কাঞ্চন মল্লিক
একটা বিধানসভা ভোট আমায় চোখে আঙুল দিয়ে শিখিয়ে দিল, মানুষের কথাই শেষ কথা। জেতার পরও এটাই মনে হচ্ছে। যত দিন করোনার প্রভাব কম ছিল, পায়ে হেঁটে মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরেছিলাম। সকলের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ ফিরে আসতে পায়ে হাঁটা বন্ধ। কিন্তু মানুষের কাছে যাওয়া বন্ধ করিনি। ছাউনি-খোলা টোটোয় চড়ে গিয়েছি সকলের কাছে। মানুষের ঢল ছিল আমায় ঘিরে। মনে হয়েছিল, সকলের অভিব্যক্তিই ভীষণ স্বতঃস্ফূর্ত।
সকলে আবেগে ভেসে গিয়েছিলেন। আমি অভিনেতা, সঞ্চালকও। তাই সাধারণের মুখ দেখলেই বুঝতে পারি, কে মন থেকে আমায় গ্রহণ করেছেন। কে কৃত্রিম। তবে যেহেতু আমি আগে অভিনেতা, তা-ই সেই পরিচয়েই পরিচিত হয়েছিলেনন প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক। আবার এটাও ঠিক, অভিনেতা প্রার্থীকে আলাদা করেননি। আমিও দূরত্ব মেনে থাকিনি। অভিনেতা বলে জিপে ঘুরব, চপারে নামব— এসব একেবারেই ভাবনায় ছিল না। তাই যখনই উত্তরপাড়ার মানুষদের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, তাঁরা ভালবেসেছেন আমায়। কোনও দিন ফিরিয়ে দেননি। এটাই মস্ত পাওনা।
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে যা বুঝেছি, তাতে মনে হয়েছে, সবচেয়ে আগে রাস্তা সারাই করতে হবে। বেশ কয়েকটা রাস্তা সত্যিই বেহাল। মানুষ ভাল ভাবে পথ হাঁটবেন, সেটা সকলের আগে কাম্য। দেখেছি পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে। ইতিমধ্যেই জলের নতুন পাইপ বসেছে। মে মাসের মধ্যে আশা করছি কাজ শেষ হয়ে যাবে। তা হলেই আর পানীয় জলের সমস্যা থাকবে না। তবে আমার পাখির চোখ হল উত্তরপাড়া জেনারেল হাসপাতাল। টাউন হলের মতো বিরাট পরিসর। কিন্তু একটাও আইসিইউ, আইটিইউ নেই। আমি দায়িত্ব পেলে কাজ হবে ওই বিশাল জায়গাটা কাজে লাগিয়ে মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল বানানো। যাতে শুধু উত্তরপাড়া নয়, আশপাশের সমস্ত মানুষ এই এক জায়গা থেকেই সমস্ত চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন। আপাতত স্বাস্থ্য, পানীয় জল, সড়ক— এই তিনটে বিষয়ে উন্নতি চাই। পরে শিক্ষাব্যবস্থার ওপরেও কাজ করতে হবে।
উত্তরপাড়ায় ১৭টি নাট্যদল-সহ বহু মার্গসঙ্গীতের সংগঠন রয়েছে। বহু ফিল্ম ক্লাবও রয়েছে। সেগুলো নিয়েও কিছু করার ইচ্ছে ছিল। এলাকায় একটা বিধায়কের অফিসও করা দরকার। গত ১০ বছরে মানুষ এক জন বিধায়কেরও দেখা পাননি। অনুপ ঘোষলা এবং প্রবীর ঘোষাল কখনও তাঁদের মুখোমুখি হননি। আমার অফিসে বসে যাতে সবার কথা শুনতে পারি, সেটাও ভেবে রেখেছিলাম। কারণ, আমার কাছে উত্তরপাড়ার মানুষদের একটাই চাহিদা ছিল— আমি যেন ওঁদের পাশে থাকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy