পুড়েছে বাড়ির একাংশ। পালিতপুরে। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগে বর্ধমানের পালিতপুর গ্রাম থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় আহত দু’জন তৃণমূল কর্মী বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পালিতপুর গ্রামে পুলিশের ক্যাম্প করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পালিতপুরে দু’দফায় গোলমাল হয়। প্রথম ঘটনাটি ঘটে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ। বিজেপি সম্পর্কে কিছু ছবি-ভিডিয়ো ছড়াচ্ছেন, এই অভিযোগ তুলে পালিতপুর রেলগেটের কাছে এক তৃণমূল সমর্থকের হোটেলে হাজির হন বিজেপির কিছু কর্মী-সমর্থক। দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাধলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু এর আধ ঘন্টা পরেই ফের গোলমাল শুরু হয়। অভিযোগ, তাতে আক্রান্ত হয়েছেন পালিতপুরের শেখ ডালিম ও পাশের মামদিপাড়ার শেখ জাহাঙ্গির। রাতে তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁদের বর্ধমানের গাংপুরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, ডালিমের দাদা আলিম শেখের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। এর আগেও পালিতপুরে কয়েকবার তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ হয়েছে।
পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, গ্রামে কয়েকজন তৃণমূলের হয়ে প্রচার করছিলেন। তখনই বিজেপি নেতা শান্তনু তায়ের নেতৃত্বে প্রায় ৩৫ জন লাঠি, শাবল, রড, কাটারি নিয়ে গ্রামের অন্নপূর্ণা মন্দিরের কাছে তাঁদের উপরে আক্রমণ করে। ওই দু’জন গুরুতর জখম হন। আরও এক জন আহত হন। পুলিশ জানায়, দু’জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। অভিযোগ পাওয়ার পরে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
এ দিন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এলাকা সুনসান। গ্রাম একপ্রকার পুরুষশূন্য। পুলিশের আধিকারিক, কর্মীরা টহল দিচ্ছেন। গ্রামের বাসিন্দা পূজা খাঁয়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের হোটেলেই অশান্তির সূত্রপাত। আমরা তৃণমূল সমর্থক বলে বিজেপির লোকেরা হামলা চালায়, ভাঙচুর করে। গোয়ালঘরেও আগুন ধরিয়ে দেয়।’’ তাঁর দাবি, গবাদি পশু, মুরগি পুড়ে গিয়েছে। যদিও এ নিয়ে বর্ধমান থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশ ও দমকল সূত্রের দাবি, যে ভাবে আগুন লেগেছে, তাতে বাইরে থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে না।
তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লকের সভানেত্রী কাকলি তায়ের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি বাইরে থেকে লোক এনে গ্রাম জ্বালানোর পরিকল্পনা করছে। আমাদের দু’জন নিরীহ কর্মীকে একা পেয়ে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। সব অভিযুক্তকে ধরার দাবি জানাচ্ছি।’’ বিজেপির ২৮ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি প্রদীপ মণ্ডলের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বাসে করে লোক নিয়ে এসে তৃণমূল হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। গ্রামবাসী একজোট হয়ে প্রতিরোধ করেছেন। পুলিশ নিরাপরাধদের ধরে নিয়ে গিয়েছে।’’ বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হলে চার জনকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy