Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Polls 2021

চিকিৎসকরা অনুমতি দিলে রবিবার ব্রিগেড সমাবেশে আসতে চান বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

মুজফ্ফর আহমেদ ভবনের ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’রা চান এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চিকিৎসকরা। তবে চিন্তা ব্রিগেডের ধুলো ভরা মাঠ।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৩৪
Share: Save:

অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ী হলেও দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত। তাই অশক্ত শরীরেও বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে চান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, দলের কাছে বিগ্রেড সমাবেশে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি। রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব চায়, কিছুক্ষণের জন্য হলেও সমাবেশে আসুন বুদ্ধদেব। কিন্তু, তাঁর শরীর-স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই এবার আর তাঁকে ব্রিগেড সমাবেশে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়নি। সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, ব্রিগেডে বুদ্ধদেবের ভার্চুয়াল উপস্থিতির বন্দোবস্ত করা হোক। জানা গিয়েছিল ব্রিগেডে লিখিত বার্তা পাঠাবেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার বুদ্ধদেব নিজেই সমাবেশে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করায় উজ্জীবিত বাম শিবির।


কিন্তু, মুজফ্ফর আহমেদ ভবনের ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’রা চান এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন বুদ্ধদেবের চিকিৎসকরা। কারণ, ধুলোয় অ্যালার্জি রয়েছে তাঁর। আর ব্রিগেড ময়দানে জনসমাবেশের কারণ ব্যাপক ধুলো ওড়ে। তাই চিকিৎসকরাই সিদ্ধান্ত নিন তাঁর সমাবেশে আসা উচিত না অনুচিত। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম শুক্রবার বলেন, "বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শুধু একটা নাম নন। তিনি বামফ্রন্ট কর্মী-সমর্থকদের কাছে একজন এমন নেতা যাঁর কথা শোনার জন্য তাঁরা অপেক্ষা করে থাকেন। তিনি ব্রিগেড সমাবেশে এলে আমাদের কাছে তা খুব খুশির খবর হবে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে চিকিৎসকদের পরামর্শের ওপর।" প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে প্রধান বক্তা হতেন বুদ্ধদেব। এমনকি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ২০১৫ সালে ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় সিপিএমের সাংগঠনিক প্লেনাম উপলক্ষে ব্রিগেড সমাবেশ করেছিল সিপিএম। সেই সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বুদ্ধদেবই। ছয়ের দশকে ছাত্র রাজনীতি থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও ব্রিগেড সমাবেশ হয়নি, যেখানে তাঁর উপস্থিতি ছিল না। ধরে নেওয়া হয়েছিল এবারের সমাবেশে যোগ দেবেন না তিনি। কিন্তু এদিন তিনি নিজেই সমাবেশে আসতে চাওয়ায় নতুন করে উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

তবে ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বামফ্রন্টের শেষ ব্রিগেড সমাবেশে অসুস্থ শরীর নিয়েই গিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই। কিন্তু মঞ্চে ওঠেননি, করেননি বক্তৃতা। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই, মঞ্চের পিছনে গাড়িতে বসে বক্তব্য শুনছিলেন তিনি। সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল অক্সিজেন সিলিন্ডার। নাকে অক্সিজেনের নল পরা সেই বুদ্ধদেবের ছবি দেখে খানিকটা আক্ষেপই করেছিল বামজনতা। অনেক সমর্থক বলতে চেয়েছিলেন, বক্তৃতা না করলেও বুদ্ধদেব অন্তত একবার যদি মঞ্চে উঠে হাত নাড়তেন! কারণ, বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের ‘তারকা’ বলতে এখনও তিনিই। কিন্তু চিকিৎসকের বারণ ছিল। ফলে কাচ-বদ্ধ গাড়িতে বসেই ব্রিগেডে সমাবেশে থাকতে হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। সেখান থেকেই তিনি ফিরে যান পাম অ্যাভিনিউয়ের ছোট্ট বাড়ির নিভৃতিতে। তার পর থেকে আর তাঁকে বিশেষ জনসমক্ষে দেখা যায়নি। এর পরেও সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অবশ্য দ্রুত বাড়িও ফিরে যান। তারপর থেকেই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে শুক্রবার বুদ্ধদেব সমাবেশে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করায় উজ্জীবিত সিপিএম।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE