের জন্য। মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য। নিজে হেরে গেলেও সে দৌড় থামবে না। কারণ ভোটে হার-জিত মাথায় না রেখেই দৌড়েছি। বিক্ষুব্ধ জনতার মুখোমুখি হয়েছি। তাঁদের অভিযোগ শুনেছি। অনুভব করেছি তাঁদের। এই নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে একাত্ম হয়েছি আমি। হ্যাঁ, ‘বহিরাগত’ তকমা পেয়েছি। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অনেকেই ‘বহিরাগত’ বলছেন। কিন্তু তিনি এই বাংলার নিজের মেয়ে। সে কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। বিরোধী দলের থেকে কম কথা শুনতে হয়নি আমাকে। কেবল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে নয়, তার আগেও শুনতে হয়েছে অনেক কিছু।
‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনিকে রণহুঙ্কারের সঙ্গে তুলনা করায় কুমন্তব্য করেছিল বিজেপি। কারণ আমি মনে করি, এটি বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যেও পড়ে না। ঈশ্বরের নাম ভালবেসে বলা উচিত। কিন্তু তার জন্য বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায় হঠাৎ নেটমাধ্যমে আমার ‘টাইপ’ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। এর উত্তর দেওয়াটা জরুরি ছিল। কোন স্তরে নামতে চাইছেন তাঁরা, এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সে দিন আমার কাছে। শুধু তাই নয় আমার টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি টুইট তুলে আনা হয়েছিল, যা আদৌ আমার নয়। সে কথা আমি বার বার বলেছিলাম। আমার নামে আইনি পদক্ষেপ করেছিলেন তথাগত রায়। সৌমিত্র খাঁ আমাকে ‘যৌনকর্মী’ বলে অপমান করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ভুলে যাচ্ছিলেন, মানুষের বৃত্তিকে গালাগালের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের ছোট করেছেন।
তার পরে আমার তৃণমূলে যোগদান। অনেকে আমার উপর অভিমান করেছিলেন। অনীকদার (পরিচালক অনীক দত্ত) ছবির জন্য রাস্তায় নেমেছিলাম। তার পরেও তৃণমূ্লে কেন? কিন্তু ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর ঘটনাটা সম্পূর্ণ আলাদা! মাথায় রাখতে হবে, আমি কোনও দিন সিপিএমেও যোগ দিইনি। আর সে দিন আমি এক জন শিল্পী হিসেবে প্রতিবাদ করেছিলাম। তা ছাড়া বলা হয়েছিল, আমি তৃণমূলের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছি। আগেও বলেছি, আমার দলের (তৃণমূল) এত টাকা নেই, যে এখন মানুষ কেনাবেচা করবে। যে বা যারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, বৃহত্তর উদ্দেশ্যেই তাদের এই সিদ্ধান্ত।
মদনদা (মদন মিত্র)-কে ‘বাংলার ক্রাশ’ বলেছিলাম বলে কটাক্ষের শিকার হয়েছি। সেখানেও একটি ভুল বোঝাবুঝি। কথাটা আমি বলিনি। অর্জুন সিংহের সঙ্গে মদনদার কথোপকথনের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। সেখানেই বিতর্কের মধ্যে তিনি নিজেই বলেছিলেন, তিনি ‘বাংলার ক্রাশ’। আমি সেই কথাটাই মজার ছলে বলেছিলাম।
দলীয় রাজনীতিতে যোগদান করা নিয়ে অনেকেই মুখ বেঁকিয়েছিলেন। কিন্তু তার কারণ আমি খুব স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম। আজও সেই একই উদ্দেশ্য আমার। আমার কাছে রাজনীতিটা বিষয়গত। উদ্দেশ্যগত নয়। যদি একজন মহিলা আমার কাছে নিরাপত্তা চান, আমি তাঁকে কী ভাবে আশ্বস্ত করব? এত ভয়ানক একটা পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে আমরা! একটি দলের সঙ্গে কাজ করতে পারলে আমি আরও পাঁচটা মানুষকে সঙ্গে পাব। যাঁরা আমায় সেই মহিলাকে নিরাপত্তা দিতে সাহায্য করতে পারবেন। বলা ভাল, সব কিছু সাংগঠনিক ভাবে করতে পারব। আর তার জন্য আমি প্রাণ দিয়ে লড়াই চালাব। জাহির করতে চাই না বাকিদের মতো। কিন্তু পাশে আছি। এটুকুই বলব। তার জন্য নির্বাচনে জেতা বা হারার সম্পর্ক নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার বিশ্বাস ছিল, রয়েছে, থাকবে। তিনি নিজের জায়গা থেকে সরে যাবেন না কোনও দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy