Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Election Commission

পশ্চিমবঙ্গে ভোট হতে পারে ৭ থেকে ৯ দফায়, বক্তব্য কমিশন সূত্রের, ঘোষণা বিকেলেই

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে শুরু করেছে রাজ্যে। বিভিন্ন ‘স্পর্শকাতর’ এলাকায় তারা রুট মার্চও শুরু করে দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা।

নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:২৪
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে ৭ থেকে ৯ দফায় হতে পারে বিধানসভা ভোট। শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গ-সহ ৩ রাজ্য এবং ১ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে। তার আগে কমিশন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মোট ৭ থেকে ৯ দফায় ভোট ঘোষণা করা হতে পারে।

শুক্রবার সকালে কমিশন সূত্রে জানানো হয়, বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে পাঁচ রাজ্যে ভোটের দিন ঘোষণা করবে কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভোট হচ্ছে তামিলনাডু, পুদুচেরি, অসম এবং কেরলে। তার জন্যই ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে কমিশন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার খবরের সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা।

এ বছর বাংলায় ২৯৪, অসমে ১২৬, কেরলে ১৪০, তামিলনাড়ুতে ২৩৪ এবং কেরলে ৩০টি আসনে ভোট হবে। শুরুতে জল্পনা ছিল, ভোট ঘোষণা হবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে। তা আরও জোর পেয়েছিল সপ্তাহের প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অসমে গিয়ে ৭ মার্চ ভোট হতে পারে বলে মন্তব্য করায়। কিন্তু সব মহলকে খানিকটা চমকে দিয়েই ফেব্রুয়ারির শেষেই ভোটের দিন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিল কমিশন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে শুরু করেছে রাজ্যে। বিভিন্ন ‘স্পর্শকাতর’ এলাকায় তারা রুট মার্চও শুরু করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারংবার বাংলায় সফরে এসে বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর শাসনে ভোট হবে। ফলে ভোটাররা যেন ভয় না পেয়ে নির্বিঘ্নে এবং নির্ভয়ে ভোট দেন।

কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূল। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার খবর প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসক শিবির তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, তাদের আশা, নির্বাচন কমিশন ‘নিরপেক্ষ’ ভাবে কাজ করবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ‘অবাধ এবং নিরপেক্ষ’ ভোট হবে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ‘‘মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেবেন। সেক্ষেত্রে তাঁরা যদি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পর্যবেক্ষণে গণতান্ত্রিক কাঠামো মেনে ভোট হলে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টি যদি নজরে পড়ে, তা হলে আমরা সেটি নিয়ে নিশ্চয়ই উপযুক্ত জায়গায় পদক্ষেপ করব। আমাদের আশা, কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন্দ্রের শাসকদলের হয়ে ভোট করাবে না।’’ পক্ষান্তরে, কংগ্রেসের নেতা তথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথায়, ‘‘কত দফায় ভোট হবে, সেটা কমিশন ঠিক করবে। আমরা চাই, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে এবং শান্তিতে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।’’ বিজেপি নেতা তথা রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘বাংলার মানুষ নির্ভয়ে, শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন এবং ভোটকেন্দ্রের ভিতরে এবং বাইরে যাতে শান্তি বজায় থাকে, সেটা নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করুক। কত দফায় ভোট হবে, তা কমিশন ঠিক করবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’

৭, ৮ বা ৯ দফায় রাজ্যে ভোট হলে তা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হওয়ার সম্ভাবনা। কারণ, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একটি এলাকা থেকে অন্য এলাকায় নিয়ে যেতে উপযুক্ত সময় পাওয়া যাবে। প্রসঙ্গত, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় ভোটাররা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি বলেই অভিযোগ। সেই কারণেই কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি-র নেতারা বারবার বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর শাসনে ভোট হওয়ার কথা বলে তাঁদের অভয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সেই কারণেই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই বাহিনীকে রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে পাঁচটি রাজ্যে ভোট ঘোষণা হবে, তার মধ্যে বাংলার বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। কারণ, বিজেপি নেতৃত্ব বাংলাকেই তাঁদের ‘পাখির চোখ’ করেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের তরজা এবং রাজনৈতিক লড়াই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোঠ ঘো,ণার আগেই চড়ছে ভোটের উত্তাপ। এই পরিস্থিতিতে ভোট ঘোষণার পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘দখলদারি এবং সংঘর্ষ’-এর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন এবং রাজনৈতিক মহল।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Election Commission West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE